জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

গুচ্ছের পক্ষে কথা বলায় সভায় শিক্ষককে নির্যাতনের অভিযোগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে কথা বলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার কাউন্সিলের ৬৫তম সভায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষক ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের। বিশ্ববিদ্যালয় কাউন্সিলের একাধিক সদস্য বলেছেন, গুচ্ছের পক্ষে কথা বলায় তাঁর ওপর কয়েকজন শিক্ষক চড়াও হন। এ সময় তাঁকে কিল-ঘুষি মারা হয়।

শিক্ষক আবদুল কাদেরের অভিযোগ, ‘বিশ্ববিদ্যালয় স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা বিধিসম্মত হয়নি। এই বিষয়ে আমি আমার মত প্রকাশ করতে গেলে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় কেন আলোচনা করিনি জানতে চান।

এর উত্তর দিতে গেলে কয়েকজন শিক্ষক এসে অতর্কিত শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ভাবব।’

শিক্ষক আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘আমরা কি জন্য গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যাব, তা সভার রেজল্যুশনে থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম একাডেমি সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আমরা গুচ্ছে থাকব। এখন ইউজিসি সব বিশ্ববিদ্যালয় একীভূত করে পরীক্ষা নিতে উদ্যোগ নিচ্ছে। তখন আমরা কেন বেরিয়ে যাব। তা জাতিকে জানানোর প্রয়োজন রয়েছে। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে অতর্কিত শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।’

অভিযোগের বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের এক সদস্য নাম না প্রকাশ করার অনুরোধ করে বলেন, যখন গুচ্ছের বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কথা বলছিলেন, এ সময় ভূগোল বিভাগের চেয়ারম্যান কথা থামিয়ে নিজের কথা বলতে চাচ্ছিলেন।

এ সময় সবাই আগে সাধারণ সম্পাদকের কথা শেষ করার জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতে বলেন। কিন্তু তিনি নিজের কথা বলতে চান। পরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তাঁকে নিবৃত্ত করতে দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রথমে এগিয়ে আসেন। পরে আরও কয়েকজন শিক্ষকও আসেন।

বিষয়টি নিয়ে দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পরে অধ্যাপক আবদুল কাদের নিজেও দুঃখপ্রকাশ করেন এবং অন্যরাও দুঃখপ্রকাশ করেন।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক লুৎফর রহমানকে রাতে দুবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ইমদাদুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পক্ষে–বিপক্ষে সবার কথা বলার অধিকার আছে। যা ঘটেছে, তা শিক্ষকদের কাছ থেকে কখনই কাম্য নয় এবং শিক্ষকসুলভ আচরণও নয়। শিক্ষকদের এমন ঘটনা দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।’