নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষকদের দক্ষ ও অভিজ্ঞ করে তুলতে মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সারা দেশের ৪ লাখ ২০ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ৪০৬ কোটি ৯২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ব্যয়ে দুই ধাপে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আগামীকাল সোমবার (৯ অক্টোবর) জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। একই মাসে দেশের সব উপজেলায় প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ হবে। তাঁরাই পরবর্তী সময়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করবেন।
আগামী ১ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে শেষ হবে ৭ ডিসেম্বর। এরপর দ্বিতীয় ধাপে ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই প্রশিক্ষণ।
জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যবই বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (পাঠ্যক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বাসসকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পরিবর্তনগুলো বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সারা দেশে একযোগে সব উপজেলা ও থানার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ৪ লাখ ২০ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক সাত দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ নেবেন। তিনি বলেন, সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) আওতায় ডেসিমিনেশন অব নিউ কারিকুলাম স্কিমের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চলবে।
গত বছরে মাঝামাঝিতে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুমোদন দেয় সরকার। এনসিটিবি থেকে জানানো হয়, মাধ্যমিক স্তরে ৬৪ জেলায় প্রতি বিষয়ে তিনজন করে মূল প্রশিক্ষক বা মাস্টার ট্রেইনার তৈরি করা হবে। তাঁরা প্রতিটি উপজেলায় প্রতি বিষয়ে তিনজন করে শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেবেন।
মো. মশিউজ্জামান বলেন, এবার শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সময় প্রায় দুই বছর গবেষণাই করা হয়েছে। শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করার জন্য এবং কী কী ও কেন পরিবর্তন করা দরকার, সেসব বিষয়ে জানার ও বোঝার জন্য এ ধরনের গবেষণার প্রয়োজন ছিল। নতুন শিক্ষাক্রমের সঠিক সুফল পেতে এবং এর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। একটি অভিন্ন শিক্ষাক্রম রূপরেখার আওতায় এবারই প্রথম শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করা হচ্ছে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত। তিনি বলেন, দেশের ৬৪ জেলাকে ৩৬টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ক্লাস্টারের ১১টি বিষয়ের জন্য (সবার জন্য ১০টি বিষয় ও হিন্দু ধর্ম ও ইসলাম ধর্ম মিলিয়ে ১১টি বিষয়), বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল ও প্রযুক্তি, শিল্প ও সংস্কৃতি—এ নয়টি বিষয় সবার জন্য কমন এবং ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টধর্মসহ মোট ১০টি শিক্ষার্থীদের আর শিক্ষকদের ক্ষেত্রে ৪টি ধর্মসহ মোট ১৩টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ হবে।