এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

মাধ্যমিকের শিক্ষকেরা দুর্গম অঞ্চলে বদলি হলে চাকরি কতদিন করতে হবে

সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের বদলি নীতিমালার প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষক বদলী কার্যক্রম চলবে অনলাইনে। বছরের অক্টোবর মাসে এ বদলি আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া নতুন নিয়মে সমতলের শিক্ষক/কর্মকর্তাকে পার্বত্য (রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) অঞ্চলে এবং দুর্গম চর ও হাওর অঞ্চলে বদলি করা হলে তাঁকে এক বছর সেখানে চাকরি করতে হবে। এরপরই তিনি অন্য জেলায় বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ‘সরকারি মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক-কর্মকর্তা বদলি নীতিমালা-২০২৪’ প্রকাশ করেছে। নীতিমালায় জানানো হয়, শিক্ষক কর্মকর্তা প্রতিবছর অক্টোবর মাসে বদলির আবেদন করতে পারবেন। বছরের অন্য সময় এই আবেদন করা যাবে না।

প্রকাশিত নীতিমালায় বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে সরকারি শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা না থাকায় এবং বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পরিপত্র-অফিস আদেশ যুগোপযোগী করার উদ্দেশ্যে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো। নীতিমালার আওতা নিয়ে বলা হয়েছে, শিক্ষার মাধ্যমিক স্তরের সরকারি শিক্ষকদের বদলি-পদায়নের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা প্রযোজ্য হবে, সরকার জনস্বার্থে যেকোনো সময় যেকোনো শিক্ষককে বদলি-পদায়ন করতে পারবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সূত্র জানায়, দেশে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬২৭টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ রয়েছে ৬৪টি। এগুলোয় শিক্ষক রয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার। ১৯৯৪ সালে একটি পরিপত্র এবং ২০০৫ সালে একটি অফিস আদেশ অনুযায়ী বদলি/পদায়ন করা হতো। ২০২২ সালের ২৪ মে বদলির জন্য খসড়া নীতিমালা করে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

বদলির সময়

বদলির সময় নিয়ে বলা হয়েছে, প্রতি শিক্ষাবর্ষে শুধু অক্টোবর মাসে আগ্রহী শিক্ষকেরা বদলির আবেদন করতে পারবেন। এই সময়সীমা ব্যতীত অন্য কোনো সময়ে বদলির জন্য আবেদন করা যাবে না। তবে অনিবার্য পরিস্থিতিতে শুধু সিনিয়র সচিব বা সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বরাবর আবেদন করা যাবে।

প্রতিবছরের অক্টোবর মাসে শিক্ষকদের যুক্তিযুক্ত কারণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে নিম্নলিখিত শর্তে সরাসরি (অনলাইনে) আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের দরকার নেই।

আবেদনের শর্ত

বর্তমান কর্মস্থলে চাকরিকাল ৩ বছর পূর্ণ হতে হবে এবং বদলির জন্য উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে।

আবেদনে অনুসরণীয় বিষয়

  • অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদের বিপরীতে অন্য বিষয়ের শিক্ষক বদলি-পদায়ন করা যাবে না।  

  • এ ছাড়া ওপরে উল্লিখিত সময় ও শর্তের বাইরে কাউকে বদলি করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে সরকার উপযুক্ত মনে করলে যেকোনো শিক্ষক/কর্মকর্তাকে যেকোনো সময় কোনো রকম শর্ত ছাড়া বদলি/পদায়ন করতে পারবে;

  • বদলির ক্ষেত্রে আবেদনকারীর নিজ জেলা/পার্শ্ববর্তী জেলায় পদায়নে গুরুত্ব দেওয়া, সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদের বিপরীতে অন্য বিষয়ে শিক্ষক বদলি/পদায়ন না করা হবে;

  • স্বামী/স্ত্রী উভয়ই সরকারি কর্মচারী হলে স্বামী/স্ত্রীর কর্মস্থলে অথবা নিকটবর্তী কর্মস্থলে বদলি/পদায়নে অগ্রাধিকার পাবেন;

  • মহানগর ও জেলা সদরে কর্মরত শিক্ষকের চাকরি একই প্রতিষ্ঠানে টানা ৬ বছরের বেশি হলে তাঁকে নিজ জেলায় অথবা কর্মস্থলের পাশের জেলায় বদলি করা হবে;

  • সমতলের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক/কর্মকর্তাকে পার্বত্য (রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) অঞ্চলে এবং দুর্গম চর ও হাওর অঞ্চলে বদলি করা হলে তাঁকে এক বছর সেখানে চাকরি করতে হবে। এরপর তিনি অন্য জেলায় বদলির আবেদন করতে পারবেন।