‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘ভাত দে’, কসাই, ‘নয়নমণি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’ ছবিগুলোর নাম নিলেই কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক আমজাদ হোসেনের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয়েও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের এই গুণী পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁর ছেলে সোহেল আরমান প্রথম আলোকে জানান, আজ রোববার সকালে বাসায় আমজাদ হোসেনের স্ট্রোক হয়। এরপর তাঁকে দ্রুত রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে আমজাদ হোসেন এখন চিকিৎসক শহীদুল্লাহ সবুজের তত্ত্বাবধানে আছেন। প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বের বর্তমান শারীরিক অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটাকে আমরা বলি ইশকেমিক স্ট্রোক। এ ধরনের রোগীর অবস্থা ৭২ বা ৯৬ ঘণ্টা না গেলে বোঝা যায় না। এই সময়টা পার হওয়ার পর তাঁর সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পাব। তখন তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে পারব। আমজাদ হোসেনকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। তিনি এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন।’
সোহেল আরমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাসায় আমি থাকি চারতলায়, বাবা দোতলায়। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে জানতে পারি আব্বু পড়ে গেছেন। দ্রুত নেমে আসি। এসেই দেখি আব্বু হাত নাড়াতে পারছেন। খুব কষ্ট হচ্ছে। এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’
চিকিৎসক শহীদুল্লাহ সবুজ বলেন, ‘এক ধরনের স্ট্রোকে রক্তনালি বন্ধ হয়, আরেকটিতে রক্তনালি ছিঁড়ে যায়। আমজাদ হোসেনর রক্তনালি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত আমরা যা বুঝেছি তাতে মনে হচ্ছে, তাঁর মস্তিষ্কের বড় রক্তনালি বন্ধ হওয়ার স্ট্রোক হয়েছে। অবস্থাটা একটু জটিল। তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না। কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস নিচ্ছেন।’
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন আমজাদ হোসেন। শৈশব থেকেই তাঁর সাহিত্যচর্চা শুরু করে। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন। প্রথমেই তিনি অভিনয়ে করেন মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ সিনেমায়। এরপর তিনি অভিনয় করেন মোস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ সিনেমায়। আমজাদ হোসেন একসময় চিত্র পরিচালক জহির রায়হানের সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি নিজেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।