সিপিডির নাগরিক সম্মেলন

শিক্ষায় বাণিজ্য বন্ধ করা যায়নি

ফাইল ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে নির্বাচনী ইশতেহারের বেশ কিছু অঙ্গীকার এখনো বাস্তবায়ন করেনি। শিক্ষায় নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা ক্ষেত্রে বাণিজ্য এখনো বন্ধ করা যায়নি। এখনো এ খাতে অনেক সমস্যা রয়েছে। কর্মসংস্থান বাড়লেও মানসম্মত বা শোভন কর্মসংস্থানে এখনো পিছিয়ে আছে। অনেককে ‘অনেক কিছু’ দিয়ে চাকরি পেতে হয়। এভাবে চাকরি পাওয়ার পর সততা নিয়ে চাকরি করা কঠিন। তাই ঘুষ-দুর্নীতি কঠোর হাতে বন্ধ করতে হবে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে আয়োজিত ‘জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার: শিক্ষা, মানসম্মত কর্মসংস্থান, জেন্ডার সমতা’ শীর্ষক নাগরিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন।

দিনব্যাপী সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছাড়াও শিক্ষা, মানসম্মত কর্মসংস্থান ও জেন্ডার সমতা বিষয়ে তিনটি পৃথক অধিবেশন হয়। শিক্ষাবিষয়ক অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সরকারের নানামুখী পদক্ষেপে বিদ্যালয় গমনোপযোগী প্রায় সব শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে আনা গেছে। তবে করোনার কারণে দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশররে ক্লাস বন্ধ থাকায় সবাইকে ধরে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা আছে। অনেকে ঝরে যেতে পারে।

শিক্ষিতরাই বেশি দুর্নীতি করে বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, কোথায় বাণিজ্য নেই? নিয়োগ-বাণিজ্য, কোচিং-বাণিজ্য, ভর্তি-বাণিজ্য কি কমেছে? দুর্নীতি তো কমছে না, শিক্ষিত লোকই তো আছে। মূল্যবোধের বালাই নেই। চর দখল, নদী দখল কি লেখাপড়া না জানা মানুষ করে?

শিক্ষক উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক এম নাজমুল হক বলেন, শিক্ষা খাতে টাকা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু মান কি বেড়েছে? মান বাড়াতে হলে শিক্ষকদের মান বৃদ্ধি করতে হবে।

অধিবেশনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের তুলনামূলক তথ্য তুলে ধরেন সিপিডির রিসার্চ ফেলো মুনতাসির কামাল। তিনি বলেন, শিক্ষার গুণগত উন্নয়নে জনপ্রতিনিধি ও জনগণের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য শিরিন আখতার বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কম মজুরি দিয়ে এখানে কাজ করানো হয়।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী জাতীয় সংসদের ক্যানটিন এবং সাবরেজিস্ট্রি অফিসের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কম মজুরির তথ্য তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্রই তো অশোভন কাজ করছে।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, সিপিডির পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মুহম্মদ শহীদউজ্জামান, উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির খুলনা বিভাগীয় প্রধান শামীমা সুলতানা। অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা সহযোগী রাতিয়া রেহনুমা।