৫. প্রশ্ন: উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটি সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণ যা ধারণা করেছেন তা বর্ণনা করো।
উত্তর: উয়ারী-বটেশ্বর এলাকাটি সম্পর্কে ঐতিহাসিকগণের ধারণা থেকে আমরা অনেক তথ্য জানতে পারি। ঐতিহাসিকেরা মনে করেন, ব্রহ্মপুত্র নদ হয়ে বঙ্গোপসাগরের মধ্য দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চলত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে সুদূর রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত ‘উয়ারী-বটেশ্বর’ রাজ্যের যোগাযোগ ছিল। উয়ারী-বটেশ্বরের আশপাশে প্রায় পঞ্চাশটি পুরোনো জায়গা পাওয়া গেছে। আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের দুর্গ-প্রাচীর, ইটের স্থাপত্য, মুদ্রা, গয়না, ধাতব বস্তু, অস্ত্র থেকে শুরু করে জীবনধারণের অনেক প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। আর তা থেকে সহজে বোঝা যায়, এখানকার অধিবাসীরা যথেষ্ট সভ্য ছিলেন। এ স্থানের বসতি এলাকাটি সম্ভবত রাজ্যের রাজধানী ছিল।
৬. প্রশ্ন: বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে রচনা লেখো।
উত্তর: ময়নামতি একটি ঐতিহাসিক স্থান। রাজা মানিকচন্দ্রের স্ত্রী ময়নামতির নামানুসারে এই স্থানের নাম রাখা হয় ময়নামতি। এটি বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে উঁচু ভূমিতে অবস্থিত। ১৯৫৫ সালে ময়নামতি এলাকায় আনন্দবিহার আবিষ্কৃত হয়। বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন ও হিন্দুধর্মের বহু নিদর্শন এখানে পাওয়া যায়।
কুমিল্লা শহর থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে কোটবাড়ী এলাকায় ময়নামতি আনন্দবিহার অবস্থিত। বিহারটি নির্মিত হয় অষ্টম শতাব্দীতে।
অষ্টম শতাব্দীর কোনো একসময় প্রথম দেব বংশের তৃতীয় শাসক আনন্দ দেব এটি নির্মাণ করেন।
আনন্দবিহারে বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন ও হিন্দুধর্মের বহু নিদর্শন পাওয়া গেছে। এগুলো সংরক্ষণের জন্য এখানে একটি সুন্দর জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর বাইরের প্রাচীর ও ভেতরে বারান্দার দেয়াল নকশা করা ইট দিয়ে তৈরি। এখানে পাওয়া গেছে অসংখ্য রৌপ্যমুদ্রা, ব্রোঞ্জের মূর্তি, পোড়ামাটির ভাস্কর্য, ফলক, মৃত্পাত্রসহ আরও অনেক কিছু।
আনন্দবিহার বাংলার তথা বিশ্বের প্রাচীন ইতিহাস উপস্থাপন করে। সে জন্য এর গুরুত্ব অনেক। আন্তর্জাতিক ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি ও নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত এই ময়নামতির আনন্দবিহার।
পৃথিবীর প্রতিটি দেশের ইতিহাস নির্ভর করে তার পুরাতন সভ্যতা, পুরাকীর্তি ও নিদর্শনের ওপর। এটি আবিষ্কৃত হওয়ার পর বাংলার প্রাচীন ইতিহাস আরও বেশি সমৃদ্ধ হয়েছে।
খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা