শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক বিষয় থাকতে পারে না। শিক্ষাব্যবস্থায় যে সাম্প্রদায়িকীকরণ হয়েছে, তা সত্য এবং এ থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছি। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা পড়ে পড়ে শিখুক, সে অনুযায়ী বইগুলো তৈরি করা হয়েছে।’ গতকাল শনিবার গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজনে ‘শিক্ষাব্যবস্থায় সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাকে আনন্দময় করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বীজ বপনের জন্য নতুন কারিকুলাম সাজাচ্ছি। এর জন্য নতুন কারিকুলাম নিয়ে কয়েক বছর ধরে কাজ হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বছর পুরোটাই পাঠ্যসূচির পরিমার্জন করতে থাকব। চাই শিক্ষার্থীরা পড়ে পড়ে শিখুক, সে অনুযায়ী বইগুলো তৈরি করা হয়েছে। ইতিহাস ও বাংলা সাহিত্যকে সাম্প্রদায়িকতামুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি আগামী পাঠ্যসূচিতে। আগামী বছর আরও পরিমার্জন করব।’
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণে দেশের ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন কারিকুলামের একটি পাইলট প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। এর আওতায় এখন অনেক কিছু নতুন যুক্ত হতে যাচ্ছে। আমরা ’৭১–এর মুক্তিযুদ্ধ ও ’৭২–এর চেতনার ভিত্তিতেই নতুন পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করছি।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক সাংবাদিক আবেদ খান, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি শিক্ষবিদ অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, ১৯৭১: গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আলা উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুজিত সরকার এবং নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল।
শাহরিয়ার কবির বলেন, শিক্ষানীতিতে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তক থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী যা কিছু আছে, সব বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দর্শন প্রতিস্থাপন করতে হবে। মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষামাধ্যমে বাঙালির ইতিহাস এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দর্শন পাঠ বাধ্যতামূলক করতে হবে।