মাত্র কয়েক ঘণ্টা ফেসবুক বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ এক ধাক্কায় ৬০০ কোটি ডলারের বেশি কমে গেছে। পিছিয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকাতেও।
গতকাল সোমবার রাতে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপসহ ফেসবুকের মালিকানাধীন সব সেবা। প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ক্রমে ক্রমে সেগুলো অনলাইনে আসতে থাকে। টেক জায়ান্টটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক শ্রোফার এমন বিড়ম্বনার জন্য ব্যবহারকারীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
জাকারবার্গ নিজেও এক ফেসবুক পোস্টে ক্ষমা চেয়ে লিখেছেন, ‘ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জার অনলাইনে ফিরে আসছে। এই সমস্যার জন্য দুঃখিত। আমি জানি পছন্দের মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকতে আমাদের সেবার ওপর আপনারা কতটা নির্ভর করেন।’
ইয়াহু ফাইন্যান্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকেই ফেসবুকের শেয়ারের দর ১৫ শতাংশের মতো কম। গতকালের ঘটনায় তা আরও ৪ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গেছে। আর শেয়ারের দর কমায় মার্ক জাকারবার্গের নিট সম্পদের পরিমাণ কমে ১২ হাজার ১৬০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
এদিকে সম্পদের পরিমাণ কমায় ব্লমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচকে জাকারবার্গ এখন মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের পেছনে। আজ সকালের তালিকায় জাকারবার্গ আছেন পাঁচ নম্বরে, এক ধাপ এগিয়ে বিল গেটস রয়েছেন চারে। সূচকটির তথ্য অনুযায়ী, মাত্র কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে জাকারবার্গের সম্পদ ১৪ হাজার কোটি ডলার থেকে এতটা কমে গেল।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ নথির সূত্র ধরে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে শুরু করে প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সেখানে বলা হয়, ফেসবুকের সেবাগুলো ব্যবহারকারীর জন্য ক্ষতিকর জেনেও প্রতিষ্ঠানটি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ইনস্টাগ্রাম কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলের ঘটনায় ফেসবুকের পরোক্ষ মদদ ছিল। এ ব্যাপারগুলো ফেসবুক ভালো করেই জানত।
এই তথ্যগুলো সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করেন ফেসবুকের সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউগেন। গতকাল প্রথমবারের মতো তিনি সামনে আসেন।
প্রতিবেদনগুলোর জবাবে ফেসবুক বলেছে, ফেসবুকের পণ্যগুলো নিয়ে যেসব সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, তা বেশ জটিল। এর পেছনে কেবল প্রযুক্তি একা দায়ী নয়।
ফেসবুকের গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ সিএনএনকে বলেন, ‘আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতভেদের পেছনে নিশ্চয় প্রযুক্তিগত কিংবা কারিগরি ব্যাখ্যা আছে ভেবে লোকে শান্তি পায়।’