পরিচালক: পি এ কাজল অভিনয়: শাকিব খান (রানা), মাহী (ডানা), কাবিলা (আবুল), আলীরাজ (হায়দার)
ছবিটি মুক্তি পেয়েছে বেশ আগে। তবে দেখা হলো সম্প্রতি। সেই ছবির গল্প বলি।
ছবির শুরুতেই বিয়ে।
নেমন্তন্ন পাননি বলে মুখ গোমড়া করবেন না! খানিক বাদেই বুঝবেন—এই বিয়ে সেই বিয়ে নয়! এ হলো মামা-ভাগনের বিয়ে-বাণিজ্য। বরযাত্রী সেজে ধুমধাম করে বাড়িতে ঢুকলেও, মাঝরাতে স্বর্ণালংকার থেকে শুরু করে গোয়ালের গরু পর্যন্ত বাগিয়ে নিয়ে চুপিচুপি হাপিশ হয় তারা। মামা চরিত্রে কাবিলার আবির্ভাবে হলজুড়ে যে তুমুল করতালি পড়ল, অন্যমনষ্ক দর্শক তাঁকেই নায়ক ভেবে ভুল করতে পারেন। হলুদ, গোলাপি, বেগুনি—কাবিলার পোশাকের বিচিত্র রঙের মতো তাঁর উপস্থিতিও পুরো ছবিতেই উজ্জ্বল।
চোরের দশ দিন, গেরস্থের এক দিন—মামা কাবিলাও একবার ভাগনেসমেত ধরা পড়ে যান। ব্যস! লাঠিসোটা হাতে ভণ্ড জামাইকে ‘জামাই আদর’ করতে ছাড়ে না বিয়েবাড়ির লোকজন। ভাগ্যক্রমে পালিয়ে বাঁচেন কাবিলা। ভাগনেকে হারিয়ে ফন্দিবাজির নতুন সঙ্গী খোঁজেন তিনি। পোস্টারে ঢালিউডের খান সাহেবের ছবি যাঁদের হল অবধি টেনে এনেছে, তাঁরা এবার নড়েচড়ে বসেন। পর্দায় শাকিব খানের প্রথম উপস্থিতি মনে রাখার মতো। বাংলা ছবিতে আমরা সাধারণত নায়িকাদের পেছনে ষন্ডা গোছের লোকজনকে ছুটতে দেখি। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। একদল ললনা ছোটে শাকিব খানের পেছনে। জানা যায়, এলাকার মেয়েদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ আমাদের নায়ক—রানা। ঘটনাক্রমে মায়ের মাথায় হাত রেখে রানা কথা দেয়, মামা আবুলের (কাবিলা) সব কথা শুনবে সে। বাংলা চলচ্চিত্রের এই ‘বহুল প্রসিদ্ধ প্যাঁচে’ পড়ে আবুলের দুই নম্বরি কাজে সঙ্গী হয় রানা। শুরু হয় মামা-ভাগনের ধান্দাবাজি। রানাকে বিদেশ ফেরত সুমির সঙ্গে বিয়ে দিয়ে বড় দান মারার ফন্দি করে আবুল। পরিকল্পনামতো সুমিকে বাড়িতে নিয়েও আসে। কিন্তু মামা-ভাগনে তখনো জানে না, সুমির বেশে তাদের ঘরে পা রেখেছে ডানা (মাহী)! রানা-ডানার দেখা যখন হয়েই গেছে, আমরাও আজকাল ভালোবাসা কেমন হয়, তা দেখার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলি। খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয় না। দুজনের প্রেম জমে ওঠে।একদিকে ডানার স্বপ্নপূরণ, আরেক দিকে মায়ের কসম—দুইয়ের টানাহেঁচড়ায় গল্প এগিয়ে যায়। দর্শকের জন্য তখনো অনেক চমক বাকি।
বিলেতি মেম আবহের সঙ্গে মাহীর পোশাক বেশ উতরে গেছে। তবে কিছু কিছু দৃশ্যে তাঁর অহেতুক ‘আহা উহু হাহা হিহি’ শ্রুতিকটু শোনায়। শাকিব খান আছেন চিরায়ত ঢঙেই। পুলিশ চরিত্রে মিশা সওদাগর দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন, পর্দায় তাঁর উপস্থিতি অল্প সময়ের জন্য বলে আফসোস থেকে গেল। থ্রম্বোসাইটোপেনিয়ার মতো দুরারোগ্য ব্যাধি কেমন করে দূর্বা ঘাসে সেরে যায়? শাকিব খানের অ্যাপাচি বাইক কীভাবে পরের দৃশ্যে ফেজার হয়ে যায়?—এসব প্রশ্ন করে বসলে আপনি বড়ই বেরসিক! ছবি যদি বিনোদনের জন্যই দেখেন, অত অঙ্ক কষলে চলে?!