রুবেলের মন ভালো নেই

রুবেল। ছবি: সংগৃহীত
রুবেল। ছবি: সংগৃহীত

নাচ, সংলাপ ও মারপিটে দুর্দান্ত সেই ঢালিউড হিরো রুবেল ভালো আছেন। ইস্কাটনের বাসায় শুয়ে-বসে কাটছে তাঁর করোনাকাল। কোরিয়ান সিনেমা দেখেন আর নিজেকে সময় দেন। এক দিন পরপর করেন শরীরচর্চা।


সবকিছু ঠিকঠাক চললেও মন ভালো নেই নায়ক রুবেলের। বাংলাদেশের মুমূর্ষু চলচ্চিত্র অঙ্গনের কথা মনে পড়লেই মুষড়ে পড়েন তিনি। তাঁদের সময়টা ছিল অন্য রকম। উজ্জ্বল এক সময় পাড়ি দিয়ে এখন অন্ধকারে ডুবে আছে সিনেমাশিল্প। কাজ, খেলা, হাসিঠাট্টার সেই দিনগুলোর স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে রুবেল বলেন, ‘আমরা কাজও করেছি, আনন্দও করেছি। আমাদের সময়ে ছবিতে বিনিয়োগ করা প্রযোজকেরা টাকা তুলে এসেছেন। একটা ছবির টাকা পেয়ে তিনটি ছবিতে বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা। এখনকার পরিস্থিতি একেবারে উল্টো।’

রুবেল। ছবি: সংগৃহীত

সোনালি সেসব দিনের সহশিল্পী, বিশেষ করে নায়িকাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়? এমন প্রশ্নে নিজেকে খুব করে দোষারোপ করলেন রুবেল। বললেন, ‘নানা কারণে আমিই কারও সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারিনি। এ জন্য আমি দায়ী।’ তবে ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় নানা মাধ্যমে। বিশেষ করে বিদেশে বেড়াতে গেলে বাঙালি ভক্তদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেড়ানো আমার শখ। বিদেশে যেখানেই বাঙালিরা থাকেন, সেসব জায়গায় গেলে তাঁরা আমাকে ভালোবাসা জানান, আপ্যায়ন করেন। আমার জীবনের সেরা কফিটা আমি খেয়েছিলাম ইতালিতে। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে এক ভক্ত একবার এসে জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, “আমার খুব ইচ্ছা ছিল, মৃত্যুর আগে আপনাকে একবার বুকে জড়িয়ে ধরব। আমার সেই আশা আজ পূরণ হলো।” তিনি আমাকে টেনে নিয়ে গিয়ে কফি খাইয়েছিলেন। সেটাই ছিল আমার জীবনে পান করা সেরা কফি।’


নায়ক রুবেলের ছেলে নিলয় পারভেজ পড়েছেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটিতে। যুক্তরাজ্যের একটি ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি। গৃহিণী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন রুবেল। টেলিভিশন দেখেন, পত্রিকা পড়েন আর এক দিন পরপর শরীরচর্চা করেন। করোনার কারণে বন্ধ তাঁর মার্শাল আর্টের স্কুল। সবকিছু স্বাভাবিক হলে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ফিরবেন রুবেলের স্কুলে।
মৃতপ্রায় চলচ্চিত্রশিল্প নিয়ে রুবেল বললেন, ‘যে গাছ ফল দেয়, সেই গাছের পরিচর্যা করতে হয়। আলো, হাওয়া, জল দিতে হয়, আগাছা পরিষ্কার করতে হয়, সর্বোপরি সেটাকে ভালোবাসতে হয়, নয়তো গাছটা মরে যায়। ঢালিউড সেই অবহেলিত গাছ, যাকে কেউ পরিচর্যা করেনি, ফল খেয়েছে, ছাল খেয়েছে, এখন শিকড় উপড়ে খেয়ে ফেলার পাঁয়তারা করছে।’ তিনি মনে করেন, সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে ‘কোমায়’ চলে যাওয়া চলচ্চিত্রশিল্প আবারও উঠে দাঁড়াবে।