কারিগরি শিক্ষা বোর্ড
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড

সনদ–বাণিজ্যের অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তার: কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি

সনদ-বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেপ্তারের পর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি দিয়ে তাঁকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গতকাল রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণায়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। এমন একটি সিদ্ধান্ত হতে যাচ্ছে, তা গতকাল রাতেই জানা গিয়েছিল।

এদিকে পৃথক আরেকটি প্রজ্ঞাপনে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (আইটিসি) অধ্যাপক মো. মামুন-উল হককে নিজ দপ্তরের পাশাপাশি চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত গতকাল রোববার এ আদেশ দেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে সনদ বিক্রির অভিযোগে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এই সূত্রমতে, শেহেলা পারভীন স্বীকার করেছেন যে কুষ্টিয়ার গড়াই পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি তাঁকে তিন লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। আর এই টাকা তাঁর কাছে পৌঁছে দিয়েছেন জাল সনদ প্রিন্ট ও বিক্রির অভিযোগে আটক হওয়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামান। তবে শেহেলা পারভীনের দাবি, এটা ঘুষ নয়। এই টাকা তিনি ‘ধার’ নিয়েছেন।

ডিবি সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে শেহেলা পারভীনের বিরুদ্ধে শামসুজ্জামানের সঙ্গে টাকাপয়সা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। একই মামলায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামান, সাবেক কর্মচারী ও বর্তমানে শামসুজ্জামানের সনদ তৈরির নিজস্ব কারখানায় নিয়োজিত কম্পিউটারম্যান ফয়সাল হোসেন, গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রিমান্ডে আছেন।

ওই সূত্র জানায়, আসামি শামসুজ্জামান শেহেলা পারভীনকে একাধিকবার টাকা দেওয়ার স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ ছাড়া সনদ বিক্রির আয়ের টাকার ভাগ পেয়েছেন অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাংবাদিক, দুদকের কর্মকর্তা, কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালক সবাই।