ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এখন চাইলে তাঁদের পোস্ট ও নোটস স্থানান্তর করতে পারবেন গুগল ডকুমেন্টস, ব্লগার ও ওয়ার্ডপ্রেস ডটকমের মতো সেবায়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সোমবার এ সুবিধা আনার ঘোষণা দিয়েছে। ফেসবুক জানিয়েছে, তারা এমন একটি পদ্ধতি আনছে, যাতে ব্যবহারকারীরা তাঁদের পোস্ট অন্য ক্ষেত্রে স্থানান্তর করে নিতে পারবেন।
প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেট জানিয়েছে, ফেসবুকের নতুন এ পদক্ষেপের ফলে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য বিষয়ে যে উদ্বেগ রয়েছে, তা কিছুটা কমবে। ফেসবুকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী সেবাগুলোকে দমিয়ে রাখার নানা অভিযোগ রয়েছে।
ফেসবুক বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানগুলোকে দমিয়ে একচেটিয়া ব্যবসা করছে বলে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগ ওঠে। অবশ্য শুধু ফেসবুক নয়, এমন অভিযোগ রয়েছে আমাজন ও গুগলের বিরুদ্ধেও। নিয়ন্ত্রক ও আইনপ্রণেতাদের কাছ থেকে এ তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অ-প্রতিযোগিতা সুলভ আচরণের অভিযোগ তোলা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন ও ৪৮ জন অ্যাটর্নি জেনারেল গত বছর অভিযোগ তুলে ফেডারেল কোর্টে পৃথক মামলাও করে।
অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক অবৈধভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের কিনে নিয়ে প্রতিযোগিতার মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং দুর্বল প্রাইভেসি সুরক্ষা দিয়ে গ্রাহকের ক্ষতি করে। এ ছাড়া ফেসবুকের বিরুদ্ধে তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে তথ্য অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার কঠিন ব্যবস্থা নিয়েও অভিযোগ তোলা হয়। এতে ফেসবুক জোর করে ব্যবহারকারীকে তাদের প্ল্যাটফর্মে ধরে রাখে।
ফেসবুকের প্রাইভেসি অ্যান্ড পলিসি বিভাগের পরিচালক স্টিভ স্যাটারফিল্ড এক ব্লগ পোস্টে বলেছেন, তাঁরা আশা করছেন, ব্যবহারকারীর তথ্য অন্য প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তর করার বিষয়টি সহজ করতে নীতিনির্ধারক, ডেভেলপার ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হবে।
স্যাটারফিল্ড আরও বলেন, ‘আমরা তথ্যের ধরন ও সহযোগীদের সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়াব। তবে এখন সঠিক নিয়মকানুন ছাড়া তথ্য স্থানান্তরের জন্য যে ইকোসিস্টেম তৈরি করব, তা ফলপ্রসূ হবে না।’
পোস্ট ও নোট তথ্য স্থানান্তর করতে ফেসবুক ব্যবহারকারীকে তাঁদের অ্যাকাউন্ট সেটিংসে যেতে হবে। সেখান থেকে ইয়োর ফেসবুক ইনফরমেশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর ট্রান্সফার ইয়োর ইনফরমেশন বিষয়টি পাওয়া যাবে। সেখানে পাসওয়ার্ড দিয়ে ‘চিজ ডেসটিনেশন’ নির্বাচন করতে হবে। এরপর যে প্ল্যাটফর্ম তথ্য স্থানান্তর করার জন্য ব্যবহারকারী ঠিক করে দেবে, সেখানে গিয়ে ‘কনফার্ম ট্রান্সফার’ ঠিক করে দিলে ফেসবুকের তথ্য স্থানান্তর হয়ে যাবে।
ফেসবুক ইতিমধ্যে গুগল ফটোজ, ড্রপবক্স, ব্ল্যাকবেজের মতো সেবাতে ছবি স্থানান্তর করার সুবিধা দেয়। এ ছাড়া ব্যবহারকারী ফেসবুককে যেসব তথ্য দেন, তার কপি চাইলেও ডাউনলোড করে নিতে পারেন।