এইচএসসি ২০২৪ পরীক্ষার্থীদের জন্য অধ্যক্ষের পরামর্শ
প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমরা ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে। পরীক্ষাটি হবে ২০২৪ সালের জুন মাসের ২য় সপ্তাহে। এখন থেকে সময় পাবে মাত্র ৬ মাস। তোমাদের প্রস্তুতি কেমন চলছে? যেহেতু সিলেবাসটি বড়, তাই এখন থেকেই তোমাকে পুরোদমে পরিকল্পিতভােব প্রস্তুতি নিতে হবে। এ পরীক্ষায় তোমরা কীভাবে ভালো ফলাফল করবে, তা নিয়ে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হলো। এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অনেক শিক্ষার্থী গণিত ও ইংরেজিতে খারাপ করেছে। সে জন্য তার জিপিএ কমে গেছে। তাই গণিত, ইংরেজি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে সতর্কতার সঙ্গে প্রস্তুতি নিতে হবে।
ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ার সঠিক পরিকল্পনা করা। আর সেই পরিকল্পনাটা কেমন হবে? তোমাকেই ঠিক করে নিতে হবে আর ধীরে ধীরে তা তোমাকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
পড়া ও পরীক্ষাবিষয়ক প্রয়োজনীয় যা কিছু থাকবে, তা পড়ার টেবিলের সামনের সেই বোর্ডে লাগিয়ে রাখবে। যেমন তোমার তৈরি করা পড়ার রুটিন, স্কুলের পরীক্ষার রুটিন, বিভিন্ন বিষয়ের সূত্রগুলো, ভূগোলের মানচিত্র, ছবি, গ্রাফ, খুঁটিনাটি সমস্যার সমাধান, প্রয়োজনীয় তথ্য, তত্ত্ব ইত্যাদি। বোর্ডে সব দরকারি তথ্য তোমার চোখের সামনে থাকলে খুব সহজেই চোখে পড়বে, আর তা আয়ত্তে এসে যাবে।
প্রতিদিন তোমার পড়ার একটা রুটিন থাকতে হবে। তুমি বিজ্ঞান, মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষা যে বিভাগেই পড়ো না কেন, তুমি নিজেই রুটিনটা তৈরি করে নেবে। কোন বিষয়টা আগে পড়বে, কোনটা পরে পড়বে, কোন বিষয়টা কত সময় ধরে পড়বে—তোমার প্রয়োজনমতো সেখানে ঠিক করে নাও।
প্রতিদিন পড়ার সময় তুমি বিভিন্ন বিষয়ে যে যে সমস্যার মুখোমুখি হবে, তা তখনই নোটখাতায় লিখে রাখবে। পরে সেই সমস্যাগুলো কলেজ শিক্ষক বা গৃহশিক্ষক বা বড়দের সহায়তা নিয়ে সমাধান করে নেবে। এতে তোমার প্রস্তুতি অনেক সহজ হয়ে যাবে।
পদার্থ, রসায়ন, অর্থনীতিসহ অনেক বিষয়ে গাণিতিক সমস্যা আছে। এই গণিতভীতি দূর করতে হবে তোমাকে; আর তা দূর করার একমাত্র মন্ত্র হলো অনুশীলন, অনুশীলন আর অনুশীলন। তাই প্রতিদিন গণিত অনুশীলন করলে তা ধীরে ধীরে সহজ হয়ে যাবে। পড়ার রুটিনে অবশ্যই প্রতিদিন একবার এসব বিষয় অনুশীলনের জন্য সময় নির্ধারণ করে নেবে।
তোমার হাতের লেখা কেমন? তুমি নিজেই তা জানো। যদি ভালো হয় তাহলে তো চমৎকার। আর যদি মোটামুটি বা খারাপ হয় তবে আজ থেকেই চেষ্টা করো আগের চেয়ে ভালো করতে। হাতের লেখা ভালো করার জন্য অর্থ লেখা সুন্দর, লেখা পরিষ্কার, কাটাকাটি না করা, লেখার অক্ষর একই সমান হওয়া, লাইন সোজা হওয়া।
তুমি যে বিভাগেরই পরীক্ষার্থী হও না কেন, দুই–তিনটা বিষয়ে কারও না কারও কাছে একটু কঠিন লাগে। এই কঠিন লাগা বিষয় নিয়ে কী করবে? ওই সব বিষয় কি পড়বে? নাকি বাদ দিয়ে রাখবে। নাকি চেষ্টা করে সমস্যা থেকে বের হবে? আমার মতে, চেষ্টা করে এ সমস্যার সমাধান করা উচিত।
প্রতিদিনের পড়া তুমি যদি শেষ করো বা করার চেষ্টা করো, দেখবে পরীক্ষার আগে তোমার কোনো পড়াই বাদ নেই। সব বিষয়ের সব পড়া একসঙ্গে তোমার আয়ত্তে এসে গেছে। তোমার তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না।
প্রতিটি বিষয় মনোযোগসহকারে পড়বে। পড়ার পর কোনো কোনো প্রশ্ন লিখবে। প্রয়োজনে কোনো কোনো প্রশ্নের উত্তর নিজে নিজে লিখবে। এতে তোমার হাতের লেখা চালু থাকবে। আর সমস্যাও ধরা পড়বে। তা সহজেই পরে সংশোধন করে নিতে পারবে।
প্রফেসর মো. আবু মাসুদ, অধ্যক্ষ, ঢাকা কমার্স কলেজ, ঢাকা