বাড়ি ফিরলে মানুষের যেমন আনন্দ হয়, শারমিন লাকী ডুবে আছেন তেমন এক আনন্দে। শিকড় ছেড়ে অনেক পথ ঘুরে তিনি আবার ফিরেছেন শিকড়ে। কুড়ি বছর পর আবৃত্তির সংগঠন শুরু করেছেন নতুন করে। তাঁদের সংগঠনের নাম ‘তাইরে নাইরে না’। আগামী ৮ ডিসেম্বর নিজেদের প্রথম প্রযোজনা ‘জল বেহুলার দেশ’ মঞ্চস্থ করতে যাচ্ছেন তাঁরা।
অভিনয় ও উপস্থাপনার আগে শারমিন লাকী ছিলেন আবৃত্তির মানুষ। কুড়ি বছর আগে অভিনেতা ও আবৃত্তিকার আসাদুজ্জামান নূরের সংগঠন ‘এই সময়’-এর সদস্য ছিলেন তিনি। পড়াশোনা, কর্মজীবন ও সংসারের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে আবৃত্তিচর্চা থেকে সরে গিয়েছিলেন অনেক দূরে। একসময় অভিনয় ও উপস্থাপনায় এত ব্যস্ত হয়ে পড়েন যে রীতিমতো ভুলতে বসেছিলেন নিজের বাচিকশিল্পী সত্তাকে। তিনি বলেন, ‘অন্য মাধ্যমে কাজ করতে গিয়ে আমি নিজের শিকড়কে ভুলে গিয়েছিলাম। এখন নতুন করে আবৃত্তির টান অনুভব করছি। আবৃত্তির পুরোনো মানুষগুলোকে ফিরে পেয়েছি। তাই আবার নতুন করে শুরু করছি।’
‘তাইরে নাইরে না’ সংগঠনটি মূলত শিশুদের জন্য ও শিশুদের নিয়ে কাজ করবে। আর এ সংগঠন সবার জন্য উন্মুক্ত, চাইলে যেকেউ এখানে কাজ করতে পারবে। এ সংগঠনের প্রথম প্রযোজনা ‘জল বেহুলার দেশ’ নির্দেশনা দিচ্ছেন বাচিকশিল্পী ও লেখক বিপ্লব বালা। গ্রন্থনা করেছেন মনিরুজ্জামান। পুথি, পালা, জারিগান, সারিগানসহ এখনকার সময়ের অনেক কিছুই থাকবে এতে। ঐতিহ্যের নানা বিষয়ে পূর্ণ এ কাব্যনাটক শিশুদের ভালো লাগবে বলে জানান শারমিন লাকী। তিনি ছাড়াও এতে পাঠাভিনয় করবেন মুনিরুজ্জামান, তাপস হাওলাদার, শাহানা সুমি, তিথি, সোমনাথ ও মাসুম। এতে সংগীত পরিচালনা করছেন রিজভি ঋজু এবং শিল্পনির্দেশনা দিচ্ছেন সৌরভ দাস। আগামী ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রযোজনাটি মঞ্চস্থ হবে বনানীর যাত্রাবিরতিতে।
আবৃত্তিতে ফিরে শিশুদের নিয়েই কাজ করছেন কেন? শারমিন লাকী জানান, শিশুদের জন্য তেমন কাজ হয় না এখানে। এ অঞ্চলের সমৃদ্ধ শিশুসাহিত্যগুলো প্রায় বিস্মৃত হতে বসেছে। সেগুলোকে নতুন করে সবার সামনে তুলে আনতেই কাজ করবে তাইরে নাইরে না।’ অভিনয় বা উপস্থাপনায় আর ফিরবেন? লাকী বলেন, ‘আবৃত্তি দিয়ে শুরু করেছিলাম, আবৃত্তি দিয়েই শেষ করতে চাই। “আবৃত্তিকার শারমিন লাকী” কথাটা শুনতেই আমার বেশি ভালো লাগে।’