বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আবারও দুঃসংবাদ দিল অস্ট্রেলিয়া। কারণ, আগামী বছরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও কমানোর কথা জানাল দেশটি। এর আগে গত জুলাইয়ে ভিসা ফির পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণের বেশি করেছিল অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়ার সরকার বলেছে, তারা বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমাতে যাচ্ছে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৫ সালে দেশটি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমানোর কথা জানিয়েছে। আজ মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী বছরে সারা বিশ্ব থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী নেবে। এর কারণ হিসেবে সরকার বলছে, রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসনের কারণে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছি। ভাড়া বৃদ্ধির হারে লাগাম টেনে ধরতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কোভিডের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় বিদেশি শিক্ষার্থী ও কর্মী কমানোর কথা বলে আসছে। এখনকার এ সিদ্ধান্তটি বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ফল।
অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষামন্ত্রী জেসন ক্লেয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে করোনা মহামারির আগের তুলনায় এখন প্রায় ১০ শতাংশের বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী আছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নানা সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছি। সংস্কারগুলো আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য আরও ভালো এবং ন্যায্য করার জন্য করা হয়েছে। এখনকার সিদ্ধান্তটি এ কাজকে আরও টেকসই পদক্ষেপ হিসেবে এগিয়ে নেবে।’
এর আগে ১ জুলাই থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা ফির পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণের বেশি করেছে অস্ট্রেলিয়া। অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে আবাসনব্যবস্থার ওপর চাপ পড়ার প্রেক্ষাপটে অস্ট্রেলীয় সরকার ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে চাইলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা ফি বাবদ ১ হাজার ৬০০ অস্ট্রেলীয় ডলার (১ হাজার ৬৮ ডলার) গুনতে হবে। আগে এ ফির পরিমাণ ছিল ৭১০ অস্ট্রেলীয় ডলার। টেম্পরারি গ্র্যাজুয়েট ভিসাধারী শিক্ষার্থী এবং ভিজিটর ভিসাধারীদের যাঁরা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন, তাঁরা সেখান থেকে স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
২০২২ সালে করোনা মহামারির বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসীদের চাপ বাড়তে থাকে। এমন অবস্থায় অভিবাসীদের চাপ কমাতে গত বছর থেকে শিক্ষার্থী ভিসার ওপর বিভিন্ন ধরনের কড়াকড়ি আরোপ করতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া সরকার।
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় রপ্তানি শিল্প খাতগুলোর একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়া সরকার এ খাত থেকে ৩ হাজার ৬৪০ কোটি অস্ট্রেলীয় ডলার সমমূল্যের অর্থ আয় করেছে।
কিন্তু ভোটের আগে হওয়া নানা জরিপে দেখা গেছে, ভোটাররা বিদেশি ছাত্র এবং বিদেশি কর্মীদের ব্যাপক আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ এর ফলে আবাসন খাতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে।
২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায়। গত বছরের জুন পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ১৮ হাজারের বেশি। ৩০ সেপ্টেম্বরে ৬০ শতাংশ বেড়ে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৫ লাখ ৪৮ হাজার ৮০০।