এ বছর কমনওয়েলথ বৃত্তি পেয়েছেন ২৬ বাংলাদেশি। এরা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি, এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরাসহ যুক্তরাজ্যের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ২০২৪ সালে বৃত্তি পেয়েছেন তাঁরা।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে কমনওয়েলথ বৃত্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের জন্য একটি প্রিডিপারচার ব্রিফিং সেশনের আয়োজন করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। গতকাল সোমবার ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বাসভবনে এ ব্রিফিং সেশনের আয়োজন করা হয়। যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে জরুরি তথ্য ও নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অসামান্য এ সাফল্য উদ্যাপন করতেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামের ইতিবাচক প্রভাবগুলোও তুলে ধরা হয়। ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক।
১৯৬০ সালে শুরু হওয়া কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামে এখন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৮৬৭ বাংলাদেশি নাগরিক কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের (সিএসসি) মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে কমনওয়েলথ বৃত্তি বা ফেলোশিপ পেয়েছেন। বর্তমানে ১০৫ বাংলাদেশি কমনওয়েলথ বৃত্তি নিয়ে পড়ছেন। তাঁদের মধ্যে ২০২৩ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন, যাঁদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ প্রায় শেষের দিকে। কমনওয়েলথ বৃত্তির প্রতিটি স্কিম অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। এতে সফলতা অর্জনে প্রার্থীদের অসাধারণ একাডেমিক রেকর্ড থাকতে হয়।
সারাহ কুক তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘এ বছর ২৬ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপপ্রাপ্ত হয়েছেন, যারাঁ বাংলাদেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। এ জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কমনওয়েলথ ও বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের চলমান অঙ্গীকারের প্রতিফলন এ বৃত্তি। বৃত্তিপ্রাপ্ত স্কলারদের অভিনন্দন।’
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন পরিচালক শ্যানন ওয়েস্ট বলেন, যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করা কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক স্বীকৃতি সত্যিই প্রশংসনীয়। এই বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক ধারায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন এবং ফিরে এসে তাঁরা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৮৬৭ জন স্কলার এই সম্মানজনক প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের জীবন ও দেশ গড়ার সুযোগ পেয়েছেন। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারত্বের প্রমাণ এটি।
এ বছরের স্কলাররা বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবেন, যার মধ্যে রয়েছে বিহেভিয়োরাল অ্যান্ড ইকোনমিক সায়েন্স, বায়োলজিক্যাল কেমিস্ট্রি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটেশনাল অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিকস, ডেটা অ্যান্ড ডিসিশন অ্যানালিটিকস, এডুকেশন, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমস, গ্লোবাল হেলথ পলিসি, গ্লোবাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড এপিডেমিওলজি, হেলথকেয়ার ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রাইটস, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ল এবং হিউম্যান রাইটস, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স ল, ম্যানেজমেন্ট, মেডিকেল স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড হেলথ ডেটা সায়েন্স, মিউজিয়াম স্টাডিজ, পাবলিক হেলথ, পাবলিক পলিসি, সাসটেইনেবল অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি ও টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল।
অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ ও নেটওয়ার্ক গড়ার সুযোগ পান, যা যুক্তরাজ্যে তাঁদের একাডেমিক ও ব্যক্তিগত সাফল্যে অবদান রাখবে।