অবশেষে মুক্তি পেল ছবিটি! গুণী অভিনেতা ও নির্মাতা মাসুম আজিজ সরকারি অনুদান নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সনাতন গল্প’–এর নির্মাণকাজ শুরু করেছিলেন ২০ বছর আগে। এরপর অনুদান বরাদ্দ ছাড়ের জটিলতা নিয়ে দীর্ঘদিন ছবির কাজ বন্ধ ছিল। চলেছে চিঠি–চালাচালি। কেটে গেছে ২০ বছর। শুরুতে ছবিতে উৎস জামান নামে যে শিশু অভিনয় করেছিল, সে এখন তরুণ। নতুন করে বানানো ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। ছবিটি মুক্তি পেল শুক্রবার।
‘সনাতন গল্প’ চলচ্চিত্র নিয়ে নির্মাতা মাসুম আজিজের সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন তিনি পাবনায় ছিলেন। জানালেন, তাঁর ছবি মুক্তি দেওয়ার জন্য ঢাকার কোনো জুতসই প্রেক্ষাগৃহ পাননি। তাই তিনি পাবনার মধুমিতা নামের একটি হলে ছবিটির মুক্তি দিয়েছেন।
অনেকের ধারণা, সনাতন গল্প এত বছর সেন্সরে আটকে ছিল। পরিচালক বিষয়টি পরিষ্কার করলেন। জানালেন, ১৯৯৬-৯৭ অর্থবছরে সরকারি অনুদান ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছিলেন তিনি। ওই সময়ের নিয়ম অনুযায়ী এর বাইরে ১০ লাখ টাকার এফডিসির সহায়তা পাওয়ার কথা।’ ৯৭ সালের জুলাইয়ে নির্মাতা ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের চুক্তি হয়।
এ বিষয়ে মাসুম আজিজ বলেন, ‘আমি অনুদান বরাদ্দ পাওয়ার পরেই ছবির শুটিং শুরু করেছিলাম। প্রথম কিস্তিতে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পাই তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে। সিনেমাটির ২৫ ভাগ দৃশ্য ধারণের পর প্রশাসনিক ও আর্থিক জটিলতার কারণে শুটিং বন্ধ হয়ে যায়। তখন সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন রওশন জামিল, শমী কায়সার, তৌকীর আহমেদ, নাজমা আনোয়ার, শহিদুল আলম সাচ্চু, ফজলুর রহমান বাবু প্রমুখ। পাবনায় শুটিংও শুরু হয়েছিল। মাঝে অনেক চেষ্টা করেও আর্থিক কারণেই শুটিং করতে পারিনি। আগে যাঁদের নিয়েছিলাম, তাঁদেরও আর রাখতে পারিনি। পুরোনো ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজও বাদ হয়ে যায়।’
মাসুম আজিজ বলেন, ২০১৬ সালে হাতে আসে বাকি বরাদ্দের চেক, অর্থাৎ অবশিষ্ট ৮ লাখ টাকা (’ ৯৭ সালে প্রথম কিস্তিতে ৩ লাখ ২৫ হাজার দেওয়া হয়েছিল। মোট ১১ লাখ ২৫ হাজার টাকা)। এ টাকার ভেতর ছবির শুটিং শেষ করতে হয়। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী এফডিসির সাপোর্ট পাওয়া যায়নি। ২০১৭ সালে এর দৃশ্যধারণের কাজ শেষ হয়। আগের অভিনয়শিল্পীরা এতে আর অভিনয় করেননি। এবার চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন মাসুম আজিজ, সাবিহা জামান, উৎস জামান, জয়রাজ, তুষার মাহমুদ, তাহমীনা কৃতিকা প্রমুখ।
সিনেমার কলাকুশলী প্রসঙ্গে মাসুম আজিজ বলেন, ‘অল্প বাজেটের কারণে ছবিতে তেমন কোনো তারকা রাখতে পারিনি। সবকিছুই নিজেই সামলেছি। অবশেষে ছবিটি হলো এটাই আশার কথা, অবশেষে মুক্তি পেয়েছে ছবিটা। একটাই আফসোস, ঢাকায় ভালো কোনো হলে ছবিটি মুক্তি দিতে পারিনি।’