>৮ ডিসেম্বর চীনের সানাইয়া শহরে অনুষ্ঠিত মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালেতে অংশ নেন বাংলাদেশের জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী। ওই প্রতিযোগিতায় তিনি সেরা ৩০ জনের মধ্যে ছিলেন। ১০ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন। মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতা ও নিজের পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কথা বললেন শফিক আল মামুন–এর সঙ্গে
এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, হুট করেই ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। আসল ঘটনা কী?
বলেছিলাম। তবে হুট করে তো সব কিছু হয় না। গতবারের মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা আমি দেখেছিলাম। তখনই মনে মনে ভেবেছিলাম কখনো সময়–সুযোগ হলে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেব। যাহোক, এবার এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে ঢাকাই আইএলটিএস শেষ করি। গত আগস্ট মাসে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন করি। সবাই যখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল, আমি তখন দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু ওই সময়ই আমাকে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার অডিশনে ডাকা হয়। এরপর তো অনেকটাই ইতিহাস হয়ে গেলাম।
আপনি হেড টু হেড চ্যালেঞ্জ পর্বে বিজয়ী হয়ে গ্র্যান্ড ফিনালে উঠেছিলেন। বিচারকেরা আপনার কী কী বিষয় দেখে গ্র্যান্ড ফিনালেতে পাঠিয়েছিলেন?
বিচারকেরা কী কী বিষয় দেখে আমাকে গ্র্যান্ড ফিনালেতে পাঠিয়েছেন, সেটা তো বিচারকেরাই বলতে পারবেন। তবে গ্র্যান্ড ফিনালে শেষে পরের দিনের পার্টিতে গতবারের মিস ওয়ার্ল্ড ভারতের মানষী ছিল্লার আমাকে প্রশংসা করে বলেছিলেন যে আমার নাকি সবকিছুতেই স্বাভাবিকতা আছে। সৌন্দর্য, চলাফেরা, কথা বলা, আচার–আচারণ, হাসিখুশি—সবকিছই স্বাভাবিক। আর এই গুণই নাকি গ্র্যান্ড ফিনালেতে যেতে সহযোগিতা করেছে। তাছাড়া ওই বিশ্বসুন্দরী আমার আত্মবিশ্বাসও পছন্দ করেছেন।
এই যে এত এত দেশের সুন্দরীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন, তাঁদের কাছ থেকে কী নিয়ে এসেছেন?
তাঁরা ভালোবাসা দিয়েছেন। সবাই একে অপরের প্রতিযোগী হলেও, একসঙ্গে বোন, বন্ধুর মতো থেকেছি আমরা। একসঙ্গে ১১৮টি দেশ সম্পর্কে জানা সহজ নয়। কিন্তু এই প্রতিযোগিতায় গিয়ে আমি ১১৮টি দেশের মানুষের সঙ্গে মিশতে পেরেছি। তাঁদের আচার–আচরণ, সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানার সুযোগ পেয়েছি। এক জায়গায় বসে এই পাওয়াটাই আমার জন্য বড় ব্যাপার।
আগামী বছর যিনি যাবেন, তাঁর প্রস্তুতি সম্পর্কে কী বলবেন?
প্রতিযোগিতায় যাওয়ার শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হবে। ভালো মন–মানসিকতার একজন মানুষ হতে হবে। সামাজিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মানুষের পাশে থাকার মনোভাব থাকতে হবে।
এখন নিজের জীবনে কী পরিবর্তন দেখছেন?
পরিবারের সবার ছোট আমি। সবার আদরের। আগে তো দেশের মানুষ আমাকে এভাবে চিনতেন না। এখন অনেকেই চেনেন। মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় বিশ্বমঞ্চে প্রতিযোগিতা করেছি। বিষয়টি সবাই ইতিবাচকভাবে দেখছেন। সবার ভালোবাসা পাচ্ছি। সামাজিক কাজ হিসেবে প্রথমে অটিজম নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে অনেকেই সহযোগিতা করতে চাইছেন। এখন আমার দায়িত্ববোধ বেড়েছে। তবে ভাবিওনি, এই বয়সেই আমার কাঁধে এ ধরনের দায়িত্ব আসবে।
ব্যক্তিগতভাবে? নাকি কোনো সংগঠনের ব্যানারে অটিজম নিয়ে কাজ করবেন?
সংগঠনের ব্যানারেই করব। তবে এখনো সংগঠনের নাম ঠিক করিনি। কাজটি আগে। এ কারণে কাজ নিয়েই পরিকল্পনা করছি। কাজগুলো গুছিয়ে এনে তারপর সংগঠনের নাম দেব। এই কাজে দেশের অনেকেই আমাকে সহযোগিতা করতে চাইছেন।