এবারের নোবেলজয়ীরা অর্থ পুরস্কার হিসেবে গত বছরের চেয়ে ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার বেশি পাবেন। অর্থাৎ পুরস্কারের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াল ১ কোটি ক্রোনারে। বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ৯ কোটি টাকা।
এই অর্থ প্রতিটি পুরস্কারের বিজয়ীরা অনুপাত অনুযায়ী ভাগ করে নেবেন। যেমন গতকাল পদার্থবিজ্ঞানে যে তিন বিজ্ঞানী নোবেল পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রজার পেনরোজ পাবেন ৫০ লাখ ক্রোনার। বাকি দুজন ২৫ লাখ করে পাবেন। তাঁরা চাইলে প্রাপ্য অর্থ নিজের কাছে রাখতে পারেন আবার ভালো কাজে দানও করে দিতে পারেন।
এখন প্রশ্ন হলো, এবার কেন পুরস্কারের অর্থ বাড়ানো হলো। নোবেল ফাউন্ডেশনের প্রধান লার্স হেইকেনস্টেন বলেছেন, ‘এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কারণ এখন আমাদের খরচ ও মূলধন আগের চেয়ে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।’ এই একবাক্যে পুরো বক্তব্য অবশ্য পরিষ্কার হয় না। সে জন্য দেখতে হবে পেছনে ফিরে।
নোবেল পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ১৯০১ সালে থেকে। পুরস্কারটি চালু করেন ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেল। তিনি নোবেল পুরস্কারের জন্য ফাউন্ডেশনের কাছে ৩ কোটি ১০ লাখ ক্রোনার রেখে গিয়েছিলেন। বর্তমান মূল্যে পরিমাণটি ১৮০ কোটি ক্রোনার বা ১ হাজার ৭১০ কোটি ৬৫ লাখ টাকার মতো।
শুরুতে নোবেল বিজয়ীদের দেড় লাখ ক্রোনার দেওয়া হতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুরস্কারের পরিমাণে পরিবর্তন এসেছে। ১৯৮১ সালে এসে পরিমাণটি ১০ লাখ ক্রোনারে দাঁড়ায়। এর পরবর্তী সময়ে পুরস্কারের পরিমাণ দ্রুত বাড়ানো হয়।
২০০০ সালে পরিমাণটি দাঁড়ায় ৯০ লাখ ক্রোনার। পরের বছর তা ১ কোটিতে উন্নীত করা হয়। অর্থাৎ এ বছরের সমান। তবে ২০০৮-০৯ সালের দিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব নোবেল ফাউন্ডেশনের বিনিয়োগেও পড়ে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ২০১১ সালে হেইকেনস্টেনকে নোবেল ফাউন্ডেশনে আনা হয়। তিনি সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ছিলেন।
লার্স হেইকেনস্টেন ২০১২ সাল থেকে নোবেলজয়ীদের অর্থ পুরস্কার কমিয়ে ৮০ লাখ ক্রোনার করেন। ২০১৭ সালে তা ১০ লাখ ক্রোনার বাড়ানো হয়। আর এ বছর থেকে সেটি আবার আগের মতো ১ কোটি ক্রোনার করা হচ্ছে।
এ বছরের শেষে নোবেল ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব শেষ করছেন লার্স হেইকেনস্টেন। পরবর্তী সময়ে অর্থ পুরস্কারের পরিমাণ আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। হেইকেনস্টেনের জায়গায় নরওয়ের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিদার হেলগেছেনের আসার কথা আছে।