ভারত থেকে লুট করে নিয়ে যাওয়া অতি মূল্যবান একটি সম্পদ ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাজ্যর অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। দ্যা গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, এক হিন্দু সাধুর ৫০০ বছরের পুরানো একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য এত দিন ছিল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাশমোলিয়ান জাদুঘরের প্রদর্শনীতে। ভারতীয়দের দাবি, ব্রোঞ্জের মূর্তিটি লুট করে যুক্তরাজ্য নিয়ে গিয়েছিল ইংরেজরা। সেই মূল্যবান ব্রোঞ্জের মূর্তিটি এবার ফেরত দিতে রাজি হয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
ষোড়শ শতকের মূর্তিটি দক্ষিণ ভারতের তামিল কবি ও সাধু তিরুমানকাই আলভারের। ব্রিটিশ শাসনের কোনো এক সময়, তিরুমানকাই আলভারের ৫০০ বছরের পুরানো প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যটি ভারত থেকে লুট করে নিয়ে গিয়েছিল ইংরেজরা। এটি আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাশমোলিন মিউজিয়ামের প্রদর্শনীতে।
ভারতীয়দের দাবি, ১৮৯৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক বাহিনী ভারতে বাণিজ্য প্রতিরোধের মুখে পড়ে সামরিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল। এ জন্য যে খরচ হয়েছিল, তা তারা তুলে নিয়েছিল ভারত থেকেই। দুই শতাধিক প্রত্নবস্তু লুট করে নেয় তারা। লন্ডনে সেগুলো বিক্রি করে সামরিক অভিযানের খরচ চালিয়েছিল। সেই সময়ই এক ভারতীয় মন্দির থেকে ব্রিটিশরা মূর্তিটি লুট করে নিয়ে যায়। মূর্তিটি ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল দেশটির ভারতের হাইকমিশনসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।
অ্যাশমোলিন জাদুঘর একটি বিবৃতিতে বলেছে, ১১ মার্চে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল অ্যাশমোলিন মিউজিয়াম ১৬ শতকের সাধু তিরুমানকাই আলভারের একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি ফেরত দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দাতব্য কমিশনে অনুমোদনের জন্য এই সিদ্ধান্তের কপি জমা দেওয়া হবে।
ভারতের পাঞ্জাব থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কোহিনুর হীরাও নিয়ে গিয়েছে যুক্তরাজ্যে। বিভিন্ন সময়ে ব্রিটেনের প্রয়াত রানি এলিজাবেথ কুইন মেরির মুকুটে কোহিনুর পরতেন। এ দিকে গত মে মাসে যুক্তরাজ্যের রানি কনসর্ট ক্যামিলা কোহিনুর হীরা ছাড়াই রাজা চার্লসের রাজ্যাভিষেকের সময় কুইন মেরির মুকুট পরেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে এ হীরা ফেরত দেওয়ার দাবি ভারতীয়দের পক্ষ থেকে জানিয়ে আসা হচ্ছে। এ হীরার দাবিদারদের মধ্য আছে ইরান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান।
তিরুমানকাই আলওয়ার হলেন দক্ষিণ ভারতের ১২ জন আলভার সাধুর শেষতম। আলভাররা হলেন বৈষ্ণব সাধক। দুর্দান্ত শ্লোক রচনার দক্ষতার জন্য তাঁকে সব চেয়ে জ্ঞানী আলভার সাধু বলে মনে করা হয়। প্রথম জীবনে তিনি ছিলেন একজন সেনাপতি। পরে বৈষ্ণবধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে সাধক ও কবি হন।