একই শব্দের নানা রকম অর্থ জেনে নাও।
একটি শব্দের অনেক অর্থ হতে পারে। বাক্যে প্রয়োগের ওপর শব্দের অর্থ নির্ভর করে। সুকুমার রায়ের লেখা ‘পাকাপাকি’ ছড়ায় ‘পাকা’ শব্দটি নানা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ছড়াটি সুকুমার রায়ের ‘খাই খাই’ নামের ছড়ার বই থেকে নেওয়া হয়েছে। ছড়াটি পড়ার সময় ‘পাকা’ শব্দটি কত ধরনের অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, খেয়াল করবে।
‘পাকাপাকি’ ছড়ার মূলভাব: ভাষা শব্দের খেলাঘর। ‘পাকাপাকি’ ছড়ায় ‘পাকা’ শব্দটির নানা রকম অর্থে ব্যবহার দেখা যায়। ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ফল পাকে। যেমন: বৈশাখ মাসে আম এবং ফাগুন মাসে কুল পাকে। আগুনে পুড়িয়ে আমরা পাকা ইট পাই। রোদ ও পানিতে যে রং বিলীন হয় না, তাই তো পাকা রং। খাবারের শেষে লুচি দই পেলে ভোজন একেবারে পাকা বা পরিতৃপ্তির হয়। লিখতে লিখতে লেখায় পাকা হয়ে ওঠা যায়। বয়স হলে চুল পাকে, যা খুব স্বাভাবিক। দুষ্টু বাচ্চারা বড়দের মতো কথা বলে পাকা ছেলে বলে পরিচিতি পায়।
খিল লাগিয়ে কাঁঠাল ও লেখাপড়া শিখে বুদ্ধি পাকানো যায়। কান বা ফোড়া পাকলে খুব ব্যথা করে। যারা পাকা কথা দেয় না, তারা কাজেও ফাঁকি দেয়। রাঁধুনিরা চুলায় পাক বা রান্না করেন। চোখ পাকিয়ে ভয় দেখানো যায়। হাতে টান টান করে দড়ি পাকিয়ে কাজে লাগানো হয়। কিন্তু হাতে তা দিয়ে গোঁফ পাকানো যায় না। এভাবে ‘পাকা’ শব্দের মাধ্যমে নানা বর্ণনা আমাদের মুগ্ধ করে।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা