[পূর্ববর্তী লেখার পর]
আগুনের পরশমণি নিয়ে কিছু কথা
শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা ‘আগুনের পরশমণি’ রচনাটি প্রথমে নীরবে ও পরে সরবে পাঠ করো। পড়ার সময় প্রমিত উচ্চারণের বিষয়টি খেয়াল রাখবে। পাঠের কোনো শব্দের অর্থ বুঝতে সমস্যা হলে সেগুলো চিহ্নিত করে রাখবে। লেখাটিতে যেসব নতুন শব্দ খুঁজে পাবে, সেগুলো পাঠ্যবইয়ের ‘শব্দের অর্থ’ অংশ থেকে পড়ে নেবে। ‘শব্দের অর্থ’ অংশে প্রদত্ত শব্দের অর্থের বাইরে আরও কোনো শব্দের অর্থ জানতে তোমরা শিক্ষক ও অভিধানের সাহায্য নিতে পারো।
‘আগুনের পরশমণি’র বিষয়বস্তু
বাঙালির হৃদয়জুড়ে রয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা। তখনকার কথা ও গল্প এখনো আমাদেরকে আলোড়িত করে। মুক্তিযুদ্ধের উত্তেজনা ও আতঙ্কের কথা প্রকাশ পেয়েছে নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ‘আগুনের পরশমণি’ উপন্যাসের মাধ্যমে। তার অংশবিশেষ এখানে আলোচ্য বিষয়।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ দেশের মুক্তিকামী মানুষকে দমিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তান সরকার কারফিউ দিয়ে রাখত। সেদিনও সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ শুরু হওয়ার কথা। তা শুরু হওয়ার ঠিক আগে বদিউল আলম নামক এক যুবক তাঁর ছয়জন সঙ্গীসহ মতিন সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নেন। বাড়িতে তখন শুধু মতিন সাহেব ও তাঁর স্ত্রী সুরমা ছিলেন। দুই মেয়ে রাত্রি ও অপালা তাঁদের ফুফুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। যুবকের চলনবলন ছিল একটু আলাদা ধরনের। প্রয়োজনের বাইরে কথাবার্তা খুব একটা বলতেন না।
রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে যুবকের থাকার ব্যবস্থা করা হলো বিন্তির ছোট ঘরটিতে। ঘরটা কিছুটা নোংরা ছিল। তবে তা থাকার মতো করে পরিষ্কার করে দেওয়া হলো। বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সুরমা যুবকের সঙ্গে খুব একটা কথা না বললেও এবার তাঁকে একটা অনুরোধ করলেন। তিনি যেন পরদিন সকালে তাঁদের বাড়ি ছেড়ে চলে যান। যুদ্ধের সময় মায়ের মনে তাঁর মেয়ে দুটিকে নিয়ে অজানা ভয় ছিল। তাই তিনি বদিউল আলমকে বাড়ি থেকে বিদায় করে বিপদ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু যুবকটি এক সপ্তাহের আগে বিদায় নিতে চাইলেন না। বদিউল আলমের সঙ্গে কথা শেষে সুরমা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। তাঁদের কথোপকথনের ফল অমীমাংসিতই রয়ে গেল।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
[পরবর্তী দিনের লেখা]