চীনা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলিবাবা এবং এর প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মার প্রসঙ্গ এলে আরও যে তিনজনের কথা আলোচনায় আসে, তাঁরা হলেন জ্যাং ইং, জিন ইয়ং এবং জেরি ইয়াং। আলিবাবাকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে আসতে তাঁদের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান তো আছেই। জ্যাক মার সঙ্গে এই তিনজনের সম্পর্কে কেমন—চলুন, আজ তা-ই দেখা যাক।
হাংঝ্যু নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় দুজনের পরিচয়। পড়াশোনা শেষে ১৯৮০ সালের দিকে বিয়ে করেন। শুরুতে দুজনেই পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নেন।
এরপর জ্যাক মা যখন আরও ১৭ জন সহপ্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে ১৯৯৯ সালে আলিবাবা চালু করেন, জ্যাং ইং ছিলেন অন্যতম অংশীদার। শক্ত হাতে সামলেছেন প্রতিষ্ঠানের অনেক জটিল কাজ। আলিবাবার যাত্রা শুরু হওয়া পর্যন্ত জ্যাক মা ও পুরো দলকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। আলিবাবা যখন পুরোদমে ব্যবসা শুরু করে, জ্যাং তখন আলিবাবার চীন বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব নেন। পরবর্তী সময়ে সন্তান ও সংসার সামলানোয় মনোযোগ দেওয়ার জন্য ২০০৪ সালে আলিবাবা থেকে পদত্যাগ করেন।
জ্যাং ইং আলিবাবার জন্য কতটা পরিশ্রম করেছেন, তা উপলব্ধি করা যায় জ্যাক মার কথায়, ‘সে বছরগুলোতে জ্যাং ইং তাঁর পুরো সময়টা আলিবাবার কাজে ব্যয় করেছে। নিজেকে সময় দেওয়া দূরের কথা, নিজের বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা করেনি।’
জনপ্রিয় উসিয়া ঔপন্যাসিক জিন ইয়ংকে আইডল মানেন জ্যাক মা। উশিয়া ঔপন্যাসিকদের মধ্যে জিন ইং সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয়। মার্শাল আর্ট ও অস্ত্র চালানোর দক্ষতার ওপর তাঁর লেখা বিভিন্ন উপন্যাসের ভক্ত জ্যাক মা। আলিবাবার মূলমন্ত্রেও সে প্রভাব আছে বলে শোনা যায়।
উশিয়া উপন্যাসগুলোর মধ্যে দ্য স্মাইলিং ও প্রাউড ওয়ান্ডারার জ্যাক মার পছন্দের। একবার এক টকশোতে বলেছিলেন, জিন ইয়ংয়ের উপন্যাসের চরিত্র ফেং কিংয়াং তাঁর বেশ পছন্দের। ফেং কিংয়াংয়ের জটিল সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এবং তাঁর শিষ্য লিং হু চোংকে সেরা পর্যটক হওয়ার শিক্ষা প্রদান বেশ প্রশংসনীয়। জ্যাক মা নিজেও এককালে শিক্ষকতা করতেন। তিনি সব সময় চান তাঁর ছাত্র এবং সহকর্মীরা তাঁকে ছাড়িয়ে আরও সফলতা অর্জন করুক।
জ্যাক মার জীবনে তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন তাঁর বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী ইয়াহু ইনকরপোরেশনের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেরি ইয়াং। জ্যাক মা এবং জেরি পরস্পরকে চেনেন ১৯৯৭ সাল থেকে, যখন জ্যাক মা চীনা প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান সিআইইসিসিতে কাজ করতেন। সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পর ইয়াহুতে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেলেও তিনি যোগ দেননি। এর দুই বছর পরই আলিবাবার যাত্রা শুরু হয়।
এরপর ২০০৫ সালে বিনিয়োগকারীদের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে আবার দেখা হয় দুজনের। সেখানে ১০ মিনিটের আলোচনায় পরবর্তী সময় আলিবাবাতে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে ইয়াহু।
সূত্র: ই–কমার্স স্ট্র্যাটেজি চায়না