প্রায় তিন দশক ধরে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সূচনা ও বিকাশ। বর্তমানে শতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতেও অবদান রেখে চলেছে। এ নিয়ে শিক্ষা সংলাপে অংশ নিয়েছেন সুধীজনেরা।
বঙ্গবন্ধু শিক্ষায় বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন, যদিও সে সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। তিনি চাইতেন অর্থাভাবে কারও মেধা যেন নষ্ট না হয়। এ জন্যই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছে। আমাদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় দুই সেমিস্টার পদ্ধতিতে চলে গেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালে বলেছি, দুই সেমিস্টার নয়, তিন সেমিস্টারই থাকবে। বিদেশে যে রকম তিন সেমিস্টারে চলে, এখানেও সে রকম করার কথা বলেছিলাম। পরে যাঁরা এটি করেছেন, নানান কারণে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা যদি এক থাকি, তাহলে সবকিছু ভালোভাবেই চলবে।
আলোচনায় জার্নাল প্রকাশের সুপারিশ এসেছে। আমরা এর সঙ্গে একমত এবং এটি গ্রহণ করছি। তিন সেমিস্টার পদ্ধতি চলবে, দুই সেমিস্টার পদ্ধতি নয়। আমাদের এক থাকতে হবে। এ জায়গায় আমাদের দুর্বলতা আছে। এটি না কাটাতে পারলে আমাদের এর পরিণাম ভোগ করতে হবে। ইউজিসির খণ্ডকালীন মেম্বারদের মধ্যে তিনজন উপাচার্য ও তিনজন ডিন থাকেন। এর মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নেই। এখানে আমাদের অন্তত দুজন সদস্য থাকলেও আমাদের কথাগুলো তুলে ধরতে পারতাম।
কোনো এক অনুষ্ঠানের শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেছিলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পিএইচডি করতে দেওয়া হচ্ছে না! যার যোগ্যতা আছে, তাকে দেওয়া উচিত। পরে শিক্ষামন্ত্রীও একই বক্তব্য দিলেন। এর অর্থ হচ্ছে আমাদের মধ্যে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার রাখতে হবে। আমরা দিন দিন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও একদিন পিএইচডি ডিগ্রি দেবে বলে আমি আশাবাদী। সে সময় খুব বেশি দূরে নয়।
ইউজিসির চেয়ারম্যান হয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন করেছিলাম। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে অর্থনীতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিরাট অবদান রাখছে। শিক্ষাক্ষেত্রে তো ভূমিকা রাখছেই। এ ছাড়া আধুনিক গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বড় ভূমিকা রাখছে। তবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কতটা ভূমিকা রাখছে, সেটি নিয়ে ভাবা যায়।
এত অসুবিধার মধ্যেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করে যাচ্ছে। আর সেটি আসে গবেষণা ও প্রকাশনার মধ্য দিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বড় বড় আন্তর্জাতিক তহবিল আনতে পেরেছি এবং প্রকাশনা করতে পেরেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী ১০ শতাংশ জমা করতে হতো। কেউ করেছে বলে মনে হয় না। তবে বুয়েটে এটা করতেই হতো। বর্তমানে ১০৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে অনেক উদ্যোক্তা রয়েছেন। তাঁরা তো বিরাট অবদান রেখেছেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনারা যাঁরা আছেন, আপনারা সবাই মিলে অন্তত একটি জার্নাল করেন। সায়েন্স, সোশ্যাল সায়েন্স, লিবারেল আর্টস ও ফাইন আর্টস—পারলে চারটি করুন। সম্ভব না হলে অন্তত একটি করুন। এখানে শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা প্রকাশনা করবেন। এটা এমনভাবে করবেন, যাতে ব্র্যান্ডিং হয়ে যায়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারের পক্ষ থেকে জমি দিয়ে সাহায্য করা উচিত। না হলে বিশেষ দামে জমি দেওয়া উচিত। শুরুতে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পর্যায়ে আনতে ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকার প্রয়োজন পড়ে। এই টাকা কোথা থেকে আসবে? এখন কারখানা করতে, হাসপাতাল করতে অর্থ দেওয়া হয়। তা হলে বিশ্ববিদ্যালয় করার ক্ষেত্রে কেন দেবে না?
কয়েক দশক ধরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের সুযোগ বাড়িয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষায় বৈচিত্র্য এনেছে। বিদেশি শিক্ষার্থীদেরও আকৃষ্ট করছে। বৈদেশিক মুদ্রা আসছে, অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
ইউজিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এদের মধ্যে ১৬ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী। তুলনামূলকভাবে এ সংখ্যা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি। গত তিন দশকে উল্লেখযোগ্য হারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হচ্ছে। ইউজিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। এর মধ্যে শিক্ষক রয়েছেন ১৫ হাজার। ৭৭ শতাংশ শিক্ষক পূর্ণকালীন দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার পরিবর্তে এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। ফলে মেধা পাচারও কমেছে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গড় বয়স ১৫ থেকে ১৬ বছরের বেশি নয়। এই স্বল্প সময়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অর্থনীতি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছে।
অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি দিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকার পরও পিএইচডি দিতে পারছি না। এটি কোনোভাবেই মানা যায় না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার একজন সহকর্মী আছেন, যিনি ২০ বছর আগে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। এখন তিনি সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য। সুতরাং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়ে আর কোনো কথা বলার প্রয়োজন আছে?
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান এখন বিতর্কের ঊর্ধ্বে। মার্কেট ইকোনমিতে হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, এমআইটি, প্রিন্সটন, কিংবা কেমব্রিজের মতো বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯২ শতাংশই বেসরকারি খাতের আওতাধীন।
আলোচনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে মান, দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা, কোলাবরেশন, ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে লিংকআপ করার পরামর্শ এসেছে। অংশীদারত্বের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ২০২০ বা ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বাজেট ৯২০ থেকে ৯২২ কোটি টাকা ছিল। এই বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। আর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০ সালে গবেষণায় বরাদ্দ ছিল ৫০ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সরকারকে বলব আমাদের প্রতি একটু সদয় হতে।
উন্নয়ন ও উচ্চশিক্ষার অগ্রযাত্রায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অস্বীকার করার সুযোগ নেই। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন সীমিত। সেখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিসিএস পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করার প্রবণতা থাকে বেশি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাস করেই কোনো না কোনো কাজে প্রবেশ করে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দক্ষতানির্ভর শিক্ষা দিচ্ছে। মেগা প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে লোক নিয়োগ দিতে হয়। আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষ ও মানবিক করে গড়ে তুলতে হবে। স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ‘এথিকস অ্যান্ড অ্যাসথেটিকস’ নামে একটি কোর্স করানো হয়। এর মধ্য দিয়ে নৈতিক ও মানবিক শিক্ষার্থী হওয়ার শিক্ষা দেওয়া হয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষতাভিত্তিক কিছু সান্ধ্য কোর্স চালু আছে। সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় না কিংবা চেষ্টা করে না, এই বিষয়ের সঙ্গে আমি একমত নই। আমার পরিচিত অনেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। ২০২২ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছে ৮ লাখ ১৭ হাজার ২৩০ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে জিপিএ–৫ পেয়েছে ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। সে হিসাবে আমাদের দেশে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা কম। পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬০ থেকে ৭০ হাজার শিক্ষার্থী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়ার সুযোগ পায়। তা হলে বাকি শিক্ষার্থীদের কী হয়? সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে পার্থক্য শুধু বাংলাদেশেই আছে। বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিন্তু বেসরকারি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার চতুর্থ লক্ষ্য ‘গুণগত শিক্ষা’—এটা অর্জনে অবশ্যই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব রয়েছে।
শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় কর্মমুখী শিক্ষাকে ভিত্তি করে প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল। এখানে রয়েছে ফ্যাশন ডিজাইনিং, ইন্টেরিয়র আর্কিটেকচার, ফাইন আর্টস, মিউজিক, ড্যান্স; অর্থাৎ সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড দিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠন। ২০০৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলাম। সাংবাদিকেরা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে এভাবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে। ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ানোর মতো শুরুতে একজনও ছিলেন না। বিদেশি শিক্ষকদের দিয়ে শুরু করতে হয়েছিল। বর্তমানে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয় চালু করেছে। তৈরি পোশাক কারখানাগুলো থেকে প্রস্তাব আসছে, ইন্টার্নশিপ করার জন্য যেন আমাদের শিক্ষার্থীদের তাদের ওখানে পাঠানো হয়। তাই আশা করছি, তৈরি পোশাক খাতে কাজ করা বিদেশিদের জায়গাগুলো আমাদের শিক্ষার্থীরা শিগগিরই দখল করে নেবে।
বর্তমানে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে যে উপার্জন হচ্ছে, তার বেশির ভাগই কম্পিউটার গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে হচ্ছে। কম্পিউটার গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া নামের একটি বিভাগ শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু আছে। কিছুদিন আগেও যেখানে আমাদের ব্যাচ ছিল একটি, সেখানে এখন চারটি ব্যাচ পড়াতে হচ্ছে। এসব বিষয়ে বিদেশে পড়া খুবই ব্যয়বহুল।
যে এলাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পায়, সে এলাকা নিশ্চয়ই উন্নত হয়ে যায়। সবচেয়ে বড় কথা, বিশ্ববিদ্যালয় তো মানুষ তৈরি করে। শিক্ষার ছোঁয়ায় মানুষ বদলে যায়। সাকিব আল হাসান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে সমাবর্তন নিয়েছেন। আমি যদি তাঁর কাছে খুব ভালো ক্যালকুলাস আসা করি, তা হলে তো হবে না। আমার দেখতে হবে, তিনি বাংলাদেশের জন্য খেলাটা ভালো খেলছেন কি না। আমি মানুষের অমিত সম্ভাবনায় বিশ্বাস করি। তাই কোনো শিক্ষার্থী যদি ক্লাসেও না যায়, সে যদি শুধু ক্যাম্পাসে যায়, শিক্ষকদের দেখে, তাতেও তার আশ্চর্য উন্নতি হতে পারে।
লেখক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে আমার কিছু চাওয়া-পাওয়া আছে। শিক্ষার্থীদের যেন চোখ খুলে দেওয়া হয়, তারা যেন সমস্ত জগৎকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন মানুষকে ভালোবাসে। তারা যেন নাটক, শিল্প, সাহিত্য প্রভৃতি সুকুমারবৃত্তি চর্চা করে।
কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের মোট ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে আটটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছয়টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, তৃতীয় স্থানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং চতুর্থ স্থানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
এই র্যাঙ্কিং কিন্তু বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এখানে আমরা দেখি, অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানের দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমি দাবি করতেই পারি, বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি প্রোগ্রাম করার সক্ষমতা আছে।
অনেকেই বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অনেক ব্যয়বহুল। আমি মোটেও সেটা মনে করি না। ২০২১ সালের ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে মোট খরচ হয় ১ লাখ ৮৫ হাজার ১২৪ টাকা। তারা তো চার বছরে পাস করে না। পাঁচ থেকে ছয় বছর লাগে। যদি টাকার অঙ্ক হিসাব করা হয়, তাহলে তা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ব্যয়কে অতিক্রম করে যায়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অঙ্ক আরও বেশি। তা হলে কেন বলা হয় যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনেক বেশি টাকা নিচ্ছে? আমার তো মনে হয় কম খরচেই আমরা পড়াই।
আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশে-বিদেশে অনেক জায়গায় আছে। গুগলের প্রধান প্রকৌশলী আমার সরাসরি শিক্ষার্থী। ফেসবুক-মাইক্রোসফটেও শিক্ষার্থীরা রয়েছে। তাদের যখন জিজ্ঞেস করা হয়, কোন দেশ থেকে এসেছে কিংবা কোথায় পড়াশোনা করেছে, তখন কিন্তু বিশ্বের দরবারে ‘বাংলাদেশ’ নাম পরিচিতি পায়। একসময় ক্রিকেট ও তৈরি পোশাকশিল্পের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিল। এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। এ জন্য আমাদের সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করতে হচ্ছে। আমরা যখন স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে আসছিলাম, তখন ট্রাস্টি বোর্ডকে ২৫টি ল্যাবের প্রয়োজনীয়তার কথা জানাই। তারা বলে, ২৫টি দিয়ে হবে না, আমরা ৩০টি ল্যাব দেব। এ ধরনের সুবিধাগুলো বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে। আমি যত দূর জানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করা হয়, তার প্রায় শতভাগই সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। যদিও ২০ শতাংশ নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়ার কথা, কিন্তু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সেটি দিতে পারেনি। প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। অন্যদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে না।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এত অবদান সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে খুব বেশি সহযোগিতা পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা থেকে শুরু করে হাইস্কুল, প্রাইমারি স্কুল, বেসরকারি কলেজের শিক্ষকদের শতভাগ বেতন–ভাতা দেওয়া হয়।
করোনাকালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কঠিন সময় পার করেছে। সে সময় অনেক শিল্পকারখানা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য শত শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কোনো বরাদ্দ ছিল না। এতে নতুন ও স্বল্প আয়ের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে ছিল। সরকার কিন্তু কোনো ধরনের অনুদান দেয়নি। এখানে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত ছিল।
বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা প্রদানে দ্রুত বিকাশমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বিকাশের সূত্র ধরে উচ্চশিক্ষার্থে শিক্ষার্থীদের বিদেশ যাওয়ার হার কমে আসছে। এখন বাইরের দেশ থেকেও শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশে পড়তে আসছে।
১৯৯২ সালে প্রথম যখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হলো, তখন নতুন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলো। এরপর যেভাবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল, মনে হতো এই খাতে এসে যেন ভুল করেছি আমরা।
সরকারের ইচ্ছাতেই বাংলাদেশে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইউজিসি এখানে ৬ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে পড়ানোর সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছে। এতে যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের কথা চিন্তাই করতে পারত না, তারাও কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে। কয়েক দিন আগে এক যুবকের সঙ্গে কথা বলেছি, যার বয়স ৩০ বছরের মতো। সে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে এখন একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার কোম্পানি কর্মীদের বছরে তিন কোটি টাকা বেতন দেয়।
গবেষণা খাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনেক এগিয়ে। ইউজিসির ৪৮তম বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২১ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গবেষণায় অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে প্রথম ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান করে নিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
আমার ধারণা ছিল, বাংলাদেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর এর মান সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভালো হতে উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি একটা সুষম প্রতিযোগিতা হবে। এটি সর্বাঙ্গে সম্ভব হয়নি। গত তিন-চার বছরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং চালুর পরে একটা গুণগত পরিবর্তন চোখে পড়েছে। এ প্রতিযোগিতায় ভালো বিশ্ববিদ্যালয় টিকে থাকবে।
অনেকেই পাবলিকেশন ছাড়াই পিএইচডি করছে। এটা অবাক করার মতো বিষয়। পিএইচডির মান ভালো হলে উচ্চশিক্ষার মান বাড়বে। পিএইচডির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জ্ঞান–বিজ্ঞানের প্রসার ঘটানো এবং দেশ-জাতির সমস্যা সমাধান করা।
বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা অনেক। ফলে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ কিংবা বিভাগের চেয়ারপারসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের বিষয়টি বেশ কঠিন হয়েছে। কারণ, মানসম্মত কাউকে নিয়োগ না দিলে তো শিক্ষার মান রক্ষা করা যাবে না। তঁাদের ট্র্যাক রেকর্ড দেখতে হবে। বর্তমান বিশ্ব হচ্ছে গ্লোবাল ভিলেজ। এখানে টিকে থাকতে হলে ভালো মানুষ হওয়ার পাশাপাশি যোগাযোগ, সাংস্কৃতিকসহ নানা ধরনের দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমাদের যে রেমিট্যান্স আসে, তার চেয়ে ৫০ গুণ রেমিট্যান্স আনতে পারব আমরা। এ জন্য আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের সত্যিকার অর্থে দক্ষ করে তাদের পেশাগত চাকরিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কেরানি তৈরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নয়।
গত তিন দশকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় অসামান্য ভূমিকা পালন করেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন কারিকুলাম ডিজাইনের ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা ছিল।
কত সেমিস্টারে শিক্ষা দেওয়া হবে, তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করা উচিত। কারণ, দেখা গেছে কিছু শিক্ষার্থী আটটি কোর্স একসঙ্গে নিতে চায়। তার সেই মেধা ও সক্ষমতা আছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ধীরে ধীরে এগোতে চায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নমনীয়তা থাকা উচিত। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
ফিলিপাইনে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্যাম্পাস স্থাপনের জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এসব ক্যাম্পাস নিজেরাই পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ সুবিধা পেলে অনেক দূর এগিয়ে যেত। আমরা সবাই জানি, বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে জমির জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। এ ক্ষেত্রে যদি সহযোগিতা আসে, তাহলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি অনেক বেশি হবে।
গত কয়েক দশকে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে। অনেক শিক্ষার্থীকে আমরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করছি। তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। পাশাপাশি এটা ঠিক যে আমাদের দেশে অনেক বিদেশি কাজ করছেন। পাশের দেশ ভারত বাংলাদেশ থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স নিয়ে যাচ্ছে। এটি খুব ভালো কথা নয়।
ভালো নয় এ কারণে যে আমাদের দেশে বড় একটি শিক্ষিত বেকার শ্রেণি তৈরি হয়েছে। দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে, উচ্চশিক্ষিতের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু এরপরও বিদেশিরা এখানে এসে কাজ করে যাচ্ছেন। সমস্যা কোথায় আসলে?
মূল সমস্যা হলো আমরা গুণগত শিক্ষা দিতে পারছি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, কিন্তু এগুলোর গুণগত মান বাড়ানোর দিকে মনোযোগ নেই। এ কারণে বড় অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে। যদি আমরা তা ধরে রাখতে পারতাম, তবে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও বেশি হতো। অনেক বাধাবিপত্তির মধ্যেও আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এরপরও বলব, আরও এগোনোর সুযোগ আমাদের ছিল। সরকারি-বেসরকারি উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মিলে আমাদের আগে কৌশল ঠিক করতে হবে। কেন গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, সে বিষয়টি খুঁজে বের করতে হবে।
শিক্ষার্থী হিসেবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশযোগ্যতা কেমন? শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করে, কত শতাংশ ডিসকাউন্ট (ছাড়) পাওয়া যাবে? কেন এই প্রশ্ন? অনেকে আছে, যারা কখনোই উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেত না। কারণ, তার পরিবারের সে সামর্থ্য নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে পরিচালনার ব্যয় আছে। সে জন্য আমাদের টাকাও সেভাবে নিতে হয়। দেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদানের কথা বলতে গেলে অবশ্যই শিক্ষার্থীর জন্য এখানে প্রবেশযোগ্যতার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে হবে।
আবার দেখা যায়, কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে পড়তে একেক বিশ্ববিদ্যালয়ে একেক রকম খরচ লাগে। কোথাও সাড়ে ৪ লাখ, কোথাও ২২ লাখ টাকা। সে ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী কী ভাববে? আমি সন্দিহান। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি এবং পড়িয়েছি। বিদেশেও পড়িয়েছি। এখন দেশে এসে সমাজকে কিছু দিতে গিয়ে এসব বৈষম্য দেখছি।
দেরিতে হলেও এ ধরনের গোলটেবিল বৈঠক ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব আয়োজন সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। দেশের উচ্চশিক্ষার বিকাশে এ কর্মসূচি বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা সবাই জানি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটির বয়স কিন্তু সত্যিই খুব বেশি হয়নি৷ আলোচনায় এসেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গড় বয়স ১৫ বছর হবে।
সুতরাং নতুন হিসেবে আমাদের অনেক ভুলত্রুটি থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা এটি অস্বীকার করছি না, তবে এটাও সত্যি যে আমাদের অনেক অর্জনও রয়েছে। আপনাদের সবার প্রতি আমাদের অনুরোধ, আমাদের অর্জনগুলোও আপনারা তুলে ধরুন। এটিই সবার কাছে আমাদের চাওয়া।
সরকারের কাছেও আমাদের চাওয়া আছে৷ সরকারের পক্ষ থেকে ক্রীড়ায় অবদান রাখার জন্য প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, অথচ শিক্ষা খাতে আমরা এত কিছু করা সত্ত্বেও আমাদের জন্য কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই। এটি সত্যিই পীড়াদায়ক। এর পরিবর্তন জরুরি। এ ক্ষেত্রে সরকার আমাদের দিকে সুনজর দেবে বলে প্রত্যাশা রাখি। সবার সহযোগিতায় শিক্ষা ও গবেষণা খাতে নতুনভাবে অবদান রাখবে। আলোচনায় অংশগ্রহণরের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।
উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানের নানা দিক আজকের আলোচনায় এসেছে। একই সঙ্গে বিগত তিন দশকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদানের কথাও এসেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে আশা করি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।