পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাস অনুসারে
সৃজনশীল প্রশ্ন ২
জনাব কাওসার একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজার। ব্যবসায়ের প্রয়োজনে তিনি কর্মীদের যে পরামর্শ দিয়ে থাকেন, তাঁরা তা মানতে বাধ্য থাকেন। জনাব কাওসারের ধারণা, কর্মীদের মতামত দেওয়ার সুযোগ দিলে তাঁরা সুবিধাবাদী হবে। তাই সব সময় কর্মীদের চাপের মুখে রাখেন। তাই কর্মীরা জনাব কাওসারের প্রতি অসন্তুষ্ট ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছেন।
ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক কে?
খ. কর্মী নিয়ন্ত্রণ বলতে কী বোঝায়?
গ. জনাব কাওসারের নেতৃত্ব কোন ধরনের, তা ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জনাব কাওসারের অনুসৃত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য কেমন? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।
উত্তর
ক. আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল।
খ. পরিকল্পনা অনুযায়ী কার্য সম্পাদিত হচ্ছে কি না, তা তদারক করা, ত্রুটি-বিচ্যুতি নির্ণয় এবং প্রয়োজনে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্মীদের দিকনির্দেশনা প্রদান করাই কর্মী নিয়ন্ত্রণ।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মানবিক ও বস্তুগত সব প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং সম্পদ সংগ্রহ ও সমন্বয় করে সেগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করার জন্য কর্মীদের মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতা বণ্টন করা হয়। আর এ দায়িত্ব সঠিকভাবে তাঁরা পালন করছেন কি না, তা তদারক করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যই কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
গ. উদ্দীপকের জনাব কাওসারের নেতৃত্ব স্বৈরতান্ত্রিক।
স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বে নেতা সম্পূর্ণরূপে নিজের ক্ষমতা ও সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করেন এবং কর্মীদের সব সময় চাপের মুখে রেখে কাজ আদায় করেন।
উদ্দীপকে জনাব কাওসার শুধু কর্মীদের আদেশ করেন, জবাবদিহি করেন না। তিনি সম্পূর্ণভাবে নিজের ক্ষমতা ও সামর্থ্যের ওপর নির্ভর করেন। কর্মীদের সামর্থ্যের ওপর আস্থা রাখেন না। কর্মীদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করেন না। কর্মীদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। তিনি সব সময় তাঁদের চাপের মুখে রাখেন। ফলে কর্মীরা অসন্তুষ্ট ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছেন। মূলত স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্বের কারণেই কর্মীরা অসন্তুষ্ট ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছেন।
ঘ. কর্মীদের ওপর প্রভাব বিস্তারের অক্ষমতা তাঁর প্রতিষ্ঠানের উন্নতির প্রধান বাধা।
ব্যবসার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বলতে উদ্দেশ্য অর্জনকে সামনে রেখে কাজ সম্পাদনে কর্মীদের উৎসাহিত করার গুণ ও কৌশলকে বোঝায়। স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
উদ্দীপকে জনাব কাওসার তাঁর প্রতিষ্ঠানে স্বৈরতান্ত্রিক নেতৃত্ব দেন। ফলে দেখা যায়, তিনি সব সময় কর্মীদের চাপের মুখে রাখেন। তাই কর্মীরা জনাব কাওসারের প্রতি অসন্তুষ্ট ও আস্থাহীন হয়ে পড়েছেন। জনাব কাওসার কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা বা তাঁদের পরামর্শ গ্রহণ না করায় কর্মীরা কাজের প্রতি অনীহা প্রকাশ করেন, যার ফলে কর্মীরা প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ভাবতে পারেন না। এতে কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। এ অবস্থায় কোনো প্রতিষ্ঠান উন্নতি লাভ করতে পারে না।
অতএব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, জনাব কাওসারের অনুসৃত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠানের উন্নতির জন্য বিরাট বাধা।
মো. আলতাফ হোসেন, প্রভাষক, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আঃ রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা