‘নোলক’ কবিতাটি পড়ে কী বুঝতে পারলে তা লেখো।
‘নোলক’ কবিতার মূলভাব: নোলক বাঙালি মায়েদের ব্যবহার করা একটি অলংকারের নাম। যুগ যুগ ধরে অলংকারটি আমাদের মায়েরা ব্যবহার করে এসেছেন। এটি শুধু একটি অলংকার নয়, এটি ছিল আমাদের মায়েদের অহংকার ও গর্বের প্রতীক। আস্তে আস্তে নোলক ব্যবহার করার প্রবণতা কমে যাচ্ছে। এতে দেশের ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। সেই আক্ষেপের প্রতিফলন আছে ‘নোলক’ কবিতায়। প্রসঙ্গত যে, এটি একটি রূপক কবিতা।
কবি মায়ের হারিয়ে যাওয়া নোলকটি হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরছেন। দিনরাত এক করে নদী-পাহাড়-বন—সবখানে তিনি চষে বেরিয়েছেন, কিন্তু কেউ তার সন্ধান দিতে পারে না। সবাই যার যার ঐশ্বর্য নিয়ে আনন্দে মাতোয়ারা। উল্টো নোলকের কথা ভুলে যাওয়ার জন্য তারা কবিকে নানা কিছুর প্রলোভন দেখায়। কিন্তু কবির একটাই কথা, ‘আমার মায়ের গয়না ছাড়া ঘরকে যাব না।’
এই কবিতায় কবি আক্ষরিক অর্থের নোলককে খোঁজেননি, খুঁজেছেন দেশের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ও ঐশ্বর্যকে। এককালে আমাদের দেশ তার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ ছিল। এ জন্য সারা বিশ্বে আমাদের আলাদা পরিচয় ও মর্যাদা ছিল। কালক্রমে সেগুলো বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দেশমাতৃকার হারিয়ে যাওয়া মূল্যবোধ খোঁজার এখনই উপযুক্ত সময়। আমাদেরও কবির মতো প্রতিজ্ঞবদ্ধ হতে হবে, ‘আমার মায়ের গয়না ছাড়া ঘরকে যাব না।’
জাহেদ হোসেন, সিনিয়র শিক্ষক, বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা