বছরজুড়ে গণিত অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি
⊳⊳ শুরুতেই আমরা মৌলিক সংখ্যার সংজ্ঞাটা বলি। যেসব পূর্ণসংখ্যা এক থেকে বড় এবং এক ও সেই সংখ্যা ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য নয়, সেসব সংখ্যাকে মৌলিক সংখ্যা বলে।
সংজ্ঞা থেকে বুঝা যাচ্ছে 1 মৌলিক সংখ্যা নয়, কারণ সংজ্ঞায় 1 থেকে বড় বিবেচনা করা হয়েছে। কিন্তু কেন 1 থেকে বড় ধরে এ সংজ্ঞা করা হলো এবং কেন 1 মৌলিক সংখ্যা নয়, তা আমরা ব্যাখ্যা করব।
আমরা জানি, 1 থেকে বড় যেকোনো দুটি সংখ্যা গুণ করলে নতুন একটি সংখ্যা পাওয়া যায়। তাহলে ওই দুটি সংখ্যা হবে নতুন সংখ্যাটির উৎপাদক। যেমন-
6 × 4 = 24, তাহলে 6 ও 4 হবে 24 এর উৎপাদক।
আবার, 6 = 2 × 3 এবং 4 = 2 × 2, অর্থাৎ 2 ও 3 হলো 6 এর উৎপাদক এবং 2 হলো 4 এর উৎপাদক।
এখন খেয়াল করলে দেখা যাবে 2 ও 3 কে দুটি পূর্ণসংখ্যার গুণফল আকারে লেখা যাচ্ছে না। তাহলে 2 ও 3 হলো মৌলিক উৎপাদক বা সংখ্যা।
তাহলে একটা বিষয় পরিষ্কার যে দুইটা মৌলিক সংখ্যা গুণ করলে যৌগিক সংখ্যা পাব এবং বিপরীতভাবে যৌগিক সংখ্যাকে ভাঙতে ভাঙতে মৌলিক সংখ্যায় পৌছাব।
এখন মনে করি, 1 যদি মৌলিক সংখ্যা হয়, তাহলে 1 × 1 = 1
অর্থাৎ মৌলিক সংখ্যা × মৌলিক সংখ্যা = মৌলিক সংখ্যা
কিন্তু আমরা দেখেছিলাম দুটি মৌলিক সংখ্যার গুণফল একটি যৌগিক সংখ্যা। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, 1 মৌলিক সংখ্যা হবে না।
আরও একভাবে বিষয়টা ব্যাখ্যা করা যায়।
পাটিগণিতের একটি মৌলিক উপপাদ্য হলো, প্রতিটি পূর্ণ সংখ্যাকে কেবল একভাবেই তার মৌলিক উৎপাদকসমূহের গুণফল আকারে প্রকাশ করা যায়। যেমন-
12 = 2 × 2 × 3
15 = 3 × 5
উদাহরণ থেকে দেখা যাচ্ছে 12 ও 15-কে মৌলিক সংখ্যার গুণফল আকারে প্রকাশ বা উৎপাদকে বিশ্লেষণ একটিমাত্র উপায়েই করা যাচ্ছে। কিন্তু 1 যদি মৌলিক সংখ্যা হয়, তাহলে গুণফল আকারে প্রকাশ বা উৎপাদক বিশ্লেষণ একাধিকভাবে হয়। যেমন-
12 = 2 × 2 × 3 × 1
12 = 2 × 2 × 3 × 1 × 1
12 = 2 × 2 × 3 × 1 × 1 × 1
... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
12 = 2 × 2 × 3 × 1 × 1 … … … × 1
কাজেই দেখা যাচ্ছে 1 মৌলিক সংখ্যা হলে পাটিগণিতের মৌলিক উপপাদ্যটি ভুল প্রমাণিত হতো। তাই 1 কে মৌলিক সংখ্যা থেকে বাদ দেয়া হয় অর্থাৎ 1 মৌলিক সংখ্যা নয়।
⊳⊳ ত্রিকোণমিতিক ফাংশনকে বৃত্তীয় ফাংশন বলা হয়, কারণ ত্রিকোণমিতিক ফাংশনকে দ্বিমাত্রিক তলে আঁকা বৃত্তের সমীকরণ দ্বারা সংজ্ঞায়িত করা যায়।
আমরা জানি, O(0,0) কেন্দ্র এবং একক ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট বৃত্তের সমীকরণ x2 + y2 = 1।
এখন বৃত্তের উপর থাকা কোনো বিন্দু P(x,y) এবং মূলবিন্দু O(0,0)-এর সংযোজক রেখাংশ (ব্যাসার্ধ) x অক্ষের ধনাত্মক দিকের সঙ্গে θ কোণ তৈরি করে। তাহলে আমরা লিখতে পারি, cosθ = x/1 = x এবং sinθ = y/1 = y ।
অন্য ত্রিকোণমিতিক অনুপাতগুলো এই দুটি অনুপাত থেকে লেখা যাবে। যেমন-
tan(θ) = sin(θ)/cos(θ) = y/x
cot(θ) = cos(θ)/sin(θ) = x/y
sec(θ) = 1/cos(θ) = 1/x
cosec(θ) = 1/sin(θ) = 1/y
তাই ত্রিকোণমিতিক ফাংশনকে বৃত্তীয় ফাংশন বলা হয়।