‘ভিনদেশি গানবাজনা শুনে কী হয়! ’ তাচ্ছিল্য করে অনেক সময়ই অনেকে এমনটা বলে থাকে। কিন্তু আদতে এই গানবাজনা শুনে অনেক তরুণ বুঝতে পারেন ঐক্যের শক্তি। এক হয়ে অসহায় ও দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাহস পান। যেমন বিটিএসের ভক্তরা। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনে সহায়তা দেওয়ার জন্য কোরীয় গানের দল বিটিএস ১০ লাখ ডলার অনুদান দেয়।
এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিটিএস আর্মিরা (বিটিএসের ভক্তদের এই নামে ডাকা হয়) প্রিয় দলকে অনুসরণ করে আরও এক মিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেন।
অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও রয়েছেন বিটিএসের ভক্ত। তাঁরাও বসে নেই। বাংলাদেশের কে-পপ গানের ভক্তরা বিশ্বের অন্য দেশের ভক্তদলের মতো তৎপর। নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন এবং প্রিয় দলের মতো করেই অংশ নেন বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমে। এই দাতব্য কাজগুলো কখনো তাঁরা করেন প্রিয় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে, কখনো আবার প্রিয় তারকার জন্মদিনে ভক্তরা সেবামূলক কর্মসূচির ডাক দেন।
করোনার পাশাপাশি এ বছর বন্যাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক দুস্থ ও দরিদ্র মানুষ। এমন মানুষের জন্য পাশে দাঁড়িয়েছেন বিটিএস আর্মি বাংলাদেশের সদস্যরা। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সহযোগিতায় তাঁরা এই কাজগুলো করেন। ঈদে বন্যার্ত মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে ত্রাণ কর্মসূচির আয়োজন করেন।
শুধু এটাই নয়, এর আগেও ‘বিটিএস আর্মি অব বাংলাদেশ’ বিটিএস বা এর সদস্যদের জন্মদিনে এ ধরনের দাতব্য কাজ করেছে।
২০১৩ সালের জুনে যাত্রা শুরু করেছিল সাত সদস্যের বিটিএস। এই উপলক্ষে সারা পৃথিবীর বিটিএস আর্মিদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বাংলাদেশের বিটিএস আর্মিরাও উদ্যাপন করেন প্রিয় দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। আর্থিক অনুদান সংগ্রহ ও মানসিক স্বাস্থ্যের বার্তা প্রচারের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিটিএসের বর্ষপূর্তি পালিত হয়।
৯ মার্চ বিটিএস সদস্য সুগার জন্মদিন। এ উপলক্ষে বিটিএস আর্মি অব বাংলাদেশ সিলেটে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তবে এই উদ্যাপন শুধু নাচ-গানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এদিন বিটিএস আর্মি সবাই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক হয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেন।
আবার জে হোপের জন্মদিনের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য গড়া একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিটিএসের ভক্তরা সময় কাটান এবং স্কুলটিকে আর্থিক অনুদানও দেন। এ ছাড়া গত বছরের ভক্তরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিরও আয়োজন করেছিলেন।
মাত্র ৩৫ জন সদস্য নিয়ে ২০১৫ সালে যাত্রা করে বিটিএস আর্মি অব বাংলাদেশ। শুরুতে এর সদস্যরা লিউকোমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের
জন্য অনুদান সংগ্রহ করতেন। টুইটার ও ফেসবুকভিত্তিক এই দল সারা পৃথিবীর বিটিএস আর্মিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। আর প্রতিবছর কয়েক শ ভক্ত মিলে একসঙ্গে মিট-আপের (সম্মেলন) আয়োজন করেন। তাঁদের লক্ষ্য, মানুষের কাছে বিটিএসের ইতিবাচক বার্তা ও কাজগুলো পৌঁছে দেওয়া।