কখনো তিনি ‘নীরজা’, কখনোবা ‘ডলি’, আবার কখনো তিনি সঞ্জুর প্রেমিকা। এবার ‘জোয়া’ রূপে তিনি আসতে যাচ্ছেন। দক্ষিণের সুপারস্টার দুলকর সালমানের সঙ্গে সোনম কাপুরকে জোয়া ফ্যাক্টর ছবিতে দেখা যাবে। ছবি মুক্তির আগে মুম্বাইয়ের একটি পাঁচ তারা হোটেলে প্রথম আলোর মুখোমুখি বলিউড সুন্দরী সোনম কাপুর আহুজা।
আপনাকে ইদানীং বিচিত্র সব চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। ছবি নির্বাচনের সময় কোন কোন বিষয়ের ওপর জোর দেন?
সোনম কাপুর: আমি সবার আগে গল্প এবং চিত্রনাট্য দেখি। এরপর আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো কাদের সঙ্গে আমি কাজ করতে চলেছি। আমার পছন্দের টিম না হলে আমি কাজ করি না। কারণ, শুটিংয়ের সময় আমার আশপাশের মানুষ ভালো হওয়া চাই। কাজ করতে যেন আনন্দ পাই। অনেক ভালো ছবিও আমি ছেড়ে দিয়েছি, কারণ আমার টিম পছন্দ হয়নি।
জোয়া ফ্যাক্টর ছবির কোন দিকটা আপনাকে আকর্ষণ করেছে?
সোনম: প্রায় পাঁচ বছর আগে আমি একটা হালকা মেজাজের ছবিতে কাজ করেছি। ছবিটার নাম খুবসুরত। এরপর আমার ছবির বিষয়বস্তু সব সময় কঠিন আর ভাবগম্ভীর। তাই অনেক দিন পর একটু হালকা মেজাজের ছবি করতে ইচ্ছে হলো। ছবির গল্প আমার দারুণ লেগেছে। আর এই ছবির টিমও আমার পছন্দের।
আপনার সাফল্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘ফ্যাক্টর’ কী?
সোনম: পরিশ্রম। পরিশ্রম না করলে সফলতা পাওয়া যায় না। তবে এর পাশাপাশি ভাগ্যও একটা বড় ফ্যাক্টর। তাই আমি মনে করি, পরিশ্রম আর ভাগ্য—এই দুইয়ের সমন্বয়ে সবকিছু হয়।
আপনি নিজে কতটা সংস্কার বা কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন?
সোনম: কমবেশি সবার মধ্যেই কিছু না কিছু কুসংস্কার আছে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। কালো বিড়াল, লেবু, লঙ্কা, শুভ কাজের সময় কালো পোশাক এড়িয়ে যাওয়া—এমন অনেক কিছু আমরা করে থাকি। তবে এটা যখন অতিরিক্ত মাত্রায় হয়ে যায়, তখনই ক্ষতিকর।
জোয়া ফ্যাক্টর ছবির ট্রেলার লঞ্চ অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে আপনার বাবা অনিল কাপুর বিশ্বাস করেন আপনি তাঁর জন্য লাকি। আপনার স্বামী আনন্দ আহুজা আপনাকে কতটা লাকি ভাবেন?
সোনম: হা হা হা। আনন্দের সঙ্গে আপনার কখনো দেখা হলে আপনি বুঝতে পারবেন। আমি আনন্দকে গৌতম বুদ্ধ বলি। ও প্রচণ্ড ধীরস্থির। আর ভীষণই কর্মে বিশ্বাসী। প্রচুর পরিশ্রম করে। কোনো কিছুই ওকে উত্তেজিত করে না। কিছুতেই ওকে রাগানো যায় না। আমি যতই চিৎকার–চেঁচামেচি করি না কেন, ও একদম শান্ত থাকে।
অন্ধবিশ্বাস ছাড়া জোয়া ফ্যাক্টর ছবিতে ক্রিকেটও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অবসরে আপনি ও আনন্দ বসে ক্রিকেট দেখেন?
সোনম: আনন্দ ক্রিকেট খুব একটা দেখে না। ও বাস্কেটবল ভালোবাসে। আনন্দ শুধু বিশ্বকাপ বা ভারত খেললেই ক্রিকেট দেখে। অন্যদিকে আমি ক্রিকেট ভালোবাসি। তবে এখনকার ক্রিকেটের সঙ্গে নিজেকে রিলেট করতে পারি না।
ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নারী ও পুরুষ অভিনেতার পারিশ্রমিকের বৈষম্য নিয়ে আপনি প্রথম আওয়াজ তুলেছিলেন। এখন অনেক অভিনেত্রীর গলায় আপনার সুর শোনা যায়—
সোনম: হ্যাঁ, আমি চার-পাঁচ বছর আগে এই বিষয়ে সরব হয়েছি। এখন অনেকেই এ নিয়ে প্রতিবাদ করছেন। তবে এখনো মেয়েদের চেয়ে ছেলেরা অনেক বেশি পারিশ্রমিক পান। এটা সব ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। মেয়েরা এখনো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে আছি। আমাদের আগে নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র এই সব বৈষম্য দূর করতে হবে। এ জন্য আমাদের সমাজে অনেক বদল আনতে হবে। আমি সব ক্ষেত্রে সমতায় বিশ্বাসী।
ধানুশের পর আবার দক্ষিণ ভারতীয় নায়কের সঙ্গে কাজ করলেন। দুলকরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
সোনম: খুব ভালো। সালমান অভিনেতা হিসেবে দারুণ। আমরা ওকে ভিরে দি ওয়েডিং ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। দক্ষিণ ভারতীয় হয়েও সে খুব ভালো হিন্দি বলতে পারে। ওর উচ্চারণ খুব পরিষ্কার। ইংরেজি তো পারেই। তামিল, তেলেগু, মালায়লি ভাষাও অবলীলায় বলতে পারে। ধানুশ কিন্তু হিন্দিটা বলতে পারত না। তবে সে অভিনেতা হিসেবে দুর্ধর্ষ।
আপনার অভিনীত শেষ ছবি এক লাড়কি কো দেখা তো অ্যায়সা লাগা সে অর্থে চলেনি। ছবি না চললে হতাশ হন?
সোনম: খারাপ তো নিশ্চয় লেগেছিল। ছবিটিকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল। বাবার সঙ্গে প্রথমবার অভিনয় করেছিলাম। চলচ্চিত্রবোদ্ধা, সংবাদকর্মীরা ছবিটার প্রশংসা করেছিলেন। তবে বক্সঅফিসে সেভাবে সাড়া পাইনি। কিন্তু নেটফ্লিক্সে ওঠার পর আবার দারুণ সাড়া পেয়েছি। এই ছবির প্রশংসায় ভরা মেসেজ আজও আমি পাই। আসলে ছবির বিষয়বস্তু অন্য রকম ছিল। বড় বড় শহরের জন্য সেটা প্রাসঙ্গিক। তবে ছোট ছোট শহরে এই ধরনের বিষয়বস্তুর ওপর বানানো ছবি গ্রহণ করা অত সহজ নয়।