দেখতে দেখতে পনেরো শেষ করে ষোড়শী হতে যাচ্ছে এই মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের আয়োজন। পাঠক-দর্শকদের মধ্যে আরেকটু কৌতূহল, আরও বেশি আনন্দ বিলিয়ে দিতে জানিয়ে দেওয়া যাক মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের কিছু চমকপ্রদ তথ্য। আসুন জেনে রাখি ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কোন বিভাগে বিজয়ী হিসেবে কে কতটা এগিয়ে আছেন
তারকা জরিপ
জাহিদ হাসানের আট অর্জন
প্রতিবছর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় ‘সেরা টিভি অভিনয়শিল্পী (পুরুষ)’ বিভাগের পুরস্কারটি নিয়ে। বড় বড় অভিনেতা মনোনয়ন তালিকায় থাকেন তাঁদের সেরা পারফরম্যান্সটি নিয়ে। তবে সেরার সেরা যিনি হন, শেষ দানে বাজি মাত করেন তিনিই। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের ১৫ বছরের ইতিহাসে আটবার পুরস্কার জিতে এই বিভাগে সবচেয়ে এগিয়ে আছেন জাহিদ হাসান। ১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত জাহিদকে টপকে কেউ জিততে পারেননি সেরা টিভি অভিনয়শিল্পীর (পুরুষ) পদক। এরপর আবারও ২০০৭, ২০১০ ও ২০১২ সালে জাহিদ জিতে নেন সেরা টিভি অভিনয়শিল্পী (পুরুষ) বিভাগের পুরস্কার।
বিপাশার দান দান তিন দান
অভিনেত্রীদের মধ্যে সেরার কাতারে প্রতিবছরই ঘুরেফিরে নানান বিজয়ীদের মুখ দেখা যায়। কখনো তিশা, কখনো জয়া, কখনো বা তারিন। তবে সেরা টিভি অভিনয়শিল্পী (নারী) বিভাগে তিনবারের বেশি কেউ-ই জিততে পারেননি সেরার পদক। এ বিভাগে একমাত্র বিপাশা হায়াত ১৯৯৮, ১৯৯৯ ও ২০০২ সালে সেরা টিভি অভিনয়শিল্পীর (নারী) পুরস্কার জিতে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন।
রিয়াজ-শাকিব খানের ড্র
দুজনের ঝুলিতেই আছে পাঁচটি করে ‘সেরা চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (পুরুষ)’-এর পুরস্কার। রিয়াজ প্রথম মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারটি জেতেন ১৯৯৮ সালে। এরপর ২০০১ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক জয় হয় তাঁর। এরপর আবরও ২০০৬ সালে হৃদয়ের কথা ছবিটি দিয়ে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় রিয়াজের। তবে এরপর সৌভাগ্যের পাল্লা ঝুঁকে যায় শাকিব খানের দিকে। তিনিও মোট পাঁচবার এই পুরস্কার জেতেন।
সবার সেরা শাবনূর
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে সবকটি বিভাগ মিলিয়েও শাবনূরকে টক্কর দিতে পারেনি কেউ। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ‘সেরা চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (নারী)’-এর পুরস্কার গেছে এ অভিনেত্রীর ঝুলিতেই। তিনি জিতেছেন ১০টি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার জিতেছেন তিনি। পুরস্কার জয়ের হিসাবে শাবনূরের পরেই আছেন জাহিদ হাসান।
ছয়বার জয়ী আসিফ
‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ দিয়ে যাত্রা শুরু আসিফের। মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে প্রথমবার তিনি বিজয়ী হন ২০০১ সালে। এরপর ২০০৫ পর্যন্ত ‘সেরা কণ্ঠশিল্পী (পুরুষ)’ বিভাগে আসিফ ছিলেন বিজয়ী। এরপর ২০১৩ সালে আবারও সেরা কণ্ঠশিল্পীর (পুরুষ) পদকটি পান তিনি।
এখনো ন্যান্সি
‘সেরা কণ্ঠশিল্পী (নারী)’ বিভাগে ন্যান্সিকে কেউ যেন দমাতেই পারছেন না—২০০৯ সাল থেকে ছুটছে তাঁর জয়রথ। এখনো তা থামেনি। টানা পাঁচবার এই বিভাগে পুরস্কার জিতেছেন তিনি। এ বছরও আছেন মনোনয়ন তালিকায়।
সমালোচক পুরস্কার
তিনবারের সেরা নুরুল আলম আতিক
একটি ফোন করা যাবে প্লিজ... কিংবা বিকল পাখির গান—এমন সব নাটকের চিত্রনাট্যের জন্যই তিনবার সেরার পদক জিতে নেন নুরুল আলম আতিক। ২০০২, ২০০৮ ও ২০০৯ সালে পুরস্কার জিতে তিনি এই বিভাগে সর্বোচ্চ পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে আছেন সবার চেয়ে এগিয়ে।
সর্বোচ্চ জয় অনিমেষ আইচের
এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশিবার সেরা নির্দেশকের পুরস্কার পেয়েছেন অনিমেষ আইচ। চারবার। ২০০৪, ২০০৭, ২০১০ ও ২০১২ সালে তিনি এই পুরস্কারগুলো জেতেন। সর্বশেষ নয়টার সংবাদ নাটকের জন্য সেরা নির্দেশকের পুরস্কার পান তিনি।
সমালোচকের নজরে সেরা মোশাররফ করিম
তারকা জরিপে জাহিদ হাসান এগিয়ে। তবে সমালোচকদের বিচারে এগিয়ে মোশাররফ করিম। সমালোচক বিভাগে ‘সেরা টিভি অভিনয়শিল্পী (পুরুষ)’ হিসেবে তিনবার জিতে নেন পুরস্কার। ২০০৮, ২০১২ ও ২০১৩ সালে পুরস্কার জেতেন তিনি।
একবারের বেশি কেউ না!
সমালোচক কিংবা দর্শক জরিপে পুরস্কার জেতার দিক থেকে সব সময়ই কেউ না কেউ এগিয়ে থাকেন। তবে অবাক করা বিষয় হলো, এই সবগুলো বিভাগ থেকে আলাদা সেরা টিভি অভিনয়শিল্পী (নারী) ও সেরা চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী (নারী) বিভাগ দুটি। এ দুই বিভাগে এখন পর্যন্ত কোনো অভিনেত্রীই একের অধিক পুরস্কার জেতেননি।
পরিচালকের পরিচয়ে তৌকীর
অভিনেতা হিসেবে তাঁর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে হলেও, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে পরিচালক তৌকীরের কদরই বেশি। ২০০৪ ও ২০০৬ সালে সেরা পরিচালকের পুরস্কার জিতে এ বিভাগে বিজয়ী হিসেবে তিনি সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন।
রিয়াজ-রাইসুল ইসলাম আসাদ এক কাতারে
সমালোচক বিভাগেও সেরা চলচ্চিত্র অভিনয়শিল্পী হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার পুরস্কার জিতে এগিয়ে আছেন রিয়াজ। দুবার পুরস্কার জিতেছেন তিনি। তবে এখানেও রিয়াজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুবার পুরস্কার জিতে একই কাতারে আছেন অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। রিয়াজ জিতেছেন ২০০৪ ও ২০০৫ সালে এবং আসাদ পুরস্কার পেয়েছেন ২০০৮ ও ২০১৩ সালে।
গ্রন্থনা করেছেন: সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন