প্রেক্ষাগৃহে ১৬ নভেম্বর তথ্যচিত্র 'হাসিনা'

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের দৃশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের দৃশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের ঠিক আগের দিন ২৭ সেপ্টেম্বর ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের ট্রেলার প্রকাশিত হয়। ট্রেলারে দেখা যায়, ‘ছুরি হাতে কেউ একজন তাড়া করছে। ২৮৫০৩ নম্বরপ্লেটের গাড়িও দেখা যায়। ট্রেলার দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনার জীবনসংগ্রামের সঙ্গে এই নম্বরপ্লেটের গাড়ির কী সম্পর্ক? ২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের সেই তথ্যচিত্রের ট্রেলারে সবকিছু পরিষ্কার করা হয়নি। ছুরি হাতে তাড়া করা সেই ব্যক্তি আর গাড়ির রহস্য উন্মোচিত হবে আর মাত্র ছয় দিন পর। ১৬ নভেম্বর ঢাকা ও চট্টগ্রামের চারটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে তৈরি ৭০ মিনিটের তথ্যচিত্র ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’। সেদিন ঢাকা ও চট্টগ্রামের দর্শক জেনে যাবেন ট্রেলার দেখে নিজেদের মনে জমে থাকা সব প্রশ্নের জবাব।

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের মুক্তির বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা রেজাউর রহমান খান। সবাই তাঁকে ‘পিপলু’ নামেই চেনেন। আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘১৬ নভেম্বর আমরা ছবিটি মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্স, যমুনা ব্লকবাস্টার ও মধুমিতায় ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আর ঢাকার বাইরে ছবিটি চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনে দেখানো হবে।’

গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্র রীতিমতো ভাইরাল হয়। চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট থেকে শুরু করে সাংসদ, মন্ত্রী ও রাজনীতিকেরাও তাঁদের ফেসবুক, টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে তা শেয়ার করেন। ট্রেলার মুক্তির পর থেকে সবাই পুরো তথ্যচিত্র দেখার অপেক্ষায় ছিলেন। এবার তাঁদের অপেক্ষা শেষ হতে যাচ্ছে।

চারটি প্রেক্ষাগৃহে ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের মুক্তি প্রসঙ্গে পিপলু বলেন, ‘তথ্যচিত্রের ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। আমরা শুরুতে তাঁদের ছবিটি দিয়েছি, যাঁরা আগ্রহ দেখিয়েছেন। আর দর্শকের আগ্রহ কেমন, তা দেখতে চাই। দর্শক যদি আগ্রহী হয়, পরে প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা বাড়াব। আপাতত চারটি প্রেক্ষাগৃহে দর্শক দেখুক, এরপর দর্শকের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের দৃশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা। ছবি: সংগৃহীত

পিপলু বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রেক্ষাগৃহে দর্শক তথ্যচিত্র দেখে অভ্যস্ত না। বড় বড় উৎসবগুলোতেই সাধারণত তথ্যচিত্র দেখি। তবে আমরা যে তথ্যচিত্র বানিয়েছি, প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে। আমরা মনে করছি, দর্শকের এ ধরনের ছবি দেখার অভিজ্ঞতা হওয়া প্রয়োজন।’

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্র বিশ্বের বিভিন্ন উৎসবে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে নির্মাতার। তিনি মনে করেন, ‘বিশ্বের বড় বড় উৎসবগুলোতে এই তথ্যচিত্রের ভালো করার মতো অনেক উপাদান রয়েছে। এদিকে ১৬ নভেম্বর মুক্তির আগে ছবিটির একটি প্রিমিয়ার শোর আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে।’

জানা গেছে, এই তথ্যচিত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের গল্পগুলোকে নিজের স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক রেজাউর রহমান খান পিপলু। তিনি ‘হাসিনা’ চরিত্রটিকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নাটকীয় কিন্তু আন্তরিক ভঙ্গিতে চিত্রায়ণ করেছেন বিভিন্ন ভূমিকায়—কখনো বঙ্গবন্ধুর মেয়ে বা কারও বোন, কখনো একজন নেতা বা পুরো দেশের ‘আপা’ হিসেবে এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁর ব্যক্তিসত্তাকে। ৭০ মিনিটের এই তথ্যচিত্রে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেখা যাবে। উঠে আসবে শেখ হাসিনার সাধারণ জীবনের অসাধারণ কিছু মুহূর্ত। যেখানে তিনি কখনো মেয়ে, কখনো মা, কখনো বোন আবার কখনো আমজনতার নেত্রী।

যাঁকে ঘিরে এই ছবিটি, তিনি ছবিটি দেখেছেন? পিপলু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দেখানোর পরিকল্পনা করিনি। যাঁকে নিয়ে এই ছবি, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে দেখার আগ্রহ তো থাকে। সেটা আমরা এখনো ঠিক করিনি। হয়তো হয়ে যাবে।’

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনসংগ্রামের নানা দিক ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রে উঠে আসায় এটি নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে বলে জানালেন পিপলু। তিনি বলেন, ‘আমি আসলে এই মুহূর্তে ছবিটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। ভালো লাগছে এই ভেবে, এত বড় একটা প্রকল্প শেষ করতে পেরেছি। আমার ধারণা, এটা অনেক দিন ধরে দেখার মতো একটা ছবি হবে। এই ছবির একটা আবেদন তৈরি হবে। ছবিটি এমন একজন মানুষকে ঘিরে তৈরি, যিনি কোনো না কোনোভাবে দেশের ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। এখন পর্যন্ত দেশি কিংবা বিদেশি লোকজন, যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা বলেছেন, ছবিটা ছবি হিসেবে দেখার জন্য যথেষ্ট যোগ্য।’

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই ও অ্যাপল বক্স ফিল্মসের যৌথ প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে ডকু-ড্রামা ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’। দুই বছরের গবেষণা ও তিন বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় এই ডকু-ড্রামা নির্মিত হয়েছে। আবহ সংগীতের কাজ করেছেন কলকাতার দেবজ্যোতি মিশ্র। চিত্রগ্রাহক হিসেবে ছিলেন সাদিক আহমেদ। প্রযোজনা করেছে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।