: কেমন আছেন?
: খুব ভালো। ধন্যবাদ।
: কী করছেন?
: অভিনয়। ওই একটা কাজই শিখেছি। আর কিছু পারি না। শেষ পর্যন্ত অভিনয়টাই করে যেতে চাই।
: কোনো সন্দেহ আছে?
: সবকিছু দেখে খুব বেশি নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। কেমন যেন একটা হতাশা কাজ করছে। এখন তেমন মূল্যায়ন পাই না। আমার কাজ দেখে কেউ কোনো মন্তব্য করেন না। ভালো কিংবা খারাপ কোনোটাই না। আসলে দর্শক এখন আর তেমন নাটক দেখেন না। ব্যাপারটি মনের মধ্যে বেশ ঘুরছে। জানি না সামনে কী হবে?
কথা হচ্ছে ইন্তেখাব দিনারের সঙ্গে। টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রের একজন দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য অভিনেতা। নির্মাতাদের কাছে তিনি ‘ঝামেলামুক্ত’ একজন মানুষ। নিজে যেমন ঝামেলামুক্ত থাকেন, নির্মাতাদেরও বিপদে ফেলেন না।
এ ব্যাপারে ইন্তেখাব দিনারের মন্তব্য, ‘এ কাজটাই আমার পেশা। আর আমি একজন পেশাদার শিল্পী।’
১৫ ডিসেম্বর সকালে তাঁর সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন তিনি ছিলেন বাসায়।
ইন্তেখাব দিনার এখন অভিনয় করছেন সাতটি তারার তিমির নাটকে। আফসানা মিমির ‘ডলস হাউস’ সিরিজের দ্বিতীয় ধারাবাহিক। ডলস হাউস ধারাবাহিকেও ছিলেন তিনি।
এটিএন বাংলায় ১৯ ডিসেম্বর ধারাবাহিকটির ২০০তম পর্ব প্রচারিত হবে। ইন্তেখাব দিনার জানান, ধারাবাহিকটির শুরু থেকেই তিনি আছেন। নাটকে তাঁর চরিত্রটি শুরুতে ছিল বন্যা মির্জা আর সানজিদা প্রীতির সঙ্গে। প্রথমজন ছিলেন স্ত্রী আর দ্বিতীয়জন প্রেমিকা। এখন তিনি প্রেম করছেন মৌটুসী বিশ্বাসের সঙ্গে।
সাতটি তারার তিমির নিয়ে দিনার বলেন, ‘এই কাজটা আমি দারুণ উপভোগ করছি। সবকিছুই খুব নিয়ম মেনে হচ্ছে। সময়মতো স্ক্রিপ্ট পাচ্ছি। এমনকি পোশাকও। কোনো কিছুর জন্য ভাবতে হচ্ছে না। আগে থেকে চরিত্রটির জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারছি।’
ডলস হাউস এবং সাতটি তারার তিমির, ইন্তেখাব দিনার বলেন, ‘দুটি ধারাবাহিকে আমি দুই প্রজন্মের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছি। অভিজ্ঞতাও দুই ধরনের।’
ইন্তেখাব দিনার এখন আরও কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজ করছেন। তিনি জানান, মাসুদ মহিউদ্দিনের নীল জোনাকি নাটকে তিনি বিজ্ঞাপনী সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নীল আকাশে কালো রং নাটকে নেতিবাচক এক চরিত্রে, রহমতউল্লাহ তুহিনের যখন কখনো ভৌতিক গল্প-নির্ভর আর গন্তব্য নিরুদ্দেশ নাটকে তিনি ট্যুরিস্ট গাইড।
চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার। প্রথম অভিনয় করেন তৌকীর আহমেদের জয়যাত্রায়। এরপর বাদল রহমানের ছানা ও মুক্তিযুদ্ধ , বদরুল আনাম সৌদের খণ্ডগল্প ’৭১ , তামিম নূরের ফিরে এসো বেহুলা আর সর্বশেষ কাজ করেছেন মুরাদ পারভেজের বৃহন্নলা ছবিতে।
আড়াই বছর আগে অভিনয়শিল্পী বিজরী বরকতউল্লাহ আর ইন্তেখাব দিনারের বিয়ে হয়। দিনার বলেন, ‘সংসারজীবন নিয়ে দারুণ আছি। বেশ উপভোগ করছি।’
ইন্তেখাব দিনার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ছাত্র। ওই সময় মঞ্চে অভিনয়ের নেশা পেয়ে বসে তাঁকে। যোগ দেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে। শুরুতেই সুযোগ পান দেওয়ান গাজীর কিসসা নাটকে। দিনার বলেন, ‘ওই নাটকে আমি শুধু একবার মঞ্চের একদিক থেকে অন্যদিকে হেঁটে গেছি।’ এরপর তিনি গ্যালিলিও, অচলায়তন, মৃত্যু সংবাদ আর নূরলদীনের সারা জীবন নাটকে অভিনয় করেন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। ২০০১ সালে সরে আসেন মঞ্চ থেকে। তাঁর ভাষায়, ‘ওই সময় কাজটা আর ঠিক উপভোগ করতে পারছিলাম না। তবে মঞ্চের মানুষগুলোর সঙ্গে এখনো যোগাযোগ আছে। দেখা হয়, কথা হয়। বন্ধুত্বের জায়গাটা ঠিকই আছে।’
একটু পরই শুটিং আছে। তৈরি হতে হবে তাঁকে। বলেন, ‘সেদিন আবার খুব ভালো লাগবে, যেদিন আমার কাজ দেখে কেউ কোনো মন্তব্য করবেন, সবাই আবার নাটক দেখবেন।’