এ টি এম শামসুজ্জামানকে আজ শনিবার দুপুরে আবারও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছে। তবে এখন তিনি শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানা গেছে, বাসায় যাওয়ার পরও দীর্ঘদিন এই বর্ষীয়ান অভিনেতাকে চিকিৎসার আওতায় থাকতে হবে। তখনো চিকিৎসক সরাসরি তাঁকে পর্যবেক্ষণ করবেন। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য তাঁকে আরও অনেক দিন অপেক্ষা করতে হবে।
এ টি এম শামসুজ্জামান এখন পুরোনো ঢাকার গেন্ডারিয়া এলাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মতিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিনি কেবিনেই ছিলেন। সকালে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে তাঁকে সরাসরি আমাদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসি। এখন তিনি এখানেই আছেন। আপাতত কোনো ঝুঁকি নেই। আশা করছি, আগামীকাল রোববার আবার তাঁকে কেবিনে দেওয়া যাবে।’
ডা. মো. মতিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এ ধরনের রোগীর যেকোনো সময় অবস্থার পরিবর্তন ঘটতে পারে। যেকোনো কিছু হতে পারে। তা ছাড়া ওনার বয়স হয়েছে।’
তিনি জানান, এ টি এম শামসুজ্জামান আপাতত বিপদমুক্ত। তাঁকে বাসায় নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বাসায় নিলেও নিয়মিতই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাসায় তাঁকে দেখাশোনার জন্য হাসপাতাল থেকে একাধিক সার্বক্ষণিক নার্স রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাঁকে বাসায় গিয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন।
গত ২৬ এপ্রিল রাতে বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এ টি এম শামসুজ্জামান। সেদিন খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রাত ১১টার দিকে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিৎসকেরা জানান, এ টি এম শামসুজ্জামানের অন্ত্রে প্যাঁচ লেগেছিল। সেখানে আন্ত্রিক প্রতিবন্ধকতা। ফলে খাবার, তরল, পাকস্থলীর অ্যাসিড বা গ্যাস বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং অন্ত্রের ওপর চাপ বেড়ে যায়। যার ফলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হয়।
চিকিৎসা শুরুর কয়েক দিন পর তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। এরপর আবার স্বাভাবিক নিয়মে শ্বাস নিতে পারলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে চার দিন আগে তাঁকে আবার লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। এখন ক্রমেই সুস্থ হচ্ছেন এই শক্তিমান অভিনেতা। তাঁর স্ত্রী রুনি জামান জানান, স্বাভাবিক জ্ঞান আছে তাঁর। কথা বলছেন। স্বাভাবিক খাবার খাচ্ছেন। ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র অঙ্গনের অনেকেই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কেবিনে কুশল বিনিময় করেছেন শামসুজ্জামান।
শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে একুশে পদক দেওয়া হয় তাঁকে।