পরীক্ষার দিনে হাতে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হবে

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ : অধ্যক্ষের পরামর্শ

পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ

প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ
প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ

প্রিয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী, গতকাল তোমাদের বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষা ছিল। একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী গতকাল পরীক্ষা দাওনি, যার সংখ্যা ৫ হাজার ৫২২ জন! অনেকে হয়তো বৃষ্টি, জ্যাম, অসুস্থ্যতা ইত্যাদি কারণে পরীক্ষার হলে নির্ধারিত সময়ের আগে যেতেই পারোনি।

তাই পরীক্ষার দিন সকাল সকাল নির্ধারিত সময়ের আগেই পরীক্ষার হলে উপস্থিত হবে। বৃষ্টি, জ্যাম, গাড়ি না পাওয়া, কাদাপানি, অথবা যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়কে মাথায় রেখেই আগেভাগে বাসা থেকে বের হতে হবে।

তোমাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। এই সময়ে যেনো ডেঙ্গু, করোনা কিংবা যক্ষার মতো রোগ না বাধে।  

এখন বিষয়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তরগুলো রিভিশন দেওয়ার সময়। কোনো বিষয়ের কোনো অধ্যায় নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলে এখনই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে অস্পষ্টতা দূর করে নাও।

উত্তর যেহেতু সৃজনশীল পদ্ধতিতে লিখতে হবে, সেহেতু সৃজনশীল পদ্ধতির কোনো দিক অস্পষ্ট থাকলে তা জেনে নিতে হবে। বাসায় সৃজনশীল পদ্ধতিতে উত্তর লেখার অনুশীলন করতে হবে।

পরীক্ষার হলে একটি বিষয় পরীক্ষার্থীকে অনেক সময় ঘাবড়ে দেয়। আর সেটি হচ্ছে প্রশ্ন কমন না পড়া কিংবা কম কমন পড়া নিয়ে। মনে রাখবে, প্রস্তুতি অনেক ভালো হলেও সৃজনশীল পদ্ধতিতে শতভাগ তোমার প্রত্যাশামতো প্রশ্ন না–ও হতে পারে। দু-একটি প্রশ্ন এদিক-ওদিক হতেই পারে। বিকল্প প্রশ্ন থাকায় তেমন কোনো অসুবিধা এতে হবে না আশা করি।

এরপরও যদি কোনো বিষয়ের পরীক্ষা মনের মতো না হয়, তাহলে সে বিষয়ে মন খারাপ না করে পরের পরীক্ষায় ভালো করার চেষ্টা করতে হবে। কারণ, জিপিএ ফাইভ সব বিষয়ে ভালো করার সমষ্টি।

নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত তথা চাঙা রাখার চেষ্টা করতে হবে, পরীক্ষা খারাপ হওয়ার দুঃস্বপ্ন এ সময় প্রায় সব পরীক্ষার্থীকে তাড়া করে। ফলে ভয়কে পাত্তা না দিয়ে মনে করবে তুমিই সবচেয়ে ভালো প্রস্তুতি গ্রহণ করেছ। আর সামনে যে কটি দিন বাকি আছে এবং পরীক্ষা চলাকালীন যে সময় তুমি পাবে, তা তোমার জন্য যথেষ্ট।

অন্যদিকে সময় এখন নিজেকে আরেকটু পরখ করার। এত দিন যে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করেছ, তা তোমাকে কতটুকু আত্মবিশ্বাসী করেছে, সেটি বাস্তবে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করো। এতে অন্তত পরীক্ষাভীতি দূর হবে।

পরীক্ষার আগের দিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হাসিখুশি আলাপচারিতার মাধ্যমে শরীর ও মন চাঙা রাখার চেষ্টা করবে।

বিশ্রামহীন থাকা যাবে না বা ঘুম নষ্ট করা যাবে না। পর্যাপ্ত ঘুমের সময় হাতে রেখে তারপর বাকি সবকিছু।

পরীক্ষার আগমুহূর্তে প্রস্তুতি হবে ঘড়ি ধরে সময়ের মধ্যে লেখা কীভাবে শেষ করতে হয়, সে ব্যাপারে। সবকিছুতেই থিতু (অভ্যস্ত) হতে চাই অনুশীলন। তাই উত্তর সময়মতো শেষ করতে অনুশীলন বা চর্চার কোনো বিকল্প নেই।

যদিও এই চর্চা আগে থেকেই করা উচিত। তা না হলে পরীক্ষার আগমুহূর্তে স্বল্প সময়ের এই চর্চা যথেষ্ট নয়।

তবু যতটা সম্ভব, চেষ্টা করতে হবে। এটাও কাজে আসবে, সে আশা রইল।