নতুন শিক্ষাক্রমের নতুন বই অনুসারে নবম শ্রেণির পড়াশোনা
যোগাযোগের একটি বিশেষ ধরনের মাধ্যম হলো সাহিত৵। সাহিতে৵র মধ্য দিয়ে লেখকের সঙ্গে পাঠকের যোগাযোগ ঘটে। এটি একটি লিখিত যোগাযোগ।
হুমায়ূন আহমেদের (১৯৪৮–২০১২) লেখা ‘আগুনের পরশমণি’ উপন্যাসের অংশবিশেষ তোমার নবম শ্রেণির পাঠ৵বই থেকে ভালো করে পড়ে নেবে। হুমায়ূন আহমেদ বাংলা সাহিতে৵র জনপ্রিয় লেখক। তাঁর উল্লেখযোগ৵ বইয়ের মধে৵ রয়েছে ‘নন্দিত নরকে’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ ইত্যাদি।
শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা ‘আগুনের পরশমণি’ রচনাটি প্রথমে নীরবে ও পরে সরবে পাঠ করো। পড়ার সময় প্রমিত উচ্চারণের বিষয়টি খেয়াল রাখবে। পাঠের কোনো শব্দের অর্থ বুঝতে সমস্যা হলে সেগুলো চিহ্নিত করে রাখবে। লেখাটিতে যেসব নতুন শব্দ খুঁজে পাবে, সেগুলো পাঠ্যবইয়ের ‘শব্দের অর্থ’ অংশ থেকে পড়ে নেবে। ‘শব্দের অর্থ’ অংশে প্রদত্ত শব্দের অর্থের বাইরে আরও কোনো শব্দের অর্থ জানতে তোমরা শিক্ষক ও অভিধানের সাহায্য নিতে পারো।
বাঙালির হৃদয়জুড়ে রয়েছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা। তখনকার কথা ও গল্প এখনো আমাদেরকে আলোড়িত করে। মুক্তিযুদ্ধের উত্তেজনা ও আতঙ্কের কথা প্রকাশ পেয়েছে নন্দিত লেখক হুমায়ূন আহমেদের ‘আগুনের পরশমণি’ উপন্যাসের মাধ্যমে। তার অংশবিশেষ এখানে আলোচ্য বিষয়।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এ দেশের মুক্তিকামী মানুষকে দমিয়ে রাখার জন্য পাকিস্তান সরকার কারফিউ দিয়ে রাখত। সেদিনও সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ শুরু হওয়ার কথা। তা শুরু হওয়ার ঠিক আগে বদিউল আলম নামক এক যুবক তাঁর ছয়জন সঙ্গীসহ মতিন সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নেন। বাড়িতে তখন শুধু মতিন সাহেব ও তাঁর স্ত্রী সুরমা ছিলেন। দুই মেয়ে রাত্রি ও অপালা তাঁদের ফুফুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। যুবকের চলনবলন ছিল একটু আলাদা ধরনের। প্রয়োজনের বাইরে কথাবার্তা খুব একটা বলতেন না।
রাতে খাওয়াদাওয়া শেষে যুবকের থাকার ব্যবস্থা করা হলো বিন্তির ছোট ঘরটিতে। ঘরটা কিছুটা নোংরা ছিল। তবে তা থাকার মতো করে পরিষ্কার করে দেওয়া হলো। বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে সুরমা যুবকের সঙ্গে খুব একটা কথা না বললেও এবার তাঁকে একটা অনুরোধ করলেন। তিনি যেন পরদিন সকালে তাঁদের বাড়ি ছেড়ে চলে যান। যুদ্ধের সময় মায়ের মনে তাঁর মেয়ে দুটিকে নিয়ে অজানা ভয় ছিল। তাই তিনি বদিউল আলমকে বাড়ি থেকে বিদায় করে বিপদ কিছুটা কমানোর চেষ্টা করলেন। কিন্তু যুবকটি এক সপ্তাহের আগে বিদায় নিতে চাইলেন না। বদিউল আলমের সঙ্গে কথা শেষে সুরমা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। তাঁদের কথোপকথনের ফল অমীমাংসিতই রয়ে গেল।
প্রশ্ন: কে দোকান বন্ধ করার জন্য উঠে দাঁড়াল?
উত্তর: ইদ্রিস মিয়া।
প্রশ্ন: কারা মতিন সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নিলেন?
উত্তর: ছয় সঙ্গীসহ বদিউল আলম নামের এক যুবক।
প্রশ্ন: গেটের চাবি কার কাছে থাকে?
উত্তর: সুরমার কাছে।
প্রশ্ন: মতিন সাহেবের দুই মেয়ের নাম কী কী?
উত্তর: রাত্রি ও অপালা।
প্রশ্ন: খাওয়া শেষে মতিন সাহেব কী শুনতে বসলেন?
উত্তর: স্বাধীন বাংলা বেতার।
প্রশ্ন: কার ঘরে বদিউল আলমের শোবার ব্যবস্থা করা হলো?
উত্তর: বিন্তির ঘরে।
প্রশ্ন: বিন্তির ঘরটা কিসের ঘর হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
উত্তর: ভাঁড়ার ঘর।
প্রশ্ন: সুরমা কখন বদিউল আলমকে চলে যেতে বললেন?
উত্তর: পরদিন সকালে।
প্রশ্ন: সুরমার উৎকণ্ঠা কাদেরকে নিয়ে?
উত্তর: তাঁদের মেয়ে দুটিকে নিয়ে।
প্রশ্ন: বদিউল আলম কয়দিন মতিন সাহেবের বাড়িতে থাকতে চাইলেন?
উত্তর: এক সপ্তাহ।
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা