বাংলা - সপ্তম শ্রেণি

সপ্তম শ্রেণির পড়াশোনা

তৃতীয় অধ্যায়

যতিচিহ্ন:

কথা বলার সময়ে আমরা মাঝেমধ্যে থামি। এই থামার মাধ্যমে কথার অর্থ স্পষ্ট হয়। কথাকে লিখিত রূপ দেওয়ার সময়ে এ থামানো বোঝানার জন্য কিছু সংকেত ব্যবহার করা হয়। এসব সংকেতের নাম যতিচিহ্ন।

যেমন: দাঁড়ি (।), কমা (,), সেমিকোলন (;), প্রশ্নচিহ্ন (?), বিস্ময়চিহ্ন (!), ড্যাশ (-) ইত্যাদি।

থামার পাশাপাশি যতিচিহ্ন কণ্ঠস্বরের ওঠা-নামাকেও নির্দেশ করে।

যেমন: প্রশ্নচিহ্ন (?) ও বিস্ময়চিহ্ন (!)।

যেমন: তুমি উটপাখি দেখেছ? তুমি উটপাখি দেখেছ! এখানে প্রথম বাক্যটি প্রশ্ন বোঝাচ্ছে, পরের বাক্যটি বিস্ময় বোঝাচ্ছে।

কোন যতিচিহ্নের কী কাজ

১. দাঁড়ি (।): বিবৃতিবাচক বা অনুজ্ঞাবাচক বাক্যের শেষে দাঁড়ি ব্যবহার করা হয়।

যেমন: তারা মাঠে খেলছে। তোমার বইটা আমাকে পড়তে দিও।

২. কমা (,): কমা একধরনের কয়েকটি শব্দ পরপর থাকলে তাদেরকে আলাদা করে এবং বাক্যের বিভিন্ন অংশকে আলাদা করে। যেমন: জ্যৈষ্ঠ মাসে আম, জাম, কাঁঠাল পাকে। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।

৩. সেমিকোলন (;): পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুটি বাক্যের মাঝে সেমিকোলন বসে। যেমন: ভোর হয়েছে; চলো হাঁটতে যাই।

৪. প্রশ্নচিহ্ন (?): প্রশ্নবাচক বাক্যের শেষে প্রশ্নচিহ্ন ব্যবহার করা হয়। যেমন: তোমার নাম কী?

৫. বিস্ময়চিহ্ন (!): আবেগ শব্দ ও আবেগবাচক বাক্যের শেষে বিস্ময়চিহ্ন বসে। যেমন: বাহ্! সত্যিই তুমি ভালো খেলেছ!

৬. হাইফেন (-): একজোড়া শব্দের মাঝখানে হাইফেন বসে। যেমন: লাল-সবুজের পতাকা উড়ছে।

৭. ড্যাশ (-): ড্যাশ দুটি বাক্যকে এক করে। হাইফেনের চেয়ে ড্যাশ আকারে বড় হয়। যেমন: যদি যেতে চাও, যাও—আমার কিছু বলার নেই।

৮. কোলন (:): উদাহরণ দেওয়ার আগে কোলন বসে। যেমন: বাংলা বর্ণ দুই রকম, যথা: স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ।

৯. উদ্ধারচিহ্ন (‘ ’): বক্তার কথা সরাসরি বোঝাতে উদ্ধারচিহ্ন বসে। যেমন: তিনি বললেন, ‘আমি গতকাল রাতের ট্রেনে ঢাকা এসেছি।’

১০. বিন্দু (.): শব্দ সংক্ষেপ করে লিখতে অনেক সময়ে বিন্দু ব্যবহার করা হয়। যেমন: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ একজন ভাষাবিদ ছিলেন। এখানে ড. দিয়ে ‘ডক্টর’ বোঝানো হচ্ছে।

জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা