র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে থাকার কারণ জানাল ইউজিসি

গবেষণা ও উদ্ভাবনে যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভাবে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে এ বছর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাঙ্ক্ষিত স্থান অর্জন করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন ইউজিসির চেয়ারম্যান। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২২টি গবেষণা ও উদ্ভাবন উপপ্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর এসব কথা জানান।

সিটি ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় পরিচালিত দিনব্যাপী কর্মশালাটি গতকাল শনিবার বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক মাহফুজা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য দেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরী।

অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর বলেছেন, বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ অবস্থা মূলত গত বছরগুলোয় তাদের গৃহীত পদক্ষেপের ধারাবাহিক ফল। র‌্যাঙ্কিংয়ে সম্মানজনক স্থান পেতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গবেষণা ও উদ্ভাবনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ, পিএইচডি প্রোগামে নিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি, সম্মানজনক বৃত্তির ব্যবস্থা, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমি সহযোগিতা বৃদ্ধি, সাইটেশনের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য আলাদা পে-স্কেল প্রয়োজন

মুহাম্মদ আলমগীর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনকারী প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র পে-স্কেলে দেওয়ার দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, আকর্ষণীয় বেতন কাঠামো ছাড়া পিএইচডি ডিগ্রিধারী মেধাবী ও তরুণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহ পাচ্ছেন না। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য আলাদা একটি পে-স্কেল প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া বিদেশে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনে তিনি নবীন শিক্ষকদের নিরুৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, দেশের আর্থসামাজিক সমস্যা নিয়ে গবেষণার বিশাল সুযোগ রয়েছে। এ গবেষণার জন্য বিদেশে যাওয়া এবং ডিগ্রি শেষে সেখানে থেকে যাওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়।

উপাচার্য এমদাদুল হক চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে যাওয়ার কারণ প্রাসঙ্গিকতা বিবেচনায় নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা পর্যাপ্ত সাইটেশন না করা। যথাযথ সাইটেশন করা হলে বাকৃবি বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬০০–এর মধ্যে অবস্থান করত বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসা ও স্নাতকদের বাজার উপযোগী করে গড়ে তুলতে তাদের ইন্টার্নশিপসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাকৃবির ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. আবুল মনসুর ও সিটি ব্যাংকের কমার্শিয়াল ব্যাংকিংয়ের প্রধান মোহাম্মদ মাহমুদ গণি।