‘সহ–অভিনেতার কথা শুনেই প্রথম চমকে গিয়েছিলাম। ইন্দ্রনীল সেন গুপ্ত ভারতের একজন ভালো গুণী অভিনেতা। এত বড়মাপের একজন অভিনেতার সঙ্গে ছবিতে অভিনয় করব—এটা বিশ্বাসই করতে পারিনি। তাঁর মতো একজন বিদেশি তারকার সঙ্গে অভিনয় করব, শুনেই ভয় পেয়েছিলাম।’ কথাগুলো বললেন অভিনেত্রী নাজিরা মৌ। ‘নন্দিনী’ চলচ্চিত্রে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি। প্রথম ছবিতে ইন্দ্রনীলের সঙ্গে অভিনয় করা প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘আগে থেকে তাঁকে চিনতাম না। অপরিচিত একজন মানুষ। তাঁর সঙ্গে আমার সিংক হবে কি না, অভিনয় ধরতে পারব কি না, তা ছাড়া বড় পর্দায় আমার প্রথম কাজ। সবদিক থেকে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম।’
পরবর্তী সময়ে শুটিং করতে গিয়ে বেশ ভালো বন্ধু হয়ে যান এই দুই তারকা। সেটা সম্ভব হয়েছে ইন্দ্রনীলের সহযোগিতার জন্য। মৌ বলেন, ‘শুটিং করতে গিয়ে প্রথমে নার্ভাস লাগলেও পরে সবকিছু বেশ সহজ হয়ে যায়। ইন্দ্রনীল ভাই বারবার শুটিং শেষ করেই চিত্রনাট্য হাতে নিয়ে আমাকে ডাকতেন। দুজন একসঙ্গে রিহার্সাল করতাম। সেটা ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তিনি আমাকে দেখিয়ে দিতেন। শুরু থেকেই তাঁর সহযোগিতা পরবর্তী সময়ে আমার অভিনয়কে আরও সহজ করে দিয়েছে। প্রথম দিকেই ভয়টা ছিল।’
শুটিংয়ে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। সেগুলো অনেক মজার ঘটনা মনে করেন মৌ। এ অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রথম ফিল্মে অভিনয় করছি। এটা ভালো লাগছিল। কিন্ত প্রতিদিন ভোরে বাসা থেকে বের হতাম। পাঁচটায় মেকআপে বসতে হতো। এরপর দিনের সূর্য ডোবা পর্যন্ত টানা শুটিং করতে হতো। আমাদের কারও সঙ্গে কাজ ছাড়া অন্য কথা হতো না। দিনের পর দিন এমনও হয়েছে যে ১০–১৫ মিনিট সময়ও অবসর পাইনি। এটা প্রথম দিকে কষ্ট হলেও পরে অনেক মজা লাগছিল। তখন নাটক এবং ফিল্মের পার্থক্যটা বুঝেছি। কাজটা অনেক মজা নিয়ে করেছি।’
২০০৬ সালে মডেল হিসেবে বিনোদন জগতে পা রাখেন এ অভিনেত্রী। হেঁটেছেন র্যাম্পে। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে প্রথম নাটকে অভিনয় করেন বলে জানান। ছবিতে অভিনয় করার ইচ্ছে থাকলেও একদম বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয়ে পরিবার থেকে বাধা ছিল। এ প্রসঙ্গে নাজিরা মৌ বলেন, ‘বাসা থেকে শতভাগ কমার্শিয়াল ছবি করায় নিষেধ ছিল। কখনোই রাজি হতো না। বেশ কিছু প্রস্তাব ফিরিয়েও দিয়েছি। যখন ছবির নির্মাতা আমাকে “নরক নন্দিনী” উপন্যাস পড়তে দিলেন, তখন বইটি পড়ে খুব ভালো লাগে। তখন আমার মনে হয়, এই কাজটি আমি করতে চাই। তখন মা–বাবাকে উপন্যাসটি দিয়ে বলি, এটা নিয়ে একটা বাণিজ্যিক ছবি হবে, আমি করতে চাই। প্রথমে রাজি না হলেও মা বইটি পড়ে রাজি হয়। তখন মা বলে, বাণিজ্যিক হলেও করতে পারো। এটার গল্প ভালো।’ মায়ের কথা শুনে আর দেরি করেননি নাজিরা মৌ। চুক্তিবদ্ধ হন প্রথম ছবিতে।
গত বছর শুরু হয় ‘নন্দিনী’ ছবির শুটিং। ছবিটি পরিতোষ বাড়ৈর ‘নরক নন্দিনী’ উপন্যাস থেকে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ছবির পরিচালক শোয়েবুর রহমান রাসেল। ছবিতে এখনো নাজিরা মৌয়ের চার দিনের শুটিং বাকি আছে। নির্মাতা জানালেন, ছবিটি দুই ঈদের মাঝামাঝি সময়ে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়ার ইচ্ছে আছে।