সর্বজনীন পেনশন
সর্বজনীন পেনশন

পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী-শিক্ষক নেতাদের বৈঠক ‘ইতিবাচক’

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাইরে রাখাসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষকনেতারা। আজ সোমবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা ‘ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ’ হয়েছে বলে জানিয়েছে উভয় পক্ষ। অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।

ওই বৈঠকে শিক্ষা প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাও যোগ দেন। বৈঠকের শুরুতেই শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে না। তবে এই আলোচনা শিক্ষকদের স্বার্থে এবং শিক্ষার স্বার্থে ফলপ্রসূ হবে বলেন তিনি মনে করেন।

বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি বলেন, বৈঠকে উভয় পক্ষ একমত হয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির বাইরে থাকবে। এখন এর ভিত্তিতে সরকারের কাছে প্রস্তাব যাবে। আর অন্য দুটি দাবির (স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো এবং শিক্ষকদের সুপার গ্রেড) বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হওয়া গেছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

‘তাহলে কি আপনারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছেন’—এমন প্রশ্নের জবাবে আখতারুল ইসলাম বলেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ আছে।

বৈঠকে সূত্রে জানা গেছে, ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাইরে রাখার বিষয়টি একেবারে নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের বিষয়। এ বৈঠক থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব নয়। তবে আলোচনাটি ফলপ্রসূ ও ইতিবাচক হয়েছে।

‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উচ্চতর স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো এবং শিক্ষকদের সুপার গ্রেডে (জ্যেষ্ঠ সচিবদের মতো বেতনকাঠামো) অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সারা দেশে ১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন। দেশে বর্তমানে ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম রয়েছে। তবে কর্মবিরতি চলছে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

এর আগে দাবির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন শিক্ষকেরা। ওই বৈঠকের পর সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় কর্মসূচির বাস্তবায়ন এক বছর পেছানোর কথা জানায় অর্থ মন্ত্রণালয়। বলা হয়, ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে তা কার্যকর হবে। তবে শিক্ষকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশ্য কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলন ঘিরে ১৭ জুলাই থেকে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে।

এ অবস্থায় আজ বিকেলে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষকনেতারা। ওই বৈঠকে সরকারপক্ষে আরও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদ, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার, অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কবিরুল ইজদানী খান ও সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা। অন্যদিকে শিক্ষকনেতাদের পক্ষে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম, মহাসচিব নিজামুল হক ভূঁইয়াসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।