বছরের দুই ঈদকে ঘিরেই দেশের চলচ্চিত্রশিল্প বেশি চাঙা থাকে। ঈদুল ফিতরের এখনো দেড় মাস বাকি। ইতিমধ্যে ঈদকে ঘিরে দেশের বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম চলচ্চিত্রে চাঞ্চল্য শুরু হয়ে গেছে। কারণ চলচ্চিত্রের এই দুর্দিনে বছরের এই দুই ঈদ উত্সবই এখন সিনেমার জন্য বড় ভরসা।
চলচ্চিত্রপাড়ায় কান পাতলেই ঈদের একাধিক ছবির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। একটি সূত্র বলছে, আগামী ঈদে সাতটি ছবি মুক্তি পেতে পারে। এরই মধ্যে চারটি ছবি মুক্তির বিষয় চূড়ান্ত করেছে ছবিগুলোর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। ছবি চারটি হলো শাকিব-বুবলী অভিনীত পাসওয়ার্ড, রোশান-ববি অভিনীত বেপরোয়া, তারিক আনাম খান-স্পর্শিয়া অভিনীত আবার বসন্ত ও নবাগত শান্ত খান-নেহা আমান্তি (কলকাতা) অভিনীত প্রেমচোর। এর মধ্যে প্রেমচোর, বেপরোয়া, আবার বসন্ত ছবি তিনটির শুটিং শেষ হয়েছে এবং সেন্সরও হয়ে গেছে। বেপরোয়া ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রতিনিধি জি এম আবু বক্কর বলেন, ‘বেশ আগেই ছবিটি মুক্তির জন্য প্রস্তুত করেছি। এটি ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে।’
প্রেমচোর ছবির শুটিং শেষ হলেও এখনো সেন্সর বোর্ডে জমা হয়নি। ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার কর্ণধার সেলিম খান বলেন, ‘ছবির প্রযোজনা–পরবর্তী কিছু কাজ বাকি আছে। শেষ করে সেন্সর বোর্ডে জমা দেব। ঈদে মুক্তি চূড়ান্ত।’
শাকিব খান ফিল্মসের পাসওয়ার্ড ছবির সংলাপ অংশের কাজ শেষ হলেও গানের শুটিং বাকি আছে। ছবির প্রযোজক ও নায়ক শাকিব খান বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের জন্য ছবিটি নির্মাণ করছি। কয়েক দিনের মধ্যেই দেশের বাইরে গানের শুটিং করা হবে। আগামী মাসের শেষ দিকে সেন্সর বোর্ডে জমা দিতে পারব।’
আর তিনটি ছবির চূড়ান্ত ঘোষণা আসেনি এখনো। শাকিব খান, নুসরাত ফারিয়া ও নবাগত রোদেলা জান্নাত অভিনীত শাহেনশাহ, মাহিয়া মাহি অভিনীত অবতার ছবিও প্রস্তুত। আর দুই দিন কাজ করলে জয়া আহসান অভিনীত বিউটি সার্কাস ছবির শুটিং পর্ব শেষ হবে। আগামী ঈদে মুক্তি পেতে পারে ছবিগুলো। অবতার ছবির পরিচালক হাসান সিকদার বলেন, ‘ঈদে মুক্তির জন্য ছবিটি প্রস্তুত করছি। দেখা যাক কী হয়।’
এদিকে বর্তমানে সাফটা চুক্তির আওতায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর ছবি উৎসবের সময় আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নীপা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী চিত্র প্রযোজক সেলিনা বেগম গত বছর ঈদুল ফিতরের আগে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। হাইকোর্ট সাফটা চুক্তির আওতায় উৎসবে ছবি আনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে দুই দিন পরই আপিল করেছিলেন প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইখতেখার উদ্দীন নওশাদ। কিন্তু সেখানেও হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। এ কারণে সে সময় সুলতান ও ভাইজান এল রে মুক্তি পায়নি। এখন বাদীপক্ষ মামলা প্রত্যাহার করে নিলে উত্সবে আমদানি করা ছবি মুক্তিতে বাধা থাকবে না। এ বিষয়ে কথা বললে বাদীর ঘনিষ্ঠ একজন বলেন, ‘সিনেমার অভাবে হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের চলচ্চিত্রের স্বার্থে প্রদর্শক সমিতি যদি আমাদের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে, তাহলে উভয় পক্ষের সম্মতিতে ঈদের আগে মামলা প্রত্যাহার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
এক সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদীর এক ব্যবসায়ী অংশীদার এরই মধ্যে তাঁদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের তিনটি ছবি কলকাতায় রপ্তানি করেছেন। বিনিময়ে সেখান থেকে দেব ও জিৎ অভিনীত দুটি ছবি আমদানি করে ঈদে মুক্তির দেওয়ার কথা বলছেন।