এই খেলা শেষ খেলা

অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম
অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম

সব শেষ হয়ে যাচ্ছে! এই শেষ আনন্দের নাকি বেদনার—তা এখনো মার্ভেল–ভক্তরা বুঝে উঠতে পারছেন না। আজ রাত পোহালেই অনেক কৌতূহলের অবসান ঘটবে, মুক্তি পাবে অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম। বেশ আগে থেকেই হলিউডের এই ছবি নিয়ে চারদিকে সাজ সাজ রব। যাঁরা সুপারহিরো ছবির ভক্ত নন, তাঁরাও এই ছবির একটি টিকিটের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। জনে জনে জানতে চাইছেন, অগ্রিম টিকিট কেনার লাইন কত দূর ছাড়াল?

অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম নিয়ে কেন এত উত্তেজনা? কেন এত হইহুল্লোড়? এসব জানতে হলে ফিরে যেতে হবে ২০০৮ সালের আয়রনম্যান ছবিতে। এই মহাযজ্ঞের শুরু সেখান থেকেই। এরপর একে একে ২২টি মার্ভেল ছবির ব্যবচ্ছেদ করে তবেই একজন দর্শককে হতে হবে ‘অ্যাভেঞ্জার্স’–এর ব্যাপারে বিশেষভাবে অজ্ঞ। নয়তো এন্ডগেম দেখতে বসে কোয়ান্টাম রিয়াল্ম, গানলেট, ইনফিনিটি স্টোন, স্ন্যাপ—এই সব গোলকধাঁধার কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনি যদি মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সের (এমসিইউ) ভক্ত হন, তাহলে তো এই ব্যাপারগুলো আপনার কাছে ডাল–ভাত। কিন্তু এন্ডগেম দিয়েই যদি শুরু করতে চান আপনার এমসিইউ–যাত্রা, তাহলে আজই শুরু করে দিন ‘হোমওয়ার্ক’। মার্ভেলের নতুন ও পুরোনো দর্শকদের জন্য আমরা এবার দিলাম একটি মার্ভেল সিনেমা গাইড। এই গাইডের সাহায্য নিয়ে পুরোনো ভক্তরা ঝালাই করে নিন প্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজির খুঁটিনাটি ইতিহাস। আর নতুনেরা এই ধারাবাহিকতা মেনে ২২টি ছবি দেখার পর শামিল হয়ে যান মার্ভেল ব্রিগেডে।

বলে রাখি, অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম নিয়ে যেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে, তা কিন্তু সহজে থামছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ছবির অগ্রিম টিকিট বেচা শুরু হয়েছে প্রায় এক মাস আগে। তখনই দর্শকেরা টিকিট কেনার ওয়েবসাইট ফ্যানড্যাংগোতে এমনভাবে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন যে ৬ মিনিটের মধ্যে ওয়েবসাইটটি ক্র্যাশ করে। একই ঘটনা ঘটেছে ভারতেও। সেখানেও এন্ডগেম–এর অগ্রিম টিকিট বেচা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট থমকে যায়। নিমেষেই বিক্রি হয়ে যায় অগ্রিম টিকিট। এভাবেই বিশ্বের নানা দেশ থেকে ছবি মুক্তির আগেই রেকর্ডভাঙার খবর পাওয়া যাচ্ছে। টিকিটের বেলায় ভক্তরাও ক্যাপ্টেন আমেরিকা, থরদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে বলছেন—‘হোয়াটএভার ইট টেকস’ (যেকোনো মূল্যে হোক না কেন); একটা টিকিট চাই! বাংলাদেশেও রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স বেশ চাপের মধ্যে আছে। জানা গেছে, এই ছবি বাংলাদেশে গড়তে যাচ্ছে নতুন রেকর্ড। আগামীকাল থেকে এই একটি ছবির প্রতিদিন প্রায় ২৫টি করে প্রদর্শনী করতে পারে স্টার সিনেপ্লেক্স তাদের দুটি শাখায়, এমনটি জানা গেল মাল্টিপ্লেক্স সূত্রে। বাংলাদেশে এর আগে এক দিনে একটি মাল্টিপ্লেক্সে কোনো ছবির এত প্রদর্শনী হয়নি।

জো রুশো ও অ্যান্থনি রুশো পরিচালিত এই ছবি হতে যাচ্ছে ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম ধাপের শেষ ছবি। অর্থাৎ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এই সিরিজের পথিকৃত অতিমানবেরা—আয়রনম্যান, ক্যাপ্টেন আমেরিকা, থর—এই ছবির পর আর একসঙ্গে ফিরবেন না বড় পর্দায়। এরপর শুরু হবে ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ সিরিজের ‘ফেজ ফোর’। অর্থাৎ মার্ভেলের আরও এক ঝাঁক নতুন অতিমানবদের নিয়ে এগিয়ে যাবে এমসিইউ। এদের মধ্য রয়েছে স্পাইডার–ম্যান, ডক্টর স্ট্রেঞ্জ, ক্যাপ্টেন মার্ভেল ও ব্ল্যাক প্যান্থার। তবে গত ১০ বছরে যেই প্রজন্মের শৈশব, কৈশর কেটেছে আয়রনম্যান, ক্যাপ্টেন আমেরিকা আর থরের বাহাদুরি দেখে, তাঁদের প্রিয় সেই সিনেমাটিক উত্তেজনায় ইতি টানতে হবে এবার। বিদায় জানাতে হবে ‘অ্যাভেঞ্জার’–দের।

আদর রহমান
বিবিসি ও সিনেমা ব্লেন্ড অবলম্বনে

যেভাবে ঢুকতে পারেন মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্সে—

ক্যাপ্টেন আমেরিকা: দ্য ফার্স্ট অ্যাভেঞ্জার (২০১১)

ক্যাপ্টেন মার্ভেল (২০১৯)

আয়রনম্যান (২০০৮)

আয়রনম্যান টু (২০১০)

গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সি (২০১৪)

গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সি টু (২০১৭)

ক্যাপ্টেন আমেরিকা: দ্য উইন্টার সোলজার (২০১৪)

থর: দ্য ডার্ক ওয়ার্ল্ড (২০১৩)

আয়রনম্যান থ্রি (২০১৩)

দ্য অ্যাভেঞ্জার্স (২০১২)

থর (২০১১)

অ্যাভেঞ্জার্স: এজ অব আলট্রন (২০১৫)

অ্যান্ট–ম্যান (২০১৫)

ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার (২০১৬)

ডক্টর স্ট্রেঞ্জ (২০১৬)

অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম (২০১৯)

অ্যান্ট–ম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প (২০১৮)

অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার (২০১৮)

থর: র‌্যাগনারক (২০১৭)