‘তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে’, ‘জীবনে আমার যত আনন্দ পেয়েছি দিবস-রাত’, ‘এ পথে আমি-যে গেছি বার বার’ গানগুলো প্রিয় ছিল চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর। তাঁকে স্মরণ করে গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় এই গানগুলোই গাওয়া হলো। পাঠ করা হলো তাঁর লেখা গদ্য ও কবিতা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ছিল স্মরণানুষ্ঠান। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘কাইয়ুম চৌধুরী আমাদের মধ্যে যখন ছিলেন, তখন আমাদের চারপাশটা তিনি প্রবলভাবে ভরে রাখতেন তাঁর কথায়, আঁকায় ও লেখায়। তাঁর সাফল্য প্রথমে আসে প্রচ্ছদ অঙ্কনে। তিনি কয়েক বছরেই শ্রেষ্ঠ প্রচ্ছদ অঙ্কনের পুরস্কার পান। তারপরে কাইয়ুমকে আমরা ছবি আঁকায় মনোযোগী হতে দেখি। সেখানে আমাদের লোকশিল্পের নানা উপকরণ তিনি আত্তীকরণ করেছিলেন। তাঁর আঁকা মানুষ, নদী, নৌকা, ঘরবাড়ি—এসবের মধ্যে গ্রামবাংলার সুস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি আমরা দেখতাম।’
শিল্পসমালোচক আবুল মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশের একটা চেহারা তিনি নিজের মতো করে আমাদের বুকের মধ্যে গেঁথে দিয়েছেন। সেখানে কতগুলো আইকনও তিনি তৈরি করে গেছেন। বাংলার নারী, বাংলার নৌকা, বাংলার নদী, বাংলার গাছপালা-পাখি এবং বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যে মুক্তিযোদ্ধার ছবি এঁকেছেন মাথায় লাল কাপড় বাঁধা একটি কিশোর ছেলে, সেটি আমাদের আইকনে পরিণত হয়েছে।’
অনুষ্ঠানটি দুই পর্বে সাজানো ছিল। আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব বদরুল আনম ভূঁইয়া এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্য পর্বে ছিল কাইয়ুম চৌধুরীর লেখা কবিতা, গদ্য ও প্রিয় গানের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক পর্ব। ‘জীবনে আমার যত আনন্দ’ শিরোনামে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি গ্রন্থনা করেন মৃত্তিকা সহিতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাইয়ুম চৌধুরীর স্ত্রী তাহেরা চৌধুরী, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মফিদুল হক প্রমুখ।
কাইয়ুম চৌধুরীর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল গত ৩০ নভেম্বর। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।