যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের অর্থায়নে বাংলাদেশসহ চার দেশের তরুণ উদ্যোক্তা ও উদ্যোক্তা উন্নয়নে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের জন্য প্রতিবছর প্রো-ফেলোস কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। ফেলোশিপের ২০২৪ সালের জন্য আবেদনপত্র গ্রহণ চলছে। ২৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসার প্রতিষ্ঠাতা, ব্যবসার উদ্যোক্তা, স্টার্টআপের প্রতিষ্ঠাতা ও উদ্যোক্তারা এ ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ফেলোশিপে নির্বাচিত ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ওকলাহোমার মাধ্যমে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তারা আবেদনের সুযোগ পাবেন।
ফেলোশিপপ্রাপ্ত তরুণ গবেষক ও লেখক আশা জাহিদ বলেন, ‘এ ধরনের ফেলোশিপের মাধ্যমে বৈশ্বিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ আছে। বাংলাদেশে বসে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের অনেক সম্ভাবনা আছে। যাঁরা বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে উদ্যোক্তা হচ্ছেন, তাঁদের জন্য এই ফেলোশিপ ভীষণ কার্যকর হতে পারে। কয়েক সপ্তাহের এই ফেলোশিপের শিক্ষা যেকোনো তরুণ উদ্যোক্তার জন্য দারুণ এক ভবিষ্যৎ তৈরিতে সহায়তা করে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
ফেলোশিপের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমায় চার সপ্তাহের জন্য পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পরে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের সুযোগ মিলবে। ফেলোশিপে অর্থায়ন করছে মার্কিন সরকার। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংস্থা (সিইডি) ফেলোশিপের সহযোগী ব্যবস্থাপনার কাজ করছে। আমেরিকান সেন্টার ঢাকার সহায়তায় আবেদনকারী নির্বাচন করা হবে। আবেদন করতে হবে ১৫ মে ২০২৪-এর মধ্যে।
অংশগ্রহণকারীর বয়স ২৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে;
বাংলাদেশে স্টার্টআপ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উদ্যোগ–সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকতে হবে;
দেশের নানা প্রান্তে যাঁরা বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসা বা উদ্যোগ প্রতিষ্ঠা করেছেন, কাজের অভিজ্ঞতা আছে, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন;
ইংরেজি ভাষার দক্ষতা ও কম্পিউটার জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
ফেলোশিপের প্রার্থী নির্বাচনে বেশ কিছু বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শামীম ই হক বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখে এ ফেলোশিপের বিভিন্ন বিষয়কে ডিজাইন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও হাতে–কলমে শেখার সুযোগ থাকে উদ্যোক্তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিশেষায়িত এই ফেলোশিপে পেশাদার তরুণদের নির্বাচন করা হয়। সেসব তরুণ, যাঁরা নিজের কাজের ক্ষেত্রে ও দেশে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রাখেন, স্বাধীনভাবে নানা সমস্যা সমাধানে কাজ করেন, তাঁদের প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকে। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তরুণদের সাংস্কৃতিক যোগাযোগের দক্ষতা ও ভিন্নমাত্রিক পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে সব সময় গুরুত্ব দেওয়া হয়। দেশের নানা প্রান্তে যাঁরা নিজের এলাকার উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত আছেন, তাঁরাও এগিয়ে থাকবেন। নির্বাচিত ফেলোরা যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ ও স্থানীয় ব্যবসায় যুক্ত আছেন, এমন ব্যক্তিদের নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান।
আবেদনে যা যুক্ত করতে হবে—
অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় শর্ত ও অন্যান্য নিয়মকানুন ভালো করে পড়ে নিতে হবে;
এক পাতার মধ্যে নিজের আগ্রহের কথা লিখতে হবে;
দুই পাতার জীবনবৃত্তান্ত আবেদনে যুক্ত করতে হবে;
বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ থাকতে হবে;
ইংরেজিতে লেখা দুটি সুপারিশপত্র (লেটার অব রিকমেন্ডেশন) যুক্ত করতে হবে। এ পত্রে প্রার্থীর দক্ষতা সম্পর্কে সুপারিশকারী ব্যক্তিরা লিখবেন। যেমন প্রার্থী কোন ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা দেখিয়েছেন, কীভাবে সমস্যা সমাধান করেন, সামাজিক বিভিন্ন বিষয়কে কীভাবে মূল্যায়ন করেন ইত্যাদি।
আবেদনের সময় যা যা খেয়াল রাখতে হবে—
ফেলোশিপে আবেদনের সময় নিজের সম্পর্কে সব তথ্য স্পষ্ট করে লিখুন। আগ্রহপত্রে ফেলোশিপের মাধ্যমে আপনার কাজ ও জীবনে পরিবর্তন কেন আসবে, সেই পরিপ্রেক্ষিত লিখতে হবে। নিজের কথা সাবলীল ভাষায় লিখুন। অনলাইন বা চ্যাটজিপিটির মাধ্যমে লেখা অনুকরণ করে জমা দেবেন না।