পছন্দের কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম নগরের সরকারি সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায়। তবে এসব কলেজে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞানে আসন রয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১৮৫টি। কিন্তু এই শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ২৯১ পরীক্ষার্থী। ফলে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে হবে নগরের বেসরকারি কলেজে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের সরকারি কলেজগুলোর দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্য রয়েছে। বোর্ডের ফলাফলেও সব সময় সামনের দিকে থাকে। এসব কারণে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য এই কলেজগুলোর ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। অভিভাবকেরাও সন্তানদের এখানে ভর্তি করাতে চান।
এদিকে নগরের সাত কলেজে বিজ্ঞান শাখায় আসন পাওয়া নিয়ে যেখানে নানা দুশ্চিন্তা, সেখানে এবারও বোর্ডের অধীন নগরের বাইরের কলেজগুলোতে প্রায় ১৫ হাজার আসন খালি থেকে যাবে। কেননা এসব কলেজে মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর তুলনায় মোট আসন অনেক বেশি।
এবার জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলে, ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ। কিন্তু ভালো ফল করেও সেখানে ভর্তি হতে পারবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় আছে তারা।
আগামী শনিবার অনলাইনে ভর্তি আবেদন কার্যক্রম শুরু হবে। চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। একজন ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী আবেদনে সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজের নাম দিতে পারবে। এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে মেধাক্রম তৈরি করা হবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন পাঁচটি জেলা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। এই পাঁচ জেলায় বিজ্ঞান শাখা থেকে পাস করেছে ২৯ হাজার ৯৫৫ জন। তাদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১ হাজার ২৯১ পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী হচ্ছে ৬ হাজার ৭৩ জন।
পাঁচটি জেলার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে চট্টগ্রাম নগরের সাতটি সরকারি কলেজ। কিন্তু কলেজগুলোতে আসন রয়েছে মাত্র ৩ হাজার ১৮৫টি। এর বাইরে আরও একটি সরকারি কলেজ থাকলেও সেটিতে শুধু ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়। এটি সরকারি কমার্স কলেজ।
শিক্ষা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কলেজ, সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ও সরকারি সিটি কলেজে বিজ্ঞানে আসন রযেছে ৬৫০টি করে। সরকারি মহিলা কলেজে ৪৯০টি, বাকলিয়া সরকারি কলেজে ৩৮০টি, চট্টগ্রাম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২৭৫টি, কলেজিয়েট স্কুলে ৯০টি আসন রয়েছে।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের সরকারি কলেজগুলোর দীর্ঘদিনের সুনাম ও ঐতিহ্য রয়েছে। বোর্ডের ফলাফলেও সব সময় সামনের দিকে থাকে। এসব কারণে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য এই কলেজগুলোর ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। অভিভাবকেরাও সন্তানদের এখানে ভর্তি করাতে চান।
বোর্ড কর্মকর্তারা বলেন, এসব কলেজে প্রতিবারই আসনের তুলনায় অনেক বেশি আবেদন জমা পড়ে। তখন একই জিপিএ পেলেও প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম তৈরি করা হয়।
এবার জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া পাঁচ শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলে, ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের প্রথম পছন্দ চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ। কিন্তু ভালো ফল করেও সেখানে ভর্তি হতে পারবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় আছে তারা।
গত সাত বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে ভালো ফল চট্টগ্রাম বোর্ডের। পাসের হার ৯১ দশমিক ১২ শতাংশ। পাস করেছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৫০ পরীক্ষার্থী। বোর্ডের অধীন ৫ জেলার ২৭৭টি কলেজে মোট আসন রয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার। অর্থাৎ সবচেয়ে ভালো ফলের পরও এবার খালি থেকে যাবে ১৪ হাজার ৫৫০টি আসন।
বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মানবিক শাখায় মোট আসন ৬৮ হাজার কিন্তু পাস করেছে ৫৫ হাজার ৭৬৭ জন। আর বিজ্ঞান শাখায় ৩৪ হাজার আসন থাকলেও পাস করেছে ২৯ হাজার ৯৫৫ পরীক্ষার্থী।
তবে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আসনের তুলনায় বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছে। এই শাখায় ৫৭ হাজার আসন থাকলেও পাস করেছে ৫৮ হাজার ৮২৮ জন।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক জাহেদুল হক বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যাতে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত না হয় এবং সবাই যেন কোনো না কোনো একটি কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়, সে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য কলেজগুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আসন বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ জন্য বোর্ডের পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে।