প্রিয় পরীক্ষার্থী, আশা করি, তোমার প্রস্তুতি ভালো হয়েছে। তোমার প্রস্তুতি কেমন হয়েছে সেটা বুঝতে কিংবা নিজের দুর্বলতাগুলো জানতে ঘরে বসে আত্ম–পরীক্ষণের (সেলফ টেস্ট) ব্যবস্থা করতে হবে। অনুশীলন করতে হবে সময় ধরে নিজেই নিজের পরীক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনার জন্য এসব অনুশীলন কাজে লাগে।
অনেকেই খুব ভালো করে লিখতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় নিয়ে লেখার কারণে শেষে ভালো জানা প্রশ্নোত্তরও তড়িঘড়ি করে লেখার কারণে ভুল হওয়াসহ হাতের লেখা খারাপ তথা অপরিচ্ছন্ন হয়।
অনাকাঙ্ক্ষিত এসব পরিস্থিতি এড়াতে অবশ্যই তোমার সঙ্গে একটি ঘড়ি রাখবে এবং প্রশ্নের মান অনুযায়ী কোন প্রশ্নোত্তরের জন্য কতটা সময় নেবে, তার একটা ছক তুমি ঘরে বসে পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে তৈরি করতে পারবে।
খেয়াল রাখবে, পুরো উত্তর লেখার পর যেন রিভিশনের জন্য হাতে ৫-১০ মিনিট সময় থাকে। বিশেষ করে কোন প্রশ্নের উত্তর লেখার জন্য কতটুকু সময় লাগবে, তা আগে থেকেই নির্ধারণ করে নেবে।
তুমি হয়তো ভাবছ, প্রস্তুতি যত ভালোই হোক, শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার হলে সব ঠিকঠাক থাকবে কি না। আসলে বাস্তবতাই এমন; প্রস্তুতিতে কোনো কমতি নেই, সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, সব প্রশ্নই চেনা, কিন্তু খাতায় যা লিখেছ, তাতে সন্তুষ্ট হতে পারছ না।
এর কারণ অনেক। যেমন, নার্ভাসনেসের কারণে কলম যেন চলেই না। অথবা নিখুঁতভাবে লিখতে গিয়ে সময় ব্যবস্থাপনাটা সঠিক না হওয়ায় শেষের দিকে সময়স্বল্পতার কারণে তাড়াহুড়ায়ও এটা হতে পারে। এমনকি দুশ্চিন্তায় ভালো করে জানা উত্তরটিও তালগোল পাকিয়ে যাওয়ায় প্রত্যাশানুযায়ী ভালো হয় না।
তবে পরীক্ষার আগের দিন থেকে পরীক্ষা পর্যন্ত নিজেকে অন্য কিছুতে ব্যস্ত রাখতে পারলে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকার ফলে ফলাফল অন্য রকম আশা করা যায়। এ জন্য পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হালকা ঘরোয়া খেলা, মজার বই কিংবা হাসির নাটক বা সিনেমায়ও নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করা উচিত।
মূলত এত দিন যে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মধ্য দিয়ে পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করেছ, সে ব্যাপারে সন্তুষ্টি তথা আত্মস্বীকৃতি প্রয়োজন। এটা নিজের আস্থা তথা আত্মবিশ্বাসের জন্য প্রয়োজন। মনে রাখবে, আত্মবিশ্বাস তোমার ভেতরের সৃজনশক্তি প্রকাশ ও প্রমাণে অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
এখন থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তোমাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। যেমন—
মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করা।
নিয়মিত খাওয়াদাওয়া করা এবং খাওয়াদাওয়া হতে হবে পরিমিত।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যেমন ঠিক সময়ে গোসল করা, ৬ ঘণ্টার বেশি না ঘুমানো, তৈলাক্ত খাবার না খাওয়া, বেশি বেশি পানি পান করা।
বইয়ের কোনো অধ্যায় নিয়ে অস্পষ্টতা থাকলে শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তা দূর করা।
তোমাদের যেহেতু সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে, সেহেতু সৃজনশীল পদ্ধতির কোনো বিষয় অস্পষ্ট থাকলে তা জেনে নিতে হবে।
বাসায় সৃজনশীল পদ্ধতিতে উত্তর লেখার অনুশীলন করতে হবে।
তোমাদের প্রথমে বহুনির্বাচনি প্রশ্নের পরীক্ষা হবে। এ পরীক্ষার ক্ষেত্রে বেশ সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। প্রশ্ন কমন পড়া নিয়েই দুশ্চিন্তা সবার। মনে রাখবে, সৃজনশীল পদ্ধতিতে তোমার প্রত্যাশামতো প্রশ্ন না–ও হতে পারে।
দু-একটি প্রশ্ন এদিক-ওদিক হতেই পারে। এতে খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। বিকল্প প্রশ্ন থাকায় তেমন কোনো অসুবিধা হবে না আশা করি। যদি কোনো বিষয়ের পরীক্ষা মনের মতো না হয়, তবে সে বিষয়ে না ভেবে পরের পরীক্ষাটি ভালো করার চেষ্টা করতে হবে।