নাচ-গানে বহ্নিশিখার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন

অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় লোকসংস্কৃতি–আশ্রিত গীতিনৃত্যনাট্য ‘প্রাণসখা’। ছবি: প্রথম আলো
অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় লোকসংস্কৃতি–আশ্রিত গীতিনৃত্যনাট্য ‘প্রাণসখা’। ছবি: প্রথম আলো

দেশজ সংস্কৃতির বিকাশ এবং গণসংগীতের ধারা বেগবান করার প্রত্যয়ে ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করে সাংস্কৃতিক সংগঠন বহ্নিশিখা। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যকে সঙ্গী করে পথচলা সংগঠনটি পূর্ণ করল প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপনে গত শুক্রবার ১৪তম বর্ষপূর্তিতে আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সংগঠনটি। সন্ধ্যায় শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

‘প্রাণসখা’ শীর্ষক গীতিনৃত্যনাট্য এবং বিভিন্ন ধারার নজরুলসংগীত পরিবেশনায় সাজানো ছিল অনুষ্ঠান। এ ছাড়া ছিল কবিতা আবৃত্তি। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সাম্মানিক সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। সভাপতিত্ব করেন বহ্নিশিখার সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। উদ্বোধনী বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, সার্বিকভাবে বিভিন্ন সূচকে দেশের অনেক উন্নতি হচ্ছে। এই উন্নতির উল্টো পিঠেই আবার অনেক ক্ষেত্রে মানবিকতার অবনতি ঘটেছে। নানাভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে হিংসাত্মক মনোভাব ও সাম্প্রদায়িকতা। সেই অমানবিকতাকে রুখতে সংস্কৃতিচর্চার বিকল্প নেই। সংস্কৃতির শাণিত শক্তিতে ভর করে লড়তে হবে অমানবিকতার বিরুদ্ধে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের শুভবোধের চেতনা জাগ্রত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বহ্নিশিখার মতো বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে বিনির্মাণ করতে হবে অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক বাংলাদেশ।

ছিল কাজী নজরুল ইসলামের গানের দলীয় পরিবেশনা। ছবি: প্রথম আলো

আলোচনা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থাপিত হয় লোকসংস্কৃতি–আশ্রিত গীতিনৃত্যনাট্য ‘প্রাণসখা’। উঠে আসে গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের হাসি-কান্না ও প্রেম-বিরহের দৃশ্যকল্প। গ্রামীণ জীবনের এক যুগল তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার সূত্র ধরে বিস্তৃত হয় প্রযোজনাটি। সাহিদা রহমানের নৃত্য পরিচালনায় পরিবেশনাটির সংগীত পরিকল্পনায় ছিলেন আবিদা রহমান।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন বহ্নিশিখার সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সাম্মানিক সভাপতি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। ছবি: প্রথম আলো

অনুষ্ঠানে ছিল কাজী নজরুল ইসলামের লেখা বিচিত্র গানের পরিবেশনা। ভক্তিমূলক গান, প্রণয়গীতি, দেশাত্মবোধক সংগীত, রাগপ্রধান গান, গণসংগীত কিংবা গজল—এমন ১০টি ধারার নজরুলসংগীতের কয়েকটি ধারা পরিবেশিত হয় এ অনুষ্ঠানে। নজরুলের বিভিন্ন ধারার গানগুলো পরিবেশন করেন বহ্নিশিখার শিল্পীরা। গীতিনৃত্যনাট্য ও সংগীতের সমন্বিত এ আয়োজনে আবৃত্তি পরিবেশন করেন মাহফুজা আক্তার।

গীতিনৃত্যনাট্য ‘প্রাণসখা’র একটি মুহূর্ত। ছবি: প্রথম আলো

বহ্নিশিখার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এ অনুষ্ঠানে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন ঊর্মি হালদার, সাহিদা রহমান, সুনয়না সিদ্দিকী, নওশীন বৃষ্টি, অরুণিমা ভৌমিক, নীলিমা শাজাহান, শ্রাবণী পাল, শিমুল সাহা, আসিফ ইকবাল, আমিনুল ইসলাম, বিপ্লব কুমার শীল, জাহিদুল ইসলাম, সিদরাতুল মুনতাহা, রাহুল রায় ও আবিদা রহমান।