>বলিউডের পিচে সেঞ্চুরি করে ফেললেন অজয় দেবগন। তানহাজি: দ্য আনসাং ওয়ারিয়র এই বলিউড তারকার ক্যারিয়ারের শততম ছবি। এই ছবির প্রযোজকও তিনি। এই ঐতিহাসিক ছবিতে অজয়ের স্ত্রীর চরিত্রে দেখা যাবে কাজলকে। তাই সব দিক থেকে অজয়ের জন্য বিশেষ এই ছবি। মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে অজয় দেবগনের মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য।
দেবারতি ভট্টাচার্য: আপনার ক্যারিয়ারের শততম ছবি তানহাজি। কী রকম লাগছে?
অজয় দেবগন: প্রথমে আমাদের বিষয়টা মাথায় ছিল না। জানতামই না, আমার ১০০তম ছবি এটি। ছবিটি মুক্তির জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় তা জানতে পারি। ভালোই লাগছে।
দেবারতি: তানহাজি থ্রি-ডি ছবি। ট্রেলার দেখে বোঝা গেছে যে এই ছবিতে প্রযুক্তির ভূমিকা অনেকখানি। এ ব্যাপারে আপনার কী অভিমত?
অজয়: তানহাজিতে প্রযুক্তির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ছবিতে এমন প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে, যা প্রথমবার ভারতীয় সিনেমায় দেখা যাবে। আর এসব প্রযুক্তির কাজ যাঁরা করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকে ভারতীয়। এর জন্য আমি নিজের কোম্পানি গঠন করেছি। ভারতীয় সিনেমার দর্শকেরা এক নতুন অভিজ্ঞতা পেতে যাচ্ছেন। আর এ সবকিছু করার জন্য আমাদের চার বছর সময় লেগেছে। আমি আমার বাবার (বীরু দেবগন) কাছ থেকে প্রযুক্তির অনেক খুঁটিনাটি বিষয় শিখেছি। তবে বাবার সময় সম্পাদনার কাজ অনেক জটিল ছিল। এখন তো একটা বোতাম টিপলে অনেক কিছু হয়ে যায়।
দেবারতি: ৫০০ বছরের পুরোনো ইতিহাসকে পর্দায় আনার পেছনে নিশ্চয় অনেক গবেষণা ছিল?
অজয়: একদম তা–ই। আমাদের টিম, মূলত পরিচালক ওম রাউত তানহাজির ওপর প্রচুর গবেষণা করেছেন। আর এর মধ্যে কিছুটা কল্পনার মিশ্রণ করা হয়েছে। তবে অবশ্যই ইতিহাসকে বিকৃত না করে। শিবাজির ওপর তো অনেক ছবি বানানো হয়েছে। কিন্তু তানহাজির ওপর কোনো ছবি নির্মিত হয়নি। এই ছবিতে তানহাজি ও শিবাজি মহারাজের মধ্যে কথোপকথন, তানহাজির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী বাইয়ের সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। তানহাজির পরিবারের সঙ্গে আমরা দেখা করেছিলাম। তারাও আমাদের নানাভাবে সহায়তা করেছে। তানহাজির পরিবারের সদস্যরা সেটে আসতেন, পরিচালক ওমের সঙ্গে অনেক আলোচনা করতেন।
দেবারতি: শুনেছি, সাবিত্রী বাইয়ের চরিত্রটা খুব বড় নয়। তাই কাজলকে রাজি করানো কি একটু কঠিন ছিল?
অজয়: একদমই না। কাজল সহজেই রাজি হয়ে যায়। আর আমি প্রথম থেকেই চেয়েছিলাম যে কাজল এই চরিত্রে অভিনয় করুক। ছবিতে সাবিত্রীর চরিত্রটা খুব একটা বড় নয়। তবে এই চরিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। সাবিত্রী নিজের ছেলের বিয়ে ছেড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়েছিলেন। এত বড় আত্মত্যাগের কাহিনি কম শোনা যায়।
দেবারতি: পর্দায় আপনার ও কাজলের রসায়ন দুর্দান্ত। শুনেছি, বাস্তবে আপনাদের মনেরও সাংঘাতিক মিল?
অজয়: হ্যাঁ। মনের মিল তো আছেই। আসলে সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্পেস দেওয়া খুব জরুরি। আমরা একে অপরকে ব্যক্তিগত স্পেসটা দিই। আর এটা ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের প্রত্যেকেরই আলাদা একটা জগৎ আছে।
দেবারতি: একজন স্ত্রী হিসেবে কাজলের মূল্যায়ন কীভাবে করবেন?
অজয়: কাজল একদম পারফেক্ট স্ত্রী।
দেবারতি: ছবিটিকে ঘিরে আপনার ছেলেমেয়ের প্রতিক্রিয়া কেমন?
অজয়: আমার দুই সন্তানই ছবিটি দেখবে বলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আমার মেয়ে নাইসা সিনেমা নিয়ে খুব একটা কথাবার্তা বলে না। আমি বাড়িতে ঢুকলে ছেলে যুগ আমাকে বলে, ‘তানহাজি মালাসুরে এখন বাড়িতে প্রবেশ করছে!’ আমি ফোন করলে ও বলে, ‘হ্যালো তানহাজি!’ (সশব্দে হেসে)
দেবারতি: সাইফ আলী খানকে ‘উদয়ভান’-এর চরিত্রে নেওয়ার কি বিশেষ কোনো কারণ?
অজয়: সাইফ ছাড়া এই চরিত্রে এত ভালো অভিনয় আর কেউ করতে পারত না। উদয়ভানের মতো পাগলামি এবং ব্যক্তিত্ব একমাত্র সাইফই ফুটিয়ে তুলতে পারে। আর ও তা করে দেখিয়েছে।