করোনাভাইরাসের আতঙ্ক ও সতর্কতায় স্থবির হয়ে পড়েছে বিনোদনের দুনিয়া। হলিউড, বলিউডের পাশাপাশি ঢালিউডে পড়তে শুরু করেছে এর প্রভাব। দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের পাশাপাশি বড় আঘাত এসেছে কনসার্টের ওপর। বাতিল হয়েছে বহু কনসার্ট। বিদেশে স্টেজ শোতে যাওয়া হয়নি অনেক শিল্পীর। মুক্তি পিছিয়ে গেছে বেশ কিছু ছবির। সিনেমা হলে কমে গেছে দর্শক। ইতিমধ্যে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি।
প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আগামীকাল থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকবে। তবে মাল্টিপ্লেক্সগুলো এ সিদ্ধান্তের আওতাভুক্ত নয়। তারা প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ বা খোলা রাখবেন নিজেদের সিদ্ধান্তে। চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিচালক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, পরশু চলচ্চিত্রের সব সংগঠনের সঙ্গে বসবেন তাঁরা। প্রাথমিকভাবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। কী করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেবেন সভা করার পর। তিনি বলেন, ‘বহু দেশে সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। বড় বড় লিগের খেলা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের হল খোলা রেখে লাভ কী?’
শোবিজের অন্য সংগঠনগুলো করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। শুটিং, ডাবিং বন্ধ করবেন কি না, তা নিয়ে ভাবছেন সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা। বুধবার বনানীতে এ নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক জানান, শুটিং চলছে। নিয়মিত কাজের পাশাপাশি আছে বৈশাখের নাটক, টেলিছবির কাজ। কী করা যায়, সেই সিদ্ধান্ত নিতে সবাই মিলে বৈঠকে বসতে যাচ্ছি।’
সাধারণত এই সময়ে গানের শিল্পীরা স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কেউ কেউ এ সময়ে দিনে দুটি মঞ্চেও গান করেন। এই সময়েই বিদেশ থেকেও গান করার আমন্ত্রণ আসে। করোনা–আতঙ্কে সেসব বন্ধ। স্টেজ শো, রেকর্ডিং নিয়ে ব্যস্ত শিল্পীরা এখন গৃহবন্দী।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় শিল্পী মমতাজ বলেন, ‘বিদেশে স্টেজ শো করতে যাচ্ছি না, দেশেরগুলোও বাদ। এমনকি রেকর্ডিংয়েও যাচ্ছি না। কবে পৃথিবীর পরিস্থিতি ঠিক হবে, বুঝতে পারছি না। পৃথিবীর সবাই ভালো থাকুক, নিরাপদে থাকুক—এটাই কামনা করছি।’
সোলস ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য পার্থ বড়ুয়া বলেন, ‘সবদিকে করোনা–আতঙ্ক। জীবনের নিরাপত্তা সবকিছুর আগে। রোজার আগে পর্যন্ত আমাদের যত কনসার্ট ছিল, সব বাতিল।’
তবে নাটকের শুটিং থেমে নেই। নাটক, সিনেমার শুটিং স্পটে আতঙ্ক থাকলেও কাজ বন্ধের খবর পাওয়া যায়নি সেভাবে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হলে তাঁরা শুটিং বন্ধ করবেন।