কতটুকু সময় কাজ করবেন?

এলন মাস্ক ও জ্যাক ডরসি
ছবি: রয়টার্স

কেউ কেউ সারা দিন কাজে ডুবে থাকায় বিশ্বাসী। আবার কেউ কেউ অল্প সময় কাজ করেই সন্তুষ্ট। প্রযুক্তি বিশ্বে এ দুই ধরনের মানুষই দেখা যায়। টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাক ডরসি যেমন অনেক বেশি সময় ধরে কাজের পক্ষ নন। অন্যদিকে, টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্কের যুক্তি, ঘুম কম, কাজ বেশি করতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জ্যাক ডরসি সম্প্রতি ‘দ্য বোর্ডরুম: আউট অব অফিস পডকাস্ট’ নামের এক অনুষ্ঠানে টেসলার সিইওর কাজের তত্ত্বের সমালোচনা করেন।

জ্যাক ডরসির মতে, টেসলার সিইও এলন মাস্ক সফলতা পাওয়ার জন্য যে দিনে ২০ ঘণ্টা কাজ, চার ঘণ্টা ঘুম, কোনো ছুটির দিন নেই, এমন মন্ত্র দেন, তা সেকেলে ধারণা। এখনকার যুগে এ ধরনের মন্ত্র অকার্যকর।

সফলতার জন্য দৈনিক ২০ ঘণ্টা কাজের রুটিনকে জনপ্রিয় করেছেন এলন মাস্ক। তিনি নিজেও সপ্তাহে ১২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করার জন্য পরিচিতি পেয়েছেন। এ বিষয় কোনো কাজের নয় বলে মনে করেন টুইটারের সিইও।

তিনি বলেন, ‘সাফল্য মানে আমি দিনে ২০ ঘণ্টা কাজ করে মাত্র ৪ ঘণ্টা ঘুমালাম, এটা বাজে অভ্যাস। এটা এলন মাস্ক পালন করে বলে পড়েছি।’

জ্যাক ডরসির মতে, দিনে ২০ ঘণ্টা কাজ করতে থাকলে শারীরিক ও মানসিক সব শক্তি শেষ হয়ে যেতে থাকে। এর বদলে যতটুকু সময় কাজ করা যায়, সেটাকে অর্থপূর্ণ করে তোলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি মিনিটকে অর্থপূর্ণ করে তুলতে হবে। কাজের জন্য নির্দিষ্ট ঘণ্টা বা মিনিট বাড়ানোর চেয়ে অর্থপূর্ণ কাজে সময় ব্যয় করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

জ্যাক ডরসি বলেছেন, তিনি নিজে প্রতিদিন সকালে মেডিটেশন করেন, যা তাঁকে সারা দিন কাজে ক্ষেত্রে সাহায্য করে। এরপর তিনি কফি খেয়ে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে হেঁটে কর্মক্ষেত্রে যান। অফিসে হেঁটে যাওয়ার পথে তিনি পডকাস্ট শোনেন এবং নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন।

ডরসির ভাষ্য, ‘সকালে উঠে আমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে মেডিটেশন করা। এতে আমার মাথা ঠান্ডা থাকে। আমি কিছুটা শরীরচর্চা করি। কিছুটা সময় শেখার চেষ্টা চালাই। আমার দৈনন্দিন বৈঠক শুরুর আগে তিন ঘণ্টা সময় আমি কাজে লাগাতে পারি। আমার কৌশল হচ্ছে দিনের সময়টুকুর সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য মনোযোগ নষ্টকারী সব বিষয়কে দূরে রাখা। আমার মনে হয়, আমি আরও অনেক কিছু করতে পারি এবং সময় সত্যিই ধীর হয়ে যায়। তখন একটা ঘণ্টা তিন ঘণ্টার মতো মনে হয়।’

জ্যাক ডরসি শুধু টুইটারের প্রধান নির্বাহী নন; তিনি স্কয়ারের সিইও ও সহপ্রতিষ্ঠাতা। প্রতিদিন সকালে টুইটারে সময় দেওয়ার পাশাপাশি দিনের শেষভাগে তিনি স্কয়ার ব্যবস্থাপনার জন্য সময় দেন। অফিসের কাজ শেষ করে তিনি বাড়ি ফিরে রাতের খাবার নিজেই রান্না করে খান।