ফিচারস অব ডিভাইজর (পর্ব ৫) | গণিত ইশকুল

বছরজুড়ে গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি

49 দিয়ে বিভাজ্যতা: 49=50-1, তাই 49 এর গুণিতকগুলোকে লেখা যায়

49n=(50-1)n = 50n-n আকারে। আর 49 এর গুণিতকগুলোর এই সাধারণ রূপ থেকেই আমরা বিভাজ্যতার নিয়মটা তৈরি করব। এখন 1470 সংখ্যাটির জন্য তাহলে আমরা বলতে পারি, এটা 49 দিয়ে বিভাজ্য হবে যদি 1470 এর চেয়ে বড় 50 এর নিকটতম গুণিতকের সঙ্গে এর পার্থক্য n হয়।

অর্থাৎ 1470=50n-n হয় আরকি! 1470 থেকে বড় নিকটতম 50 এর গুণিতক হলো 1500= 50×30 এখানে, n=30। আবার, 1470=1500-30 বা (50n-n), তাই 1470 সংখ্যাটি অবশ্যই 49 দিয়ে বিভাজ্য হবে। তবে এই নিয়মে মাঝেমধ্যে একটু সমস্যা হয়।

যেমন তুমি যদি n=49 নাও, তাহলে (50n-n)=2401 হচ্ছে, আবার 50n কিন্তু নিজেও 49 দিয়ে বিভাজ্য। এবার n=51 হলে? (50n-n)=50×51-51= 2499 পাবে, যা 49 দিয়ে বিভাজ্য হলেও 2499 থেকে বড় নিকটবর্তী 50 এর গুণিতক হলো 2500, যেখানে n=50, অর্থাৎ আমাদের সূত্রে একটু সমস্যা দেখা দেবে! বড়ই চিন্তার বিষয়, কী করা যায় বলো তো!

n এর দুই রকম মান হতে পারে। যেগুলো 49 এর গুণিতক, সেগুলোর জন্য n=49m লেখা যায় (m যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যা), আর শুধু এ ক্ষেত্রে বিয়োগ করতে হবে 49। আর যেগুলো 49 এর গুণিতক নয়, সে ক্ষেত্রে কী করা যায়? এক কাজ করো, 0 সহ সব ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যাকে 49টা করে ভাগ করে নাও।

যেমন (0-48), (49-97), (98-146)... এভাবে যাতে প্রত্যেক ভাগে 49টা উপাদান থাকে। এখানে একটা প্যাটার্ন আছে। প্রত্যেক ভাগের x তম পদকে (এখানে 0 < x ≤ 48) 49 দিয়ে ভাগ করলে একই ভাগশেষ থাকবে!

এবার যদি তোমাকে প্রশ্ন করা হয়, a সংখ্যাটি 49 দিয়ে বিভাজ্য কি না, তুমি সঙ্গে সঙ্গে a এর থেকে বড় নিকটবর্তী 50 এর গুণিতক 50n থেকে n এর মান বের করবে। n কে 49 দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষকে নাম দাও k। এবার আরও বেশি সঠিক একটা নিয়ম তৈরি করে নাও।

নিয়মটা হতে পারে এমন, ‘কোনো সংখ্যা a কে 49 দিয়ে ভাগ করা যাবে কি না, সেটা দেখার জন্য এটার নিকটবর্তী বৃহৎ 50 এর গুণিতক 50n থেকে n বের করো। এবার (n÷49) করে পাওয়া ভাগশেষ k কে 50n থেকে বিয়োগ করো। যদি 50n-k=a হয়, তাহলেই কেবল a সংখ্যাটি 49 এর গুণিতক হবে।

(এখানে n যদি 49 এর গুণিতক হয়, তাহলে k=49 হবে।)’,
অনেকটা সঠিক হয়েছে নিয়মটা, কিন্তু আমার এখনো মনে হচ্ছে, কোথায় যেন একটা ঝামেলা রয়ে গেছে। এবার কোন ধরনের সংখ্যার জন্য ওপরের নিয়মটা কাজ করবে না, সেটা খুঁজে বের করার দায়িত্ব তোমাদের।

এবার 13,17, 19, 29 এর জন্য একটা করে নিয়ম বলে দেই।

ক) শেষের অঙ্ক কেটে ফেলে: আমাদের আলোচিত ভাজক 13,17, 19, 29-সব কটির নিয়মেই এটা আছে। আর এসব নিয়ম কীভাবে কাজ করে, সেটা আগের পর্বে ব্যাখ্যা করেছিলাম।

13 দিয়ে বিভাজ্যতা: যেকোনো সংখ্যা abcde কে 13 দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যাবে, যদি (abcd+4e) কে 13 দিয়ে নিঃশেষে ভাগ করা যায়। অর্থাৎ শেষ অঙ্ক e বাদে নতুন সংখ্যা abcd এর সঙ্গে 4e যোগ করে প্রাপ্ত যোগফলকে যদি 13 দিয়ে ভাগ করা যায়, তাহলে abcde কেও যাবে। একটা সংখ্যার সঙ্গে যতবার করা হবে, প্রত্যেকবার সংখ্যাটি ছোট হতে থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত না 13 এর কোনো জানা গুণিতক বা কাছাকাছি কিছু আসছে, ততক্ষণ এটা করতেই থাকবে।

17 দিয়ে বিভাজ্যতা: একই পদ্ধতি হওয়ায় বিস্তারিত বলছি না। শুধু নিয়মটা হলো, abcde সংখ্যাটি 17 দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে যদি এবং কেবল যদি (abcd-5e) সংখ্যাটি 17 দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হয়। এটাও একইভাবে বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে বারবার করা যাবে।

19 দিয়ে বিভাজ্যতা: abcde সংখ্যাটি 19 দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে যদি (abcd+2e) সংখ্যাটি 19 দিয়ে বিভাজ্য হয়। প্রতিবারের মতো এবারও এই পদ্ধতি বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে বারবার করা যাবে।

29 দিয়ে বিভাজ্যতা: abcde সংখ্যাটি 29 দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হবে যদি (abcd+3e) সংখ্যাটি 29 দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য হয়। বড় সংখ্যার ক্ষেত্রে বারবার করতে থাকো।

খ) তিনটা করে অঙ্ক নিয়ে গ্রুপে ভাগ করে: 7 দিয়ে বিভাজ্যতা আলোচনা করার সময় এমন একটা নিয়মের কথা বলেছিলাম গত পর্বে। 13 এর জন্যও একই নিয়মেই কাজ হবে। যেকোনো সংখ্যা abcdef অবশ্যই 13 দিয়ে বিভাজ্য হবে, যদি এবং কেবল যদি (def-abc), সংখ্যাটি 13 এর গুণিতক হয়। যদি abcd কিংবা abcde থাকে?

তাহলে তুমি সংখ্যার সামনে প্রয়োজনমতো শূন্য নিতে পারো। অর্থাৎ abcd কে লিখতে পারো 00abcd, যেমন 736658 সংখ্যাটি কি 13 দিয়ে বিভাজ্য? নিজেরাই এবার চেষ্টা করে দেখো।