যতিচিহ্ন:
কথা বলার সময়ে আমরা মাঝেমধ্যে থামি। এই থামার মাধ্যমে কথার অর্থ স্পষ্ট হয়। কথাকে লিখিত রূপ দেওয়ার সময়ে এ থামানো বোঝানার জন্য কিছু সংকেত ব্যবহার করা হয়। এসব সংকেতের নাম যতিচিহ্ন।
যেমন: দাঁড়ি (।), কমা (,), সেমিকোলন (;), প্রশ্নচিহ্ন (?), বিস্ময়চিহ্ন (!), ড্যাশ (-) ইত্যাদি।
থামার পাশাপাশি যতিচিহ্ন কণ্ঠস্বরের ওঠা-নামাকেও নির্দেশ করে।
যেমন: প্রশ্নচিহ্ন (?) ও বিস্ময়চিহ্ন (!)।
যেমন: তুমি উটপাখি দেখেছ? তুমি উটপাখি দেখেছ! এখানে প্রথম বাক্যটি প্রশ্ন বোঝাচ্ছে, পরের বাক্যটি বিস্ময় বোঝাচ্ছে।
কোন যতিচিহ্নের কী কাজ
১. দাঁড়ি (।): বিবৃতিবাচক বা অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের শেষে দাঁড়ি ব্যবহার করা হয়।
যেমন: তারা মাঠে খেলছে। তোমার বইটা আমাকে পড়তে দিও।
২. কমা (,): কমা একধরনের কয়েকটি শব্দ পরপর থাকলে তাদেরকে আলাদা করে এবং বাক্যের বিভিন্ন অংশকে আলাদা করে। যেমন: জ্যৈষ্ঠ মাসে আম, জাম, কাঁঠাল পাকে। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।
৩. সেমিকোলন (;): পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি বাক্যের মাঝে সেমিকোলন বসে। যেমন: ভোর হয়েছে; চলো হাঁটতে যাই।
৪. প্রশ্নচিহ্ন (?): প্রশ্নবাচক বাক্যের শেষে প্রশ্নচিহ্ন ব্যবহার করা হয়। যেমন: তোমার নাম কী?
৫. বিস্ময়চিহ্ন (!): আবেগ শব্দ ও আবেগবাচক বাক্যের শেষে বিস্ময়চিহ্ন বসে। যেমন: বাহ্! সত্যিই তুমি ভালো খেলেছ!
৬. হাইফেন (-): একজোড়া শব্দের মাঝখানে হাইফেন বসে। যেমন: লাল-সবুজের পতাকা উড়ছে।
৭. ড্যাশ (-): ড্যাশ দুটি বাক্যকে এক করে। হাইফেনের চেয়ে ড্যাশ আকারে বড় হয়। যেমন: যদি যেতে চাও, যাও—আমার কিছু বলার নেই।
৮. কোলন (:): উদাহরণ দেওয়ার আগে কোলন বসে। যেমন: বাংলা বর্ণ দুই রকম, যথা: স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ।
৯. উদ্ধারচিহ্ন (‘ ’): বক্তার কথা সরাসরি বোঝাতে উদ্ধারচিহ্ন বসে। যেমন: তিনি বললেন, ‘আমি গতকাল রাতের ট্রেনে ঢাকা এসেছি।’
১০. বিন্দু (.): শব্দ সংক্ষেপ করে লিখতে অনেক সময়ে বিন্দু ব্যবহার করা হয়। যেমন: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একজন ভাষাবিদ ছিলেন। এখানে ড. দিয়ে ‘ডক্টর’ বোঝানো হচ্ছে।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা